HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
ফেক নিউজ

ছবিটি ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের নাতির নয়

বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ছবিটির চিত্রগ্রাহক স্টিভ ম্যাককারি এবং তিনি জানান ছবিটি এক আফগান তরুণের।

By - Md Abdullah Khan | 18 Oct 2022 5:34 PM GMT

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে থাকা এক তরুণের ছবিসহ একটি গল্প শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ছবির তরুণ ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের নাতি মুস্তাফা হুসাইন, যিনি মার্কিন সৈন্যদের প্রতিরোধ করে শহীদ হয়েছেন। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

গত ৩ অক্টোবর 'Md Shofiqul' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করে বর্ণনায় একটি গল্প শেয়ার করা হয়। গল্পটি হুবহু তুলে ধরা হলো--

"ছবিতে যাকে দেখছেন—তিনি ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হুসাইনের পৌত্র মুস্তফা হুসাইন।

আমেরিকার সৈন্যরা যখন সাদ্দামের বাসভবনে অপারেশন চালায়, ১৪ বছরের কিশোর মুস্তফা একাই তখন শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়ে যায়। অপারেশনে অংশ নেওয়া আমেরিকান সৈন্যদের ভাষ্য থেকে জানা যায়—যখন তারা সামনে অগ্রসর হতে শুরু করে, তখন মুস্তফা তাদের উপর তীব্রভাবে এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। ৪০০ আমেরিকান সৈন্যদের অগ্রসর হওয়া সে একাই রোধ করে দেয়।

অথচ তার সামনে নিথর-নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছিল বাপ-চাচার লাশ। এ বীর-শার্দুল একটুও ঘাবড়ায়নি। সামান্য একটা রাইফেল দিয়েই সে ১৪ জন আমেরিকান সৈন্যকে জাহান্নামের টিকেট ধরিয়ে দেয়। টানা ৬ ঘন্টা সে একাই বিশ্বের উন্নত সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৪০০ আমেরিকান সৈন্যের বিরুদ্ধে পাহাড়ের মতো অবিচল থেকে লড়াই চালিয়ে যায়। অবশেষে তাকেও শাহাদাতের অমীয় সুধা পান করতে হয়। শামিল হতে হয় অনন্ত-মহাকালের অভিযাত্রীদের কাতারে।

অপারেশন সাকসেস করে আমেরিকান সৈন্যরা যখন ভেতরে প্রবেশ করে, ভেতরের দৃশ্য দেখে তাদের বিশ্বাস হচ্ছিল না যে, গত ছয়-সাত ঘন্টা এ কিশোর তাদের বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছিল! তাদের জন্য আরও আশ্চর্যের বিষয় ছিল, এ কিশোর একাই তাদের বিরুদ্ধে লড়ছিল। সঙ্গে যারা ছিল, তারা লড়াইয়ের শুরুতেই প্রাণ হারিয়েছিল! নিউইয়র্ক টাইমসের বিখ্যাত প্রবন্ধ 'মুস্তফা হুসাইন'-এ লেখক রবার্ট লিখেছেন—

'যদি মুস্তফার মতো বীর-শার্দুল আমেরিকায় জন্ম নিত, তাহলে আমরা আমাদের প্রতিটা শহরে তার স্মৃতিসৌধ বানাতাম। সবখানে তার প্রশংসা করা হতো—কারণ সে ইতোমধ্যেই প্রতিরোধ-যুদ্ধের নায়কে পরিণত হয়েছে।'ভয়ে মরে কাপুরুষ, লড়ে যায় বীর!!"। স্ক্রিনশট দেখুন--

পোস্টটি দেখুন এখানে

এছাড়া গত কয়েক বছর ধরেই ছবিটি একই তথ্যসহ বিভিন্ন ফেসবুক আইডি ও পেজ থেকে পোস্ট করা হয়েছে। এরকম একটি পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন--

পোস্টটি দেখুন এখানে

ফ্যাক্ট চেক:

বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ছবিটি ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের নাতি মুস্তাফা হুসাইন নামে কারো নয় বরং আফগানিস্তানের এক তরুণের।

রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ছবিটি আমেরিকান ফটোগ্রাফার স্টিভ ম্যাককারির ভেরিফায়েড ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে খুঁজে পাওয়া যায়, যা ২০১৭ সালের ১৪ আগস্ট পোস্ট করা হয়েছে। পোস্টটির ক্যাপশনে স্টিভ জানান তার নতুন বই 'আফগানিস্তান'-এ আফগান তরুণ এই যোদ্ধার ছবিটি থাকবে, যা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান তাশচেন থেকে প্রকাশিত হবে। পোস্টটি দেখুন-- 

জার্মানি ভিত্তিক এই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানটির সাথে বার্তা সংস্থা এএফপি যোগাযোগ করলে তারা নিশ্চিত করে যে, আলোচ্য ছবিটি ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে তাদের প্রকাশিত বই 'আফগানিস্তান'-এ আছে।

প্রসঙ্গত প্রখ্যাত ফটোগ্রাফার ম্যাককারি তার 'আফগান মেয়ে' ছবির জন্য একাধিক পুরস্কার লাভ করেছিলেন।

অর্থাৎ ছবিটি সাদ্দাম হোসেনের নাতি মুস্তাফা হুসাইন নামে কারো নয় বরং আফগানিস্তান থেকে তোলা কোনো তরুণের।

মুস্তাফা হুসাইন কে?

ইরাকে মার্কিন সামরিক অভিযানে ক্ষমতাচুত্য প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে ২০০৩ সালের ডিসেম্বর মাসে গ্রেফতার করা হয়। ২০০৩ সালের জুলাই মাসে ইরাকের মসুল শহরে এক সামরিক অভিযানে তার দুই পুত্র উদয় হোসেন ও কুসয় হোসেন এবং কুশয় এর ১৪ বছর বয়সী পুত্র মোস্তফা হোসেন মারা যান। পরে সংবাদ সম্মেলনে ইরাকে মার্কিন সৈন্যদের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল রিকার্ডো সানচেজ মসুলের সেই অভিযানের বিস্তারিত তুলে ধরেছিলেন যা দ্য গার্ডিয়ান সহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মার্কিন হামলায় মুস্তাফার বাবা ও চাচা মারা যাওয়ার পরও এই তরুণ লাগাতার গুলি করতে থাকেন এবং মোস্তফা সবার শেষে মারা যান। তবে সার্চ করে মুস্তাফাকে নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় রবার্ট নামে কোনো সাংবাদিকের লেখা খুঁজে পাওয়া যায়নি। দ্য গার্ডিয়ানের স্ক্রিনশট দেখুন--

প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে

ছবিটি এর আগে বার্তা সংস্থা এএফপি'র ফ্যাক্টচেক টিম যাচাই করেছে।

সুতরাং আফগান এক তরুণের ছবিকে ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের নাতির দাবি করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর। 

Related Stories