সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের একটি ভবন ভেঙে পড়ছে। বেশকিছু স্থানীয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী ভিডিওটি পোস্ট করে ভিডিওটিকে বাংলাদেশের একটি ফায়ার সার্ভিস ভবন ভেঙে যাওয়ার দৃশ্য হিসেবে উপস্থাপন করেছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৮শে মে ‘Md Roman Uddin’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, “হাসিনার উন্নয়ন, উন্নয়ন .. ঠিকাদার বলছে, সবাইকে দিতে গিয়েই শেষ। আজই একটি সরকারি ভবন দেখে ভাবছিলাম সত্যি হয়ে গেল .....”। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো ফায়ার সার্ভিস ভবন ভেঙে যাওয়ার দৃশ্যের নয় বরং এটি মিয়ানমারের সাগাইংয়ে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ফায়ার সার্ভিস ভবনের ভিডিও।
আলোচ্য ভিডিও থেকে কি-ফ্রেম নিয়ে ছবি রিভার্স ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে ফেসবুকে মিয়ানমারের একটি পেজ থেকে গত ১২ই এপ্রিল আলোচ্য ভিডিওটি সহ প্রকাশিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
পাশাপাশি, রিভার্স ইমেজ সার্চে ফেসবুকে মিয়ানমারের আরো একটি ফেসবুক পেজে গত ৩১শে মার্চ আলোচ্য ঘটনার দুইটি ছবি সহ প্রকাশিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। এতে উল্লেখ করা হয়, সাগাইং ফায়ার স্টেশনের অবস্থার চিত্র (অনূদিত ও সংক্ষেপিত)। প্রচারিত ভিডিওটির সাথে (বামে) প্রাপ্ত ছবি দুইটির (ডানে) পাশাপাশি মিল দেখুন --
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সার্চ করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি-তে গত ২৯শে মার্চ প্রকাশিত "Myanmar quake toll passes 1,600 as people dig for survivors with bare hands" শিরোনামে আলোচ্য ফায়ার সার্ভিস ভবনের ক্ষতিগ্রস্ত ছবি সহ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। এতে ছবির ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয়, 'সাগাইংয়ের ফায়ার স্টেশনটি ভেঙে পড়ে, দমকল গাড়ির ইঞ্জিনগুলো ভেঙে পড়ে (অনূদিত)'। প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য ফায়ার সার্ভিস ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ভিডিওটি মিয়ানমারের।
উল্লেখ্য মিয়ানমারে গত ২৮ মার্চ একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। দেশটির সংবাদমাধ্যম মিজিমা'র এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫,৩৫২ জনে। এছাড়াও আহত হয়েছেন ৭,১০৮ জন এবং একইসাথে নিখোঁজ রয়েছেন ৫৩৮ জন।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে মিয়ানমারে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ফায়ার সার্ভিস ভবনের ভিডিও বাংলাদেশের ঘটনা বলে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।