সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে রাতের অন্ধকারে গোলাগুলির শব্দযুক্ত একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হচ্ছে, পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সম্প্রতি বাংলাদেশে সফরের প্রতিবাদে সেনাবাহিনী বিদ্রোহ করেছে। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৩ আগস্ট 'Kaushik Mirza' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে ভিডিওটি শেয়ার করে বলা হয়, "এই মুহুর্তে সাভার ক্যান্টরমেন্টে সেনাবাহিনীর মধ্যে বিদ্রোহ চলছে, পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফরের প্রতিবাদে, দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী এবং রাজাকারের বাচ্চাদের সাথে ব্যপক সংঘর্ষ চলছে...ইউনুছ হঠাও দেশ বাঁচাও। এগুলো দালাল মিডিয়া প্রচার করবে না।" ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। আলোচ্য পোস্টে দেখানো ভিডিওটি গতবছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়া, ভিডিওটি পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি বনাম বাঙালি সংঘর্ষের ঘটনায় ধারণ করা হয়েছে বলে জানা যায়।
আলোচ্য ভিডিওটি সম্পর্কে জানতে ভিডিওটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে অনলাইন পোর্টাল নিউজ নাউ বাংলার ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর করা একটি ফেসবুক পোস্টে যুক্ত ভিডিওতে আলোচ্য ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, "সেনাবাহিনী-পাহাড়ি সন্ত্রাসী মুখোমুখি! মুহুর মুহুর গুলিতে প্রকম্পিত হচ্ছে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা পাহাড়!" ফেসবুক পোস্টটি দেখুন--
এছাড়া আরো সার্চ করে একাধিক ফেসবুক পেজ এবং একাউন্ট থেকে একই দাবিতে ওই একই সময়ে পোস্ট করা আলোচ্য ভিডিওটির মত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। আলোচ্য ভিডিওটি সম্প্রতি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের বাংলাদেশে আসার প্রতিবাদে সংঘটিত কোনো সংঘর্ষের সময়ে ধারণ করা নয়। ভিডিওটি ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চট্টগ্রামে পাহাড়ি বনাম বাঙালি সংঘর্ষের সময়ে ধারণ করা হয়।
উল্লেখ্য গত ২৩ আগস্ট পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসেন।
সুতরাং ২০২৪ সালে চট্টগ্রামে পাহাড়ি বনাম বাঙালি সংঘর্ষের ভিডিওকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে সেনাবাহিনীর বিদ্রোহ করার ঘটনার বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।