HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
ফেক নিউজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্রীজ ভেঙে ২৭ জন নিহতের খবরটি ভুয়া

বুম বাংলাদেশ দেখেছে, সচেতনতামূলক একটি ফেসবুক পোস্ট থেকে পরবর্তীতে ভুল তথ্য সহ দাবিটি বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচারিত হচ্ছে।

By - Mamun Abdullah | 24 March 2024 8:13 PM GMT

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ, আইডি ও পেজ থেকে কয়েকটি সড়ক দুর্ঘটনার ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে একটি ব্রিজ ভেঙে ব্রাস-ট্রাক খালে পড়ে ২৭ জন নিহত ও ৪৩ জন আহত হয়েছেন। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানেএখানে

২৪ মার্চ 'চাঁদপুর জেলা সংবাদ' নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে 'Md Ariful Islam' নামের একটি একাউন্ট থেকে পোস্ট করে বলা হয়, "এই শোক সইবার নয় 😭😭 ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা ব্রীজ ভেঙ্গে বাস-ট্রাক খালে, ২৭ জন নিহত, গুরুতর আহত আরো ৪৩ জনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে, মা-বাবার চোখের সামনে সন্তানের আর সন্তানের সামনে মা-বাবার লাশের কান্না স্বজনদের আহাজারিতে চারপাশে শোক। হে আল্লাহ আপনি সকল নিহতদের জান্নাতুল ফেরদৌসের উচ্চ মাকাম দান করুন ও আহতদের শেফাদান, করুন. (আমিন)🤲।" নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন-- 



ফ্যাক্ট চেক: 

বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য খবরটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে ফেসবুকে করা একটি সচেতনতামূলক পোস্টকে পরবর্তীতে ভুল তথ্য সহ বিভ্রান্তিকরভাবে খবরটি প্রচার করা হয়। খবরটি গুজব বলে বিভিন্ন গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করেছে। এছাড়া পোস্টে যুক্ত 'দুর্ঘটনার ছবিগুলো' দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটা পুরোনো দুর্ঘটনার ছবি।

আলোচ্য ফেসবুক পোস্টের দাবির প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে একটি ব্রিজ ভেঙে ব্রাস-ট্রাক খালে পড়ে ২৭ জন নিহত ও ৪৩ জন আহত হয়েছে এমন কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, "নাসিরনগরে সচেতন করতে গিয়ে ছড়ালো ২৭ জন নিহতের গুজব" শিরোনামে জাগোনিউজের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, দু’দিন ধরে ফেসবুকের নিউজ ফিডে ঘুরছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ব্রিজ ভেঙে ২৭ জন নিহত ও ৪৩ জন আহতের খবর। মূলত খবরটি ভুয়া ও গুজব। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তোলপাড়। একজন সাংবাদিকের সচেতনতামূলক পোস্ট থেকে এই গুজব ছড়িয়েছে। স্ক্রিনশট দেখুন-- 



প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ গত শুক্রবার (২২ মার্চ) তার ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করেন, "ব্রেকিং নিউজ- এই শোক সইবার নয়। নাসিরনগরে ব্রিজ ভেঙে বাস-ট্রাক খালে, ২৭ জন নিহত। গুরুতর আহত আরও ৪৩ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মা-বাবার চোখের সামনে সন্তানের আর সন্তানের সামনে মা-বাবার লাশ। স্বজনদের আহাজারিতে সয়লাব চারপাশ। এমন একটা সংবাদই হয়তো অপেক্ষা করছে নাসিরনগরবাসীর সামনে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজগুলো দ্রুত মেরামত করা না হলে যে কোনো মুহূর্তেই ঘটতে পারে এমন দুর্ঘটনা। তখন শোক প্রকাশ করা ছাড়া কিছুই করার থাকবে না। হাজার কোটি টাকা দিয়েও দুর্ঘটনায় নিহত কাউকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। আশা করছি কর্তৃপক্ষ দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ঝুঁকিমুক্ত চলাচল নিশ্চিত করবে।" 

প্রতিবেদনটির সূত্র ধরে কি ওয়ার্ড সার্চ করে পোস্টদাতা সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের ফেসবুক পেজটি খুঁজে পাওয়া যায়। যদিও তার পেজে ওই পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে ২২ মার্চ ওই পেজে আরেকটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, "অনেকেই আমার পূর্বের পোস্টটি দেখে বিভ্রান্ত হয়েছেন, যার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দূঃখ প্রকাশ করছি। লিখাটি সম্পূর্ণ না পড়েই বেশিরভাগ মানুষ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। পোস্টটির উদ্দেশ্য ছিল বড় কোনো দূর্ঘটনা ঘটার আগেই যেন আমরা সমাধানের দিকটা খেয়াল করি। তবে, আমার পোস্টটি কিছুটা সেনসেটিভ হওয়ায় ব্যাপারটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হয়ে গেছে।" পোস্টটি দেখুন-- 

 Full View


আরো কি-ওয়ার্ড সার্চ করে "নাসিরনগরে ব্রিজ ভেঙে ২৭ জন নিহতের খবরটি ভুয়া" শিরোনামে বেসরকারি সম্প্রচারমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, "নাসিরনগরের বেণিপাড়া এলাকায় একটি ব্রিজের দুপাশের মাটি সরে গিয়ে ব্রিজটির মাঝামাঝি জোড়ার অংশ কিছুটা ফাঁকা হয়ে গেছে। এতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দ্রুত সংস্কারের বিষয়টি গত ২০ মার্চ জেলা প্রশাসনের সভায় তোলেন নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এ বিষয়ে গণসচেতনার উদ্দেশ্যে ফেসবুকে স্যাটায়ারধর্মী একটি পোস্ট করেন মাহমুদ। সঙ্গে ব্রিজ ভেঙে পড়ার কিছু ছবিও যুক্ত করা হয়। তবে গোল বাঁধে তাঁর লেখার শুরুর ‘ব্রেকিং নিউজ’ শব্দদ্বয় এবং ‘এই শোক সইবার নয়’ লাইনটি নিয়ে। ‘২৭ জন নিহত ৪৩ জন আহতের’ অংশ পড়ে কেউ কেউ হতভম্ব হয়ে পড়ে এবং পুরো পোস্ট না পড়েই নিজেরা একই রকম কথা লিখে ফেসবুকে পোস্ট করতে থাকে। অনেকেই শেয়ার করেছে।" স্ক্রিনশট দেখুন-- 



এদিকে আলোচ্য ফেসবুক পোস্টে পাঁচটি ছবির তিনটি ছবির ব্যাপারে সার্চ করে তাৎক্ষণিক তথ্য পাওয়া যায়। তিনটি ছবিই দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটা পুরোনো দুর্ঘটনার ছবি।


ছবি-- ১

আলোচ্য পোস্টের প্রথম ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে "দীঘিনালায় সেতু ভেঙে সাজেকের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ" শিরোনামে ২০২৩ সালের ৭ মার্চ প্রকাশিত নিউজবাংলার একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দুর্ঘটনার ছবিটি খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় মাইনী নদীর বেইলি সেতু। যেটি ভেঙে পাথরবোঝাই একটি ট্রাক নদীতে পড়ে যায়। স্ক্রিনশট দেখুন-- 



ছবি-- ২

আলোচ্য পোস্টের দ্বিতীয় ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে "বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাক নদীতে, চালক হেলপার নিহত" শিরোনামে ২০২৩ সালের ২২ আগস্ট প্রকাশিত জনকণ্ঠের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেতুটি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাগলা আউশকান্দি রাণীগঞ্জ সড়কের নলজোড় নদীর ওপরে নির্মিত কাটাগাং এলাকার বেইলি ব্রিজ নামে পরিচিত। ব্রিজটি ভেঙে ট্রাক নদীতে পড়ে যায়। স্ক্রিনশট দেখুন-- 



ছবি-- ৩

আলোচ্য পোস্টের তৃতীয় ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে স্টক ফটোর ওয়েবসাইট অ্যালামিতে এর তথ্য সহ খুঁজে পাওয়া যায়। ছবির বিবরণ থেকে জানা যায়, সিলেটের নাজিরবাজারে ২০২৩ সালের ৭ জুন ট্রাক-পিকআপ ভ্যান সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ১৪ জন নিহত হন। নিহতদের মরদেহ শনাক্তের জন্য সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে। স্ক্রিনশট দেখুন-- 


অর্থাৎ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সম্প্রতি ব্রিজ ভেঙ্গে ২৭ জন নিহত ও ৪৩ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। আলোচ্য ফেসবুক পোস্টের ছবিগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটা পুরোনো দুর্ঘটনার।

সুতরাং পুরোনো ভিন্ন ভিন্ন দুর্ঘটনার ছবি দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ব্রিজ ভেঙে বহু মানুষ হতাহতের খবর প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।

Related Stories