সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করে বলা হচ্ছে, ভারতে এক মুসলিম ব্যক্তির দাড়ি কেটে দেওয়া হচ্ছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৬ এপ্রিল ‘Md Robiul Islam’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, “ইন্ডিয়া মোদি সরকার কিভাবে মুসলিমদের উপর নির্যাতন করছে দাড়ি কেটে দিচ্ছে দেখুন সবাই ...”। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওটি ভারতের কোনো ঘটনার নয় বরং ২০২০ সালে পাকিস্তানে পাঁচ বছরের এক মেয়েকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দারা এক ব্যক্তির দাড়ি এবং ভ্রু কেটে ফেলার সময় ভিডিওটি ধারণ করা হয়।
আলোচ্য ভিডিও থেকে কি-ফ্রেম নিয়ে ছবি রিভার্স ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে সামাজিক মাধ্যম এক্স (টুইটারে) একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ২০২০ সালের ২১ মে একটি ভিডিও সহ পোস্ট পাওয়া যায়। প্রাপ্ত ভিডিওটির সাথে আলোচ্য ভিডিওটির হুবহু মিল পাওয়া যায়।
ভিডিওটির ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয়, পাঁচ বছরের এক মেয়ের সাথে যৌন নির্যাতনের সময় ধরা পড়লেন একজন। স্থানীয় বাসিন্দারা তার দাড়ি এবং ভ্রু কামিয়ে দিলেন (অনূদিত ও সংক্ষেপিত)। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সার্চ করে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া ভিত্তিক আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যম Tribal News Network এর এক্স (সাবেক টুইটার) একাউন্টে ২০২০ সালের ২১ মে প্রকাশিত একটি পোস্টে একই ভিডিওটি (প্রথম দিকের কয়েক সেকেন্ড ব্যতীত) পাওয়া যায়। এতে উল্লেখ করা হয়, লাহোরে পাঁচ বছরের এক মেয়ের শ্লীলতাহানি করার সময় এক ব্যক্তি হাতেনাতে ধরা পড়ে এবং তার দাড়ি এবং ভ্রু কামিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা (অনূদিত)। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়াও ২০২০ সালের ২২ মে লাহোরের পুলিশ অপারেশন্স বিভাগের উপ-মহাপরিদর্শক (অফিসের) এক্স অ্যাকাউন্টে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। এতে বলা হয়েছে, যার দাড়ি কেটে ফেলা হচ্ছে তার নাম আলতাফ হোসেন এবং তার বিরুদ্ধে ধারা ৩৭৬/৫১১ এর অধীনে অভিযুক্ত আলতাফের বিরুদ্ধে এফআইআর রেজিস্ট্রি হয়েছে যার নম্বর ১৩৪৬/২০। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে (অনূদিত ও সংক্ষেপিত)"।
অর্থাৎ ভিডিওটি ২০২০ সালের মে মাসে পাকিস্তানে পাঁচ বছরের এক মেয়েকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দারা এক ব্যক্তির দাড়ি এবং ভ্রু কেটে ফেলার সময় ধারণ করা হয়।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে পাকিস্তানে একজন ব্যক্তির দাড়ি এবং ভ্রু কেটে ফেলার ভিডিওকে ভারতে মুসলিম নির্যাতনের ঘটনার দৃশ্য প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।