সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে নদীর মাঝখানে একটি জাহাজে আগুন লাগার একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, এটি সম্প্রতি চট্টগ্রামে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মহাড়ার সময় মার্কিন যুদ্ধ জাহাজ থেকে আগুনের গোলা বর্ষণে বাংলাদেশের জাহাজ ধ্বংস হয়ে গেছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২০ সেপ্টেম্বর ‘Hussain Saddam’ নামক একটি পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, “চট্টগ্রামে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মহাড়ার সময়,, মার্কিন যুদ্ধ জাহাজ থেকে আগুনের গোলা বর্ষণে বাংলাদেশের জাহাজ একেবারেই ধ্বংস,,বহু হতাহত বলে জানিয়ে স্থানীয়রা,, পরিকল্পিত ভাবে দেশ ধ্বংস করার চেষ্টায় আছে সুদী সাহেব।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। আলোচ্য ভিডিওটি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মহাড়ার সময় মার্কিন যুদ্ধ জাহাজ থেকে আগুনের গোলা বর্ষণের নয়; প্রকৃতপক্ষে এটি গত জুলাই মাসে শীতলক্ষ্যা নদীর মাঝখানে কয়লার জাহাজে আগুন লাগার ভিডিও।
আলোচ্য ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম কেটে নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘Channel Rupganj’ নামক গণমাধ্যম ভিত্তিক ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। গত ৩০ জুলাই প্রকাশিত ভিডিওর সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, শীতলক্ষ্যা নদীর মাঝখানে-হঠাৎ করে কয়লার জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ভিডিওটি দেখুন--
পাশাপাশি, কি ওয়ার্ড সার্চ করে “নারায়ণগঞ্জ শীতলক্ষা নদীর মাঝখানে হটাৎ কয়লার জাহাজে আগুন” শিরোনামে ‘নারায়ণগঞ্জ ৭১’ ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। গত ৩১ জুলাই প্রকাশিত ভিডিওর সঙ্গে আলোচ্য ভিডিওর মিল পাওয়া যায়। ভিডিওটি দেখুন--
এদিকে, কি ওয়ার্ড সার্চ করে “চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়া” শিরোনামে ‘মানবজমিন’ পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। গত ১৮ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের অংশগ্রহণে ৭ দিনব্যাপী “অপারেশন প্যাসিফিক এঞ্জেল” ২৫-৩ যৌথ মহড়া শুরু হয়েছে। ১৭ই সেপ্টেম্বর আকাশ, স্থল ও যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলার বিভিন্ন ধরনের মহড়া পরিচালনা করা হয়। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফেসবুকে সম্প্রতি আলোচ্য দাবিতে প্রচারিত ভাইরাল ভিডিওটি গত জুলাই মাসেই পাওয়া যাচ্ছে।
তাছাড়া, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ মহড়ায় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সেটি গণমাধ্যমে আসাটাই স্বাভাবিক। যদিও কি ওয়ার্ড সার্চ করে এ ধরণের কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ মার্কিন যুদ্ধজাহাজ থেকে আগুনের গোলা নিক্ষেপ করে জাহাজ ধ্বংস করার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পুরোনো এবং ভিন্ন ঘটনার।
সুতরাং পুরোনো ভিন্ন ঘটনার ভিডিও দিয়ে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ থেকে আগুনের গোলা নিক্ষেপ করে জাহাজ ধ্বংস করা হয়েছে বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।