সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়িয়ে তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল শেখ হাসিনা'সহ ডিসেম্বরের ০৭ তারিখে দেশে ফেরার কথা বলেছেন। ভিডিও সম্বলিত এরকম দুইটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৮ই অক্টোবর 'উন্নয়ন মানেই আপা’ নামক একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, এটি সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের আসল কোনো বক্তব্যের দৃশ্য নয়। বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে উক্ত ভিডিওটি কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে।
আলোচ্য দাবিটি নিয়ে সার্চ করে গ্রহণযোগ্য কোনো মাধ্যমে এই সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে অস্বাভাবিক মুখভঙ্গি ও অঙ্গভঙ্গি লক্ষ্য করা যায়। সাধারণত এআই দিয়ে তৈরিকৃত কিংবা সম্পাদিত ভিডিওতে এজাতীয় অসঙ্গতি দেখতে পাওয়া যায়।
ফলে এআই-ডিপফেক কন্টেন্ট শনাক্তকরণ টুল 'DeepFake-o-meter'-এর মাধ্যমে যাচাই করলেও টুলটি মিশ্র প্রতিক্রিয়াযুক্ত ফলাফল দিয়েছে। টুলটির বেশকিছু ডিটেকশন মেথডের মধ্যে অধিকাংশ মেথডেই ভিডিওটি সম্ভাব্য এআই দ্বারা তৈরি বলে ফলাফল পাওয়া গেছে। দেখুন--
এছাড়াও ভিডিও থেকে কি-ফ্রেম নিয়ে ছবি রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম 'টাইমস নাউ' এর হিন্দি সংস্করণের একটি ওয়েবস্টোরিজে আলোচ্য ভিডিওটির স্থিরচিত্রের মতো একটি ছবি পাওয়া যায়। স্থিরচিত্রের সাথে (বামে) টাইমস নাউ'য়ের প্রতিবেদনে পাওয়া ছবিটির (ডানে) তুলনা দেখুন--
অর্থাৎ, অনলাইনে থাকা ছবিকে মিরর করে সেই ছবি থেকে এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটির স্থিরচিত্রে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের পাশে আরেকজনের পোশাক দেখা যাচ্ছে যেটি টাইমস নাউ'য়ের ছবিতে নেই। সম্ভাব্য একই অনুষ্ঠানের একই সময়ের দুটি ভিন্ন ছবি অথবা টাইমস নাউ'য়ের প্রতিবেদনে পুতুলের পাশের ব্যক্তির ছবি ক্রপ করে দেওয়া হয়েছে।
পুনরায় রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে পুতুলের পাশের ব্যক্তির পোশাকের ছবি সহ একই ছবিটি পাওয়া যায়। স্থিরচিত্রের সাথে (বামে) দেশীয় গণমাধ্যম কালের কণ্ঠের প্রতিবেদনে পাওয়া ছবিটির (ডানে) পাশাপাশি মিল দেখুন--
অর্থাৎ ভিডিওটি একটি ছবি থেকে এআই প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে এআই প্রযুক্তিতে তৈরি একটি ভিডিওকে বাস্তবে দেওয়া বক্তব্যের বলে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।




