সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কয়েকটি গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজ সহ বিভিন্ন সাধারণ পেজে খবরের লিংক কিংবা ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়েছে। এতে বন্দুক হাতে বেগুনি রংয়ের পোষাক পরা একজনের ছবি (ভিডিওর স্থিরচিত্র) প্রচার করে বলা হয়েছে, সম্প্রতি কাশ্মীরে জঙ্গী হামলার ঘটনায় একজন হামলাকারীর ছবি এটি। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৩ এপ্রিল ‘দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ’-এর ফেসবুক পেজ থেকে আলোচ্য ছবি সহ একটি ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, “সেনাবাহিনীর পোশাকে ছদ্মবেশ একে-৪৭ হাতে হামলা”। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ছবিটিকে সম্প্রতি কাশ্মীরে জঙ্গী হামলার একজন হামলাকারীর ছবি বলে সংবাদ প্রচার করেছে যমুনা টেলিভিশন (২৯ সেকেন্ডে), দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ (ফেসবুক), বাংলাদেশ টাইমস সহ কয়েকটি গণমাধ্যম।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। এটি সম্প্রতি কাশ্মীরে জঙ্গী হামলার একজন হামলাকারীর ছবি নয় বরং ২০২১ সালের পুরোনো একটি ভিডিওর স্থিরচিত্র। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে আলোচ্য স্থিরচিত্রের দীর্ঘ সংস্করণের মূল ভিডিওটি ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবরে একজন তার নিজের পেজে প্রকাশ করেছিলেন।
ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে ছবি শেয়ারের সামাজিক মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ‘makkal_thalaivar_ponnar’ ইউজারনেমের একটি অ্যাকাউন্টে গত ২৩ এপ্রিল একই স্থানের একই ব্যক্তির ঐ দৃশ্যের (ঘটনার) ভিন্ন আরেকটি ছবি পাওয়া যায়। এর ফলে প্রতীয়মান হয় একই ঘটনার আরেকটি তোলা ছবি অথবা ভিডিওর স্থিরচিত্র। অর্থাৎ একই ভিডিও থেকে প্রচারিত ছবিটি এবং ইনস্টাগ্রামে পাওয়া ছবিটি নেওয়া হয়েছে। ইনস্টাগ্রাম পোস্টটির প্রিভিউ দেখুন--
পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড সার্চ এর মাধ্যমে ফেসবুকে ‘Bilalkhan Bilalkhan’ নামের একটি পেজে ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর প্রকাশিত আলোচ্য স্থিরচিত্রের দীর্ঘ সংস্করণের মূল ভিডিওটি পাওয়া যায়। ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন--
গণমাধ্যমে সম্প্রতি কাশ্মীরে জঙ্গী হামলার একজন হামলাকারীর ছবি বলে প্রচারিত ছবিটি (বামে) এবং ফেসবুকে ২০২১ সালে প্রকাশিত স্থিরচিত্রের মূল ভিডিওটির (ডানে) পাশাপাশি মিল দেখুন--
অর্থাৎ ছবিটি ২০২১ সালের পুরোনো একটি ভিডিওর স্থিরচিত্র। ছবিটি সম্প্রতি কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় কোনো হামলাকারীর নয়।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে ২০২১ সালের পুরোনো একটি ভিডিওর স্থিরচিত্রকে সম্প্রতি কাশ্মীরে জঙ্গী হামলার ঘটনায় একজন হামলাকারীর ছবি বলে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।