HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
ফেক নিউজ

বাল্ট্রা দ্বীপে বৃষ্টি না হওয়া, গাছ ও পশুপাখি না থাকার তথ্যটি সঠিক নয়

বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ইকুয়েডরের গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের অন্যতম বাল্ট্রা দ্বীপে বৃষ্টিপাতও হয়, গাছপালা ও পশুপাখিও আছে।

By - Ummay Ammara Eva | 24 March 2024 6:05 PM GMT

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ ও গ্রুপে পোস্ট করে বলা হচ্ছে, বাল্ট্রা দ্বীপে বৃষ্টি হয় না, গাছপালা নেই, পশুপাখিও নেই। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানেএখানে ও এখানে

গত ১১ মার্চ 'World Explore' নামে একটি ফেসবুকে পেজে পোস্ট করে লেখা হয়, "যে দ্বীপে বৃষ্টি পড়েনা, পাখিও উড়েনা! পৃথিবীতে এমন অনেক আজব স্থান রয়েছে যেখানকার রহস্য আজও উদঘাটন করা যায়নি। আজব এসব জায়গার একটি হল বাল্ট্রা দ্বীপ। এ দ্বীপে গেলেই নাকি নাবিকরা অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন। নাবিক বা অভিযাত্রীদের সঙ্গে থাকা কম্পাসের আচরণও বদলে যায়। সবসময় উত্তর দিক-নির্দেশকারী কম্পাস এখানে কোনো সময় স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে! আবার দিক-নির্দেশক কাঁটা ইচ্ছেমতো ঘুরতে থাকে অথবা উল্টোপাল্টা দিক নির্দেশ করে। সবচেয়ে রহস্যজনক ব্যাপার হলো বাল্ট্রা দ্বীপের ওপর বিমান থাকাকালীন সময়েও এমন অদ্ভুত আচরণ করে কম্পাস। আবার দ্বীপ পার হলেই সব ঠিক। বাল্ট্রার আরেকটি অদ্ভুত দিক হল, এর মানসিক দিক। বাল্ট্রায় পা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যে কারও মাথা অনেক হালকা হয়ে যায়। অজানা-অচেনা কোন এক জায়গায় হারিয়ে যাওয়ার আশ্চর্য রকম অনুভূতি আচ্ছন্ন করে ফেলে মনকে। বেশিক্ষণ এ দ্বীপে থাকলে দ্বীপ থেকে চলে আসার পর কিছুদিন সেই আশ্চর্য অনুভূতি থেকে যায়। পরে অবশ্য আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যায়। অদ্ভুত দ্বীপ বাল্ট্রায় কোন গাছ নেই। নেই কোনো পশুপাখি। কোনো পশুপাখি এ দ্বীপে আসতেও চায় না। জোর করে এলেও কোনো পশুপাখিকে বসতি করানো যায়নি। বাল্ট্রার পাশ দিয়ে প্রাণী হেঁটে গেলেও এ দ্বীপে প্রবেশ করেনা। শুধু তাই নয়, পাখিরাও উড়তে উড়তে বাল্ট্রার কাছে এসেই ফিরে যায়। দেখে মনে হয় যেন কোনো দেয়ালে ধাক্কা খাচ্ছে ওরা। আরেকটি রহস্য হলো ওই দ্বীপটির চারপাশে প্রচুর বৃষ্টি হলেও এর ভেতরে কোন বৃষ্টির ফোটা পড়ে না! এমন অনেক আজব আজব রহস্যের কোন গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা এ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি।" স্ক্রিনশট দেখুন--


উক্ত পোস্টে বাল্ট্রা দ্বীপের ছবি দাবি করে একটি ছবিও যুক্ত করা হয়। স্ক্রিনশট দেখুন--


অর্থাৎ এই ফেসবুক পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, বাল্ট্রা দ্বীপে বৃষ্টি হয় না, গাছপালা এবং পশুপাখিও নেই।


ফ্যাক্ট চেক:

বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। ইকুয়েডরের গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের অন্যতম একটি দ্বীপ হল বাল্ট্রা দ্বীপ। দ্বীপটি ওই দ্বীপপুঞ্জের অন্যতম প্রবেশপথ হিসেবে ব্যবহৃত এয়ারপোর্টের জন্য বিখ্যাত। দ্বীপটিতে বৃষ্টি হয় এবং গাছপালা ও পশুপাখিও রয়েছে।

বাল্ট্রা দ্বীপের অবস্থান জানতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বিশ্বকোষ ব্রিটানিকার ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ইকুয়েডরের গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের একটি ছোট দ্বীপ বাল্ট্রা। প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত এই দ্বীপটিতে একসময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানঘাঁটি ছিল। পরবর্তীতে পর্যটকদের আগ্রহের ফলে ইকুয়েডর সরকার দ্বীপটিকে সংস্কারের মাধ্যমে গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের একটি অন্যতম প্রবেশকেন্দ্রে পরিণত করে। বর্তমানে বাল্ট্রা দ্বীপটিই হলো গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের অন্যতম প্রবেশপথ। অর্থাৎ দ্বীপটিতে মানুষের নিয়মিত আসা-যাওয়া বা চলাচল রয়েছে। স্ক্রিনশট দেখুন--



বাল্ট্রা দ্বীপে বৃষ্টি হয় কি না জানতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে Whenandwhere নামের একটি ভ্রমণ বিষয়ক ওয়েবসাইটে "Best time to go to Baltra Island" শিরোনামে একটি নিবন্ধ খুঁজে পাওয়া যায়। ওই নিবন্ধে বাল্ট্রা দ্বীপের আবহাওয়া ও জলবায়ু নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। নিবন্ধটিতে যুক্ত করা একটি চার্ট থেকে জানা যায়, বাল্ট্রা দ্বীপে প্রায় সারাবছরই কমবেশি বৃষ্টিপাত হয়। দ্বীপটিতে আগস্ট থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত সবচেয়ে কম গড়ে ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। আর সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় ফেব্রুয়ারি মাসে গড়ে ১১৩ মিলিমিটার। স্ক্রিনশট দেখুন--



এছাড়াও উক্ত নিবন্ধে সংযুক্ত বাল্ট্রা দ্বীপের একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিতে বিভিন্ন ধরণের উদ্ভিদ দেখতে পাওয়া যায়। অর্থাৎ বাল্ট্রা দ্বীপে বৃষ্টি হয় এবং গাছপালাও বিদ্যমান। স্ক্রিনশট দেখুন-- 



আরো কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বিশ্বব্যাপী টাইম জোন নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট টাইম এন্ড ডেটের ওয়েবসাইটে গিয়ে বাল্ট্রা দ্বীপের আবহাওয়া সম্পর্কে জানা যায়, আগামী ২৬ মার্চের দ্বীপটিতে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। স্ক্রিনশট দেখুন--



বাল্ট্রা দ্বীপে গাছপালা, পশুপাখির উপস্থিতি রয়েছে কি না জানতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বিশ্বব্যাপী পাখিদের উপস্থিতির তথ্যভিত্তিক ওয়েবসাইট Avibase-এ বাল্ট্রা দ্বীপে থাকা পাখিদের একটি তালিকা খুঁজে পাওয়া যায়। ওই তালিকা থেকে বাল্ট্রা দ্বীপে প্রায় ৯৪ প্রজাতির পাখির উপস্থিতির ব্যাপারে জানা যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--



এছাড়াও, গ্যালাপাগোস কনজারভেশন ট্রাস্ট নামে আরেকটি ওয়েবসাইটে বাল্ট্রা দ্বীপের অন্যতম প্রধান প্রাণী ইগুয়ানার ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--



আরো কি-ওয়ার্ড সার্চ করে থিঙ্ক গ্যালাপাগোস নামে আরেকটি ওয়েবসাইটে "BALTRA ISLAND – GALAPAGOS" শিরোনামে প্রকাশিত একটি নিবন্ধ থেকেও বাল্ট্রা দ্বীপে থাকা গাছপালা, পশুপাখির তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়। ওই নিবন্ধটি থেকে জানা যায়, বাল্ট্রা দ্বীপে বিভিন্ন সামুদ্রিক পাখি, সি লায়ন, লাভা লিজার্ড, ল্যান্ড ইগুয়ানা ইত্যাদি পশুপাখি দেখতে পাওয়া যায়। পাশাপাশি দ্বীপটিতে পালো সান্ত গাছ, প্রিকলি পিয়ার ক্যাকটাস, জেরুজালেম থর্ন ইত্যাদি নামের গাছও দেখতে পাওয়া যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--


অর্থাৎ বাল্ট্রা দ্বীপে বৃষ্টি হয়, পশুপাখি এবং গাছপালাও বিদ্যমান আছে।

সুতরাং বাল্ট্রা দ্বীপে বৃষ্টি হয় না এবং পশুপাখি ও গাছপালা না থাকার ভিত্তিহীন দাবি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।

Related Stories