সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে একজন মেয়েকে কয়েকজন যুবক চ্যাংদোলা করে তুলে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, নোয়াখালীতে এক হিন্দু তরুণীকে কয়েকজন যুবক অপহরণ করে মাইক্রোবাসে করে নিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি প্রচার করা হচ্ছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৮ আগস্ট ‘Umme Faria Irin’ নামক একটি আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, “আজ সকালে নোয়াখালীর সেনবাগ থানার মইশাই গ্রামের পাল বাড়ি দুলাল পালের মেয়েকে প্রকাশ্যে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাচ্ছে ৭/৮ জন যুবক, এমন স্বাধীনতাই কি আমাদের কাম্য?” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে আলোচ্য ভিডিওটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কোনো ঘটনার নয়। বরং এটি একটি পারিবারিক বিবাদের ঘটনা। যেখানে ওই নারীকে অপহরণের চেষ্টা করেছিলেন তাঁরই স্বামী।
সংশ্লিষ্ট কি ওয়ার্ড সার্চ করে “নোয়াখালীর সেই নারীকে তুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁর স্বামী” শিরোনামে ‘প্রথম আলো’র অনলাইনে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওর মিল পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় এক নারীকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তোলা একটি ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ এটিকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বলে উল্লেখ করছেন। অবশ্য ওই নারীর বাবা ও গ্রামবাসী জানিয়েছেন, ঘটনাটি সত্য। তবে সেটা সাম্প্রদায়িক হামলা বা সহিংসতার ঘটনা ছিল না। ওই নারীকে অপহরণের চেষ্টা করেছিলেন তাঁর স্বামী। তবে তিনি তা পারেননি। ওই নারীকে অপহরণের চেষ্টার ঘটনা ঘটে গতকাল বৃহস্পতিবার। ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, কয়েক জন ব্যক্তি জোর করে রাস্তায় থামানো একটি মাইক্রোবাসে নারীকে ওঠানোর চেষ্টা করছেন। স্ক্রিনশট দেখুন--
পাশাপাশি, কি ওয়ার্ড সার্চ করে “নোয়াখালীতে হিন্দু তরুণীকে তুলে নেওয়ার ঘটনা সাম্প্রদায়িক নয়, পারিবারিক কলহ” শিরোনামে ‘আজকের পত্রিকা’র অনলাইনে একই প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। যেই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওর মিল পাওয়া যায়। ১০ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই তরুণীকে তুলে নেওয়ার ঘটনার সঙ্গে সাম্প্রদায়িক হামলা বা নির্যাতনের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি পারিবারিক কলহের বিষয়। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ নোয়াখালীতে হিন্দু মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বা হামলার কোনো ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই। বরং এটি একটি পারিবারিক বিবাদের প্রেক্ষিতে ঘটা ঘটনা।
সুতরাং পারিবারিক কলহের জেরে ঘটা একটি ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।