সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করে বলা হচ্ছে; একটি মাহফিলে পুলিশ বাঁধা প্রদান করেছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৭শে অক্টোবর ‘Amora Harbona’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, “নিউ লাল বাংলাদেশে আবারো ওয়াজ মাহফিলে বাধা ..............”। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ভিডিওটি সম্প্রতি প্রচার করা এবং ঘটনার তারিখ স্পষ্টভাবে উল্লেখ না করার ফলে স্বভাবতই এটি সাম্প্রতিক ঘটনা হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে। এছাড়াও ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে ‘নিউ লাল বাংলাদেশ’ লিখে- ২০২৪ সালের ০৫ই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পরের ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি বিভ্রান্তিকর। ভিডিওটি সাম্প্রতিক কোনো ঘটনার নয় বরং ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের নেত্রকোনায় একটি মাহফিলে পুলিশের বাঁধা দেওয়ার পুরোনো ঘটনার দৃশ্য। সেসময়ে গণমাধ্যমে একটি সূত্রের বরাতে উল্লেখ করা হয়েছিল, প্রশাসন থেকে মাহফিলের অনুমতি না থাকায় তখন মাহফিল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
আলোচ্য ভিডিও থেকে কি-ফ্রেম নিয়ে ছবি রিভার্স ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে ফেসবুকে একটি অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ০৬ই ডিসেম্বর “নেত্রকোনা রফিকুল ইসলাম মাদানীর ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ” শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। সম্প্রতি প্রচারিত ভিডিওটির সাথে প্রাপ্ত ভিডিওটির দৃশ্যের হুবহু মিল পাওয়া যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--
দেখা যাচ্ছে ২০২৩ সালে প্রচারিত মূল ভিডিওটি ক্রপ করে প্রচার করায় ভিডিওটির রেজুলেশনের মান হ্রাস পেয়েছে। সম্প্রতি প্রচারিত ভিডিওটির স্থিরচিত্রের (বামে) সাথে ২০২৩ সালে প্রচারিত মূল ভিডিওটির স্থিরচিত্রের (ডানে) পাশাপাশি মিল দেখুন--
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সার্চ করে দৈনিক দেশ রূপান্তরের অনলাইন সংস্করণে ২০২৩ সালের ০৭ই ডিসেম্বর "‘শিশু বক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানীর মাহফিলে পুলিশ!" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনের ফিচার ছবিতেও আলোচ্য ভিডিওতে দেখতে পাওয়া ঘটনার একটি দৃশ্য যুক্ত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, "নেত্রকোনায় ওয়াজ করছিলেন ‘শিশু বক্তা’ মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী। অনুমতি না নেওয়ার অভিযোগে ওয়াজ মাহফিলে হাজির হয় পুলিশ। সেখান থেকে পুলিশ মাইক নিয়ে চলে যায়। ... একটি সূত্র বলছে, প্রশাসন থেকে মাহফিলের অনুমতি না থাকার কারণে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।"
অর্থাৎ ভিডিওটি সাম্প্রিতক ঘটনার নয় বরং ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের পুরোনো একটি ঘটনার।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে পুরোনো ভিডিও সাম্প্রতিক ঘটনার হিসেবে প্রচার করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর।




