সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হচ্ছে, ধানমন্ডিতে পুলিশের সাথে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
কয়েক ঘন্টা আগে 'Md Khadi Mul Islam' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে ভিডিওটি শেয়ার করে বলা হয়, "২৪/১০/২০২৫ ধানমন্ডিতে লাঠি'সোটা হাতে পুলিশের সাথে আওয়ামী লীগের ত্রিমুখী সং*ঘর্ষ "ভয়ে দৌড়ে পালালো পুলিশ"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। ২০২৩ সালের ১৮ জুলাই পিরোজপুরে বিএনপির পদযাত্রায় পুলিশের বাঁধা দেওয়ার প্রেক্ষিতে বিএনপির সমর্থকদের সাথে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ধারণকৃত ভিডিওকে সাম্প্রতিক দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে।
আলোচ্য ভিডিওটি সম্পর্কে জানতে ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম কেটে নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে বেসরকারি সম্প্রচার মাধ্যম যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে "পিরোজপুরে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে আহত অনেকে; আটক ৬ | Pirojpur | BNP-Police Clash | Jamuna TV" শিরোনামে ২০২৩ সালের ১৮ জুলাই প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনে আলোচ্য ভিডিওটির মত দৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটির ডেস্ক্রিপশনে বলা হয়, "পিরোজপুরে শহরের স্টেডিয়ামের সামনে থেকে শুরু হয় বিএনপি'র পদযাত্রা। কিছুদূর যাওয়ার পর বাধা দেয় পুলিশ। এসময় নেতাকর্মীদের সাথে বাকবিতণ্ডা হয় পুলিশ কর্মকর্তাদের। এক পর্যায়ে বেধে যায় সংঘর্ষ হয়। ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হন বেশ কয়েকজন। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে বিএনপি'র ৬ নেতাকর্মীকে।"। ইউটিউব ভিডিওটি দেখুন--
পরবর্তীতে উক্ত প্রতিবেদনের সূত্রে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ২০২৩ সালের ১৮ জুলাই দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলোর অনলাইন ভার্সনে "পিরোজপুরে বিএনপির পদযাত্রায় পুলিশের বাধা, সংঘর্ষে ওসিসহ আহত ২১" শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচ্য ভিডিওটির মত স্থিরচিত্র খুঁজে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, "পিরোজপুরে জেলা বিএনপির পদযাত্রায় বাধা দেওয়ায় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ৯ পুলিশ সদস্য ও বিএনপির ১২ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে পিরোজপুর শহরের হুলারহাট সড়কের ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিএনপির ছয় নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।"। স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়াও দৈনিক পত্রিকা ডেইলি স্টার, যায় যায় দিন এবং সম্প্রচার মাধ্যম সময় টেলিভিশনের অনলাইন ভার্সনে প্রচারিত প্রতিবেদন থেকেও জানা যায় একই তথ্য।
অর্থাৎ আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। মিছিলে পুলিশি হামলার এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক নয় বরং ২০২৩ সালের ১৮ জুলাইয়ে বিএনপির পদযাত্রায় পুলিশের বাঁধা দেওয়ার প্রেক্ষিতে সংঘর্ষের ঘটনাকে নতুন করে অসত্য দাবি সহ প্রচার করা হচ্ছে।
সুতরাং বিএনপির মিছিলে পুলিশি হামলার পুরোনো ভিডিও শেয়ার করে সাম্প্রতিক আওয়ামীলীগ-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনা বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।




