সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টের লোগোযুক্ত একটি ফটোকার্ড পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের এক নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১২ জুলাই 'Nayemul Islam Bhuiyan' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ফটোকার্ডটি পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, "চট্টগ্রাম লোহাগড়ায় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে জামায়াত নেতা গ্রেফতার।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য ফটোকার্ডটি নকল। অনলাইনভিত্তিক নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টের একটি ফটোকার্ডকে এডিট করে আলোচ্য ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া, আলোচ্য ফটোকার্ডটি তাদের বানানো নয় বলে বুম বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছেন সংবাদমাধ্যমটি।
কি-ওয়ার্ড ধরে সার্চ করে আলোচ্য দাবির প্রেক্ষিতে কোনো প্রতিবেদন ঢাকা পোস্টের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি নির্ভরযোগ্য গণমাধ্যমেও এ সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে, ভাইরাল ফটোকার্ডে উল্লিখিত সময়ের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ঢাকা পোস্টের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ১২ জুলাই একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। যেই ফটোকার্ডের সঙ্গে ভাইরাল ফটোকার্ডের মিল পাওয়া যায়। যদিও ওই ফটোকার্ডে উল্লেখ করা হয়, “লোহাগাড়ায় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার”। যেটি সম্পাদনা করে “লোহাগড়ায় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে জামায়াত নেতা গ্রেফতার!” উল্লেখ করা হয়েছে।
নিচে ভাইরাল ফটোকার্ড (বামে) ও ঢাকা পোস্টের ফেসবুকে প্রকাশিত ফটোর্ডের (ডানে) মধ্যে সমঞ্জসতা দেখুন পাশাপাশি--
এছাড়াও, কি ওয়ার্ড সার্চ করে “লোহাগাড়ায় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার” শিরোনামে ‘ঢাকা পোস্টের’ ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ১২ জুলাই প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে এক মাদরাসা শিক্ষক বেলাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (১২ জুলাই) ভোরে কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে লোহাগাড়া থানার পুলিশ। এ ঘটনায় ওই ছাত্রের বাবা আজ দুপুরে লোহাগাড়া থানায় মামলা করেছেন। গ্রেপ্তার বেলাল উদ্দিন কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের শীলখালী সবুজপাড়া এলাকার নুরুল আলমের ছেলে। লোহাগাড়া উপজেলার একটি মাদরাসার শিক্ষক তিনি। ভিকটিম শিশু একই মাদরাসার ছাত্র বলে জানা গেছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
এদিকে আলোচ্য ফটোকার্ডটি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা পোস্টের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার বুম বাংলাদেশকে জানান, ‘এটি ফেক’।
অর্থাৎ আলোচ্য ফটোকার্ডটি ফেক। ঢাকা পোস্ট এমন কোনো ফটোকার্ড বানায়নি।
সুতরাং ভুয়া ফটোকার্ড তৈরি করে ঢাকা পোস্টের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।