সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করে বলা হচ্ছে; ইসরায়েলের রাজপথে সেখানকার বাসিন্দারা বলছে 'যুদ্ধ থামাও ইরান! আমরা ক্ষমা চাচ্ছি! যুদ্ধ নয় শান্তি চাই'। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৯ জুন ‘Mizanur Rahman Farhan’ নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, “আজ ইজরাঈলের রাজপথে! ওরা বলছে যুদ্ধ থামাও ইরান! আমরা ক্ষমা চাচ্ছি! যুদ্ধ নয় শান্তি চাই ....”। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওটি বাস্তব ঘটনার নয় বরং এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ভিডিওকে বাস্তব ঘটনার বলে প্রচার করা হয়েছে।
আলোচ্য ভিডিও থেকে কি-ফ্রেম নিয়ে ছবি রিভার্স ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে গণমাধ্যম কিংবা গ্রহণযোগ্য কোনো মাধ্যমে আলোচ্য ভিডিওর বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এমনকি ইসরায়েলে সেখানকার বাসিন্দারা এমন কোনো দাবিতে রাজপথে নেমেছেন এমন কোনো তথ্যও পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে পর্যবেক্ষণ করে ভিডিওতে ডান দিকের নীল শার্ট পরিহিত একজনের খালি হাতে আচমকা ইসরায়েলের পতাকা দৃশ্যমান হওয়ার মতো অসঙ্গতি পাওয়া যায়। সাধারণত এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ভিডিওতে এরকম অসঙ্গতি দেখা যায়। দেখুন --
এছাড়াও ভিডিওর নিচের দিকে ডান কোণে 'Veo' সাইন দেখতে পাওয়া যায়। গুগল 'Veo' হলো গুগলের একটি প্রায় বাস্তবসম্মত ভিডিও জেনারেশন টুল যা গুগল ডিপমাইন্ড দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। এটি টেক্সট-টু-ভিডিও জেনারেশন, ইমেজ-টু-ভিডিও জেনারেশন এবং সর্বশেষ সংস্করণ, ভিও-৩ ভিডিওর পাশাপাশি নেটিভ অডিও তৈরি করতে পারে। স্ক্রিনশট দেখুন--
গুগলের ভিও ব্যবহার করে বিনামূল্যে মাত্র ০৮ সেকেন্ডের ভিডিও জেনারেট করা যায়। আলোচ্য ভিডিওটিও ০৮ সেকেন্ডের। এছাড়াও গুগলের জেনারেটিভ টুল তাদের কন্টেন্টে 'SynthID' নামক এক ধরণের ওয়াটারমার্কিং ব্যবহার করে যা খালি চোখে দেখা না গেলেও গুগলের SynthID ডিটেকশন টুল তা শনাক্ত করতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় যাচাই করলেও টুলটি ভিডিওটিকে 'গুগলের এআই টুল দিয়ে তৈরি' বলে ফলাফল দিয়েছে। দেখুন--
এআই কন্টেন্ট ডিটেকশন টুল 'হাইভ' ব্যবহার করে যাচাই করলে ভিডিওটি ৯৭ শতাংশ সম্ভাব্য এআই দিয়ে তৈরি বলে ফলাফল দিয়েছে। দেখুন--
অর্থাৎ ভিডিওটি এআই প্রযুক্তিতে তৈরি।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ভিডিওকে বাস্তব ঘটনার বলে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।