সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে কয়েকজন মানুষ অপর একজনকে মারধর করার একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, হাসপাতালে গিয়ে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন যুবলীগের এক কর্মীকে মারধর করা হচ্ছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৪ এপ্রিল ‘আমি সৈনিক’ নামক আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, “মনে রাখিছ পই পই করে হিসাব নেওয়া হবে। হাসপাতালের ভিতরে গিয়ে কি নির্মম ভাবে যুবলীগ নেতাকর্মীদের মেরে হত্যা করতেছে।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে ভাইরাল ভিডিওটি বাংলাদেশের হাসপাতালে গিয়ে যুবলীগ কর্মীকে মারধরের নয় বরং এটি ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের দেরা বাসসি সিভিল হাসপাতালে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনার।
ভাইরাল ভিডিওটির কি ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে “Rival groups turn Dera Bassi civil hospital into battleground, 8 arrested” শিরোনামে ‘হিন্দুস্তান টাইমস’ এর ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ১৩ এপ্রিল প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর কক্ষ, যুবকদের অবস্থান, মারধরের ভঙ্গি, সরঞ্জাম ও পোশাকের দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--
প্রতিবেদনে বলা হয়, ১১ এপ্রিল ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের দেরা বাসসি সিভিল হাসপাতালে মুকন্দপুর গ্রামের দুই পক্ষের পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে তাঁরা আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসলে এক পর্যায়ে দুই পক্ষের সদস্যদের হাসপাতালে আবারও সংঘর্ষ হয়।
নিচে যুবলীগ কর্মীকে মারধর দাবিতে আলোচ্য ভিডিওর স্ক্রিনশট (বামে) এবং ‘হিন্দুস্থান টাইমম’ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ছবি (ডানে) দুটির মিল দেখুন পাশাপাশি--
এদিকে, হিন্দুস্তান টাইমস এর প্রতিবেদনের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ভারতের প্রভাবশালী সম্প্রচার মাধ্যম ‘এনডিটিভি’র ওয়েবসাইটে “Clash Breaks Out At Dera Bassi Hospital In Punjab Over Village Mining Dispute” শিরোনামে গত ১২ এপ্রিল একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। যেই প্রতিবেদনে প্রকাশিত ভিডিওর সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওর দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ হাসপাতালে যুবলীগ কর্মীকে কেউ মারধর করছে দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে ভিডিওটি ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের দেরা বাসসি সিভিল হাসপাতালে স্থানীয় বিবাদমান দুই পক্ষের সংঘর্ষের, ভিডিওটি যুবলীগ কর্মীকে মারধরের সাথে সম্পর্কিত নয়।
সুতরাং, ভারতের ভিন্ন একটি ঘটনার ভিডিও পোস্ট করে বাংলাদেশের একটি হাসপাতালে যুবলীগ কর্মীকে মারধর করার বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।