সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় কোনো আইনি বাধার সম্মুখীন নয় বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৩ মে 'Dhali Mohammad Sukkur' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হয়, "ব্রেকিং নিউজ: আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় কোনো আইনি বাধার সম্মুখীন নয়—হাইকোর্টে রিটের প্রেক্ষিতে আদালত এমনটাই জানিয়েছেন।" ফেসবুক পোস্টে যুক্ত ভিডিওটিতে সংবাদ উপস্থাপিকাকে বলতে শোনা যায়, "রাজনীতি করতে কোনো বাঁধা নেই আওয়ামী লীগের। দলটির নিবন্ধন বাতিল করে নিষিদ্ধ করার রিট খারিজ করেছেন হাইকোর্ট।"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নরসিংদীর সারডা সোসাইটি নামে একটি মানবাধিকার সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক আরিফুর রহমান মুরাদ ভুঁইয়া নামে এক ব্যক্তি আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য আদালতে রিট করেন। পরে আদালত ওই রিটটি খারিজ করে দেন। রিট খারিজের সেই সংবাদকে নতুন করে বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচার করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হবে না মর্মে সংবাদ প্রচার করা এই ভিডিওটির ব্যাপারে জানতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম এটিএন নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর "রাজনীতি করতে কোনো বাধা নেই আওয়ামী লীগের | BD Politics | Politics | Awamileague | ATN News" শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিও প্রতিবেদনটির শুরুতে উপস্থাপিকাকে বলতে শোনা যায়, "রাজনীতি করতে কোনো বাঁধা নেই আওয়ামী লীগের। দলটির নিবন্ধন বাতিল করে নিষিদ্ধ করার রিট খারিজ করেছেন হাইকোর্ট।" তবে, সংবাদটির ভিতরে রিপোর্টার জাবেদ আখতারকে বলতে শোনা যায়, "নরসিংদীর সারডা সোসাইটি নামে একটি মানবাধিকার সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক আরিফুর রহমান মুরাদ ভুঁইয়াআওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য ব্যক্তিগতভাবে আদালতে রিট করেন। পরে হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রিটটি সরাসরি খারিজ করে দেন।"। ইউটিউব ভিডিওটি দেখুন--
অর্থাৎ আদালত কর্তৃক আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ না করা এবং "আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বাঁধা নেই"- শীর্ষক এই সংবাদটি পুরোনো।
উল্লেখ্য গত ১০ মে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। পরে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তাই এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যখন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তখন গত বছরের পুরোনো এই সংবাদ প্রচার করায় এ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।
সুতরাং আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে বাঁধা নেই- শীর্ষক পুরোনো সংবাদ সরকার দলটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পর নতুন করে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।