সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে সম্প্রতি ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত মাইলস্টোন কলেজে যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় শিশুটি অগ্নিদগ্ধ হয়েছে দাবি করে একটি ছবি পোস্ট করা হচ্ছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৩ জুলাই 'Mohammad Mamun' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করে উল্লেখ্য করা হয়, “#মাইলস্টোন #ট্র্যাজেডি জান্নাতের পাখি কি আরামে ঘুমাচ্ছে😭 আল্লাহ্ তাদের মা বাবা আত্মীয় স্বজনদের ধৈর্য ধরার তাওফিক দান করুন😭🤲।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ছবিটি বাস্তব নয়। অর্থাৎ ছবিটি ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত মাইলস্টোন কলেজে যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় শিশুটি অগ্নিদগ্ধ হওয়ার দৃশ্য নয় বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।
আলোচ্য ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে গ্রহণযোগ্য কোনো মাধ্যমে দাবি অনুযায়ী ছবিটি বাস্তব হওয়ার বিষয়ে কিংবা ছবির বিষয়েও উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ছবিটিতে শিশুটির গায়ের মাটি ও ত্বকের অংশগুলো অস্বাভাবিকভাবে পরিষ্কার ও নিখুঁত। আগুন ও ধোঁয়ার রঙ ও ছায়া বাস্তবের মতো না, বরং আঁকা ছবি বা সিনেমাটিক দৃশ্যের মতো। শিশুটির হাত-পা ও মুখের গঠনেও কিছু অস্বাভাবিকতা আছে। সব মিলিয়ে ছবিটি অতিরঞ্জিত আবেগ তৈরি করার মতোভাবে সাজানো, যা অনেক সময় এআই জেনারেটেড ছবিতে দেখা যায়।
পাশাপাশি আলোচ্য ছবিটি এআই ব্যবহার করে তৈরি করা ছবির বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়।
পরবর্তীতে, এআই ছবি শনাক্তের টুল 'হাইভ' ব্যবহার করে ছবিগুলো যাচাই করা হয়। টুলটি ছবিটিকে সম্ভাব্য এআই দ্বারা তৈরি ছবি হিসেবে ফলাফল প্রদান করেছে। ছবিটির ফলাফলের স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়া এআই ছবি শনাক্তের আরেক টুল 'সাইট ইন্জিন' ব্যবহার করেও ছবিটি যাচাই করা হয়। এই টুলটিও ছবিটিকে সম্ভাব্য এআই দ্বারা তৈরি ছবি হিসেবে ফলাফল প্রদান করেছে। ছবিটির ফলাফলের স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য ছবিটি বাস্তব নয় বরং এটি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ছবিকে সম্প্রতি ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুলে যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ শিশুর দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।