সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হচ্ছে, সম্প্রতি ছাত্রলীগের বিক্ষোভ এবং মিছিল চলাকালে ভিডিওটি ধারণ করা হয়। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে ও এখানে।
গত ৫ ডিসেম্বর 'Atika Binte Hossain' নামে একটি ফেসবুক পেজে লাঠিসোটা হাতে বিক্ষোভকারীদের বিক্ষোভের একটি ভিডিওটি শেয়ার করে বলা হয়, "ঢাকা শহর ছাত্রলীগের দখলে। শেখ হাসিনা দেশে আসবেন খুব শীগ্রই।" ভিডিওটিতে । ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য ভিডিওটি সাম্প্রতিক নয়। আওয়ামী লীগের মিছিলেরও নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে চলা কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ধারণকৃত বিক্ষোভকারীদের ভিডিওকে ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক মিছিলের ভিডিও বলে প্রচার করা হচ্ছে।
আলোচ্য ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ভিডিওটির উপরে বার্তা সংস্থা এপির লোগো দেখতে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে এপির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ২৬ জুলাই "Bangladesh’s top court scales back government jobs quota after deadly unrest that killed scores" শিরোনামে একটি ভিডিও প্রতিবেদনে আলোচ্য ভিডিওটির মত হুবহু দৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। ওই ভিডিওটির ডেস্ক্রিপশানে ২১ জুলাই, ২০২৪ এর ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়, "সরকারি চাকরির আবেদনকারীদের জন্য বিতর্কিত কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে রাস্তায় বিক্ষোভরত বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। ভালো চাকরির অভাবের কারণে হতাশ শিক্ষার্থীরা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী প্রবীণ যোদ্ধাদের আত্মীয়দের জন্য ৩০% সরকারি চাকরি সংরক্ষণের কোটা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে। ২০১৮ সালে ব্যাপক ছাত্র বিক্ষোভের পর সরকার এর আগে এটি বন্ধ করে দেয়, কিন্তু জুন মাসে বাংলাদেশের হাইকোর্ট কোটা পুনর্বহাল করে এবং নতুন করে বিক্ষোভ শুরু করে। (অনূদিত)"। ইউটিউব ভিডিওটি দেখুন--
আরো সার্চ করে ২০২৪ সালের ৩০ জুলাই 'Pokhara Television HD' নামে একটি ফেসবুক পেজে পোস্ট করা একটি ভিডিও প্রতিবেদনেও আলোচ্য ভিডিওটির মত দৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। ওই ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, "आज बंगलादेश सरकारले गत जुलाईबाट सुरु भएको कोटाविरोधी आन्दोलनमा मृत्यु भएकाहरुको नाममा शोक दिवस मनाउने घोषणा ग¥यो। (গত জুলাই মাসে শুরু হওয়া কোটাবিরোধী বিক্ষোভে নিহতদের স্মরণে আজ বাংলাদেশ সরকার শোক দিবস ঘোষণা করেছে। -গুগলের সাহায্যে অনূদিত)"। ফেসবুক পোস্টটি দেখুন--
এছাড়াও, ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির ওয়েবসাইটে প্রাপ্ত প্রতিবেদনেও আলোচ্য ভিডিও সম্পর্কে একই তথ্য পাওয়া যায়।
অর্থাৎ, আলোচ্য ভিডিওটি সাম্প্রতিকও নয়, আওয়ামী লীগের মিছিলেরও নয়। ২০২৪ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলনের ভিডিওকে ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক মিছিলের ভিডিও বলে প্রচার করা হচ্ছে।
সুতরাং ২০২৪ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলনের ভিডিওকে ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক মিছিলের ভিডিও বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে যা বিভ্রান্তিকর।




