সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর একটি ফটোকার্ড পোস্ট করা হচ্ছে। ফটোকার্ডটিতে বলা হয়, শাহবাগে শেখ হাসিনার ফাঁসির অভিনয় করতে গিয়ে গলায় ফাঁস লেগে প্রাণ গেল এক জুলাই যোদ্ধার। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৭ নভেম্বর 'M - Force' নামে একটি ফেসবুক পেজে ফটোকার্ডটি পোস্ট করে লেখা হয়, "শাহবাগের মোড়ে আজ সন্ধ্যা সাতটার সময় শেখ হাসিনার প্রতীকী ফাসির আয়োজন করা হয়।এ সময় অতি আবেগে নিজেই গলায় দড়ি পরে ফাঁসির অভিনয় করতে গিয়ে এরশাদুল হক নামের এক জুলাই যোদ্ধারা মৃত্যু ঘটে। উল্লেখ্য এরশাদুল হক শেখ হাসিনার প্রতীকী ফাঁসির মঞ্চে অভিনয় করতে যখন নিজে গলায় ফাঁস লাগায়, তখন মঞ্চের পেছন থেকে কিছু ইনকিলাব মঞ্চ এবং ছাত্র শিবিরের নেতাকর্মী ধাক্কাধাক্কি শুরু করলে হঠাৎ মঞ্চ ভেঙ্গে পড়ে, এতে এরশাদুল হকের গলায় ফাঁস লেগে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় এরশাদুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে।এরশাদুল হক কোথায় পড়ালেখা করে এখনো সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।পকেটে পাওয়া ভোটার আইডি চেক করে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে এরশাদুলের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা।তিনি জুলাই আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী এবং বর্তমানে কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত নন। প্রথম আলো খবরটা পোস্ট করার দুই মিনিট পরেই ডিলিট করে ফেলে,হয়তো কারো হুমকিতে এই মৃত্যুর ঘটনা ধামা চাপা দিতেই এমনটা করেছে।"। ফটোকার্ডটিতে লেখা থাকতে দেখা যায়, "শাহবাগে শেখ হাসিনার ফাঁসির অভিনয় করতে গিয়ে গলায় ফাঁস লেগে প্রাণ গেল এক জুলাই যোদ্ধার"। নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য ফটোকার্ডটি নকল। জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করে আলোচ্য ফটোকার্ডটি তাদের বানানো নয় বলে নিশ্চিত করেছে। কি-ওয়ার্ড ধরে সার্চ করে আলোচ্য দাবির প্রেক্ষিতে কোনো প্রতিবেদন প্রথম আলোর ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি নির্ভরযোগ্য অন্য গণমাধ্যমেও এ ধরণের কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচ্য ফটোকার্ডটি তাদের নয় বলে প্রথম আলোর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গত ১৭ নভেম্বর করা একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। ওই পোস্টে আলোচ্য ফটোকার্ডটির ব্যাপারে বলা হয়, "প্রথম আলোর নামে তৈরি এই ছবি ও তথ্যটি নকল, আমাদের তৈরি নয়। বিভ্রান্তি এড়াতে আমাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ ও অফিসিয়াল ফেসবুক গ্রুপ ও অনলাইনের সঙ্গে থাকুন।" পোস্টটি দেখুন--
অর্থাৎ প্রথম আলোর লোগো ব্যবহার করে শেখ হাসিনার ফাঁসির অভিনয় করতে গিয়ে গলায় ফাঁসি লেগে জুলাই যোদ্ধার মৃত্যু ঘটেছে বলে দাবি করে নকল ফটোকার্ড প্রচার করা হচ্ছে। প্রথম আলো এমন কোনো খবর কিংবা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।
সুতরাং প্রথম আলোর লোগো ব্যবহার করে ভিত্তিহীন তথ্যযুক্ত নকল ফটোকার্ড প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।




