সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করে বলা হচ্ছে; ইসরায়েলের একজন সেনাসদস্য ইরানকে যুদ্ধ বন্ধের আকুতি জানাচ্ছেন। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৭ জুন ‘Mohammed Emon’ নামক পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওটি বাস্তব ঘটনার নয় বরং এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ভিডিওকে বাস্তব ঘটনার বলে প্রচার করা হয়েছে।
ভিডিওটিতে সময় টেলিভিশনের লোগো যুক্ত করা হলেও বাস্তবে সময় টেলিভিশনের সামাজিক হ্যান্ডেলগুলোতে এই ভিডিওটি কিংবা অনলাইন সংস্করণে এ-সংক্রান্ত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। আলোচ্য ভিডিও থেকে কি-ফ্রেম নিয়ে ছবি রিভার্স ইমেজ সার্চ সহ বিভিন্নভাবে সার্চ করেও গ্রহণযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এছাড়াও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় সময় টেলিভিশনের লোগো টেলিভিশনটির কোনো ভিডিও কন্টেন্ট থেকে ক্রপ করে এনে যুক্ত করা হয়েছে। তাই লোগো বাম দিক থেকে ডান দিকে অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে পরিবর্তিতে হয়েছে।
এছাড়াও ভিডিওতে একটি টিকটক অ্যাকাউন্টের তথ্য পাওয়া যায়। পরবর্তীতে 'positivevibesonly389' ইউজারনেমের টিকটক অ্যাকাউন্টে আলোচ্য ভিডিওটিও পাওয়া যায়। ভিডিওর ডান পাশের নিচের দিকে 'Veo' সাইন দেখতে পাওয়া যায়।
গুগল 'Veo' হলো গুগলের একটি প্রায় বাস্তবসম্মত ভিডিও জেনারেশন টুল যা গুগল ডিপমাইন্ড দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। এটি টেক্সট-টু-ভিডিও জেনারেশন, ইমেজ-টু-ভিডিও জেনারেশন এবং সর্বশেষ সংস্করণ, ভিও-৩ ভিডিওর পাশাপাশি নেটিভ অডিও তৈরি করতে পারে। স্ক্রিনশট দেখুন--
গুগলের ভিও ব্যবহার করে বিনামূল্যে মাত্র ০৮ সেকেন্ডের ভিডিও জেনারেট করা যায়। আলোচ্য ভিডিওটিও ০৮ সেকেন্ডের। এছাড়াও গুগলের জেনারেটিভ টুল তাদের কন্টেন্টে 'SynthID' নামক এক ধরণের ওয়াটারমার্কিং ব্যবহার করে যা খালি চোখে দেখা না গেলেও গুগলের SynthID ডিটেকশন টুল তা শনাক্ত করতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় যাচাই করলেও টুলটি ভিডিওটিকে 'গুগলের এআই টুল দিয়ে তৈরি' বলে ফলাফল দিয়েছে। দেখুন--
এআই কন্টেন্ট ডিটেকশন টুল 'হাইভ' ব্যবহার করে যাচাই করলে ভিডিওটি ৯৯ শতাংশ সম্ভাব্য এআই দিয়ে তৈরি বলে ফলাফল দিয়েছে। দেখুন--
অর্থাৎ ভিডিওটি এআই প্রযুক্তিতে তৈরি।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ভিডিওকে বাস্তব ঘটনার বলে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।