HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইল

সিলেটের বন্যা: পরিস্থিতির ভয়াবহতা ও ভুয়া খবরের চিত্র

এই নিবন্ধে সিলেটে চলমান বন্যায় বুম বাংলাদেশের ফ্যাক্ট চেকারদের যাচাই করা শীর্ষ ৫ টি প্রতিবেদন সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়েছে।

By - Md Abdullah Khan | 28 Jun 2022 2:23 AM GMT

সিলেট অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি:

২০১৮ সালে জার্মানির রুহর বিশ্ববিদ্যালয় বোখাম এবং ডেভেলপমেন্ট হেল্প অ্যালায়েন্স নামে একটি জার্মান বেসরকারি মানবিক সংস্থা যৌথভাবে করা গবেষণা প্রকাশ করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ঝুঁকির মধ্যে থাকা শীর্ষ ১৫টি দেশের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল ওই গবেষণায়। যার মধ্যে ছিল বাংলাদেশের নামও। সেদিক থেকে বন্যার মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাংলাদেশে নতুন কিছু নয়৷ প্রতিবছর দেশের প্রায় ২৬,০০০ বর্গ কিমি বা ১৮ শতাংশ ভূখন্ড বন্যায় প্লাবিত হয়৷ তবে সম্প্রতি বাংলাদেশের উত্তর পূর্বে সিলেট সুনামগঞ্জ অঞ্চল যে ভয়াবহ বন্যার মুখামুখি হয়েছিল তা কিছুটা ব্যতিক্রম। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান সিলেটের এবারের বন্যাকে ১২২ বছরের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ বলে আখ্যা দিয়েছেন। যদিও জার্মান সম্প্রচারমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে পরিবেশ বিজ্ঞানী ও পানি সম্পদ বিশেষজ্ঞ, যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ার লক হ্যাভেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান বলেছেন, ১২২ বছরে এবার তৃতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে। সর্বোচ্চ নয়। তবুও এক মাসের ব্যবধানে সিলেট এবং সুনামগঞ্জে এবার বন্যা যে রূপ নেয় তা ছিল সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ।

বাংলাদেশের সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোয় এই বছর এ নিয়ে তৃতীয় দফায় বন্যার কবলে পড়ে। তন্মধ্যে বিশেষ করে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার কথা বলা যায়। সুনামগঞ্জের বাসিন্দারা গণমাধ্যমকে বলছেন, বহু বছরের মধ্যে তারা এরকম মারাত্মক বন্যার মুখোমুখি হননি। কর্তৃপক্ষের হিসাব মতে, সবমিলিয়ে ৩৫ লাখের বেশি মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়ে এই অঞ্চলের মানুষ। বন্যার পানিতে তলিয়ে সুনামগঞ্জ শহর পুরো দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বন্যার পানিতে আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধারে সিলেট এবং সুনামগঞ্জের আটটি উপজেলায় নামানো হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকেও।

প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল বাংলাদেশের উজানে ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে অতি বৃষ্টি এবং ওই বৃষ্টির পানি ঢল হয়ে বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের সব কটি জেলায় প্রবেশই এই বন্যার কারণ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন কেবল অতিবৃষ্টিই এই বন্যার একমাত্র কারন নয়। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে আবহাওয়া-জলবায়ু বা বৃষ্টির ধরণ বদল এবং নদীর নাব্যতা কমে যাওয়াও এই দূর্যোগের জন্য সমানভাবে দায়ী বলে তাদের মত। তবে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এই বন্যার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি আন্তদেশীয় উদ্যোগের অভাব ও অব্যবস্থাপনাকেও কারণ হিসাবে চিহ্নিত করছে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী টানা বৃষ্টি কমে আসায় সিলেট অঞ্চলে বন্যার পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে।

ভুয়া তথ্য প্রবাহ:

চলমান বন্যার প্রেক্ষাপটে গত বুধবার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে হালনাগাদ তথ্যে জানানো হয়, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা-- এই তিন জেলায় মোট ২ হাজার ৫২৮টি সাইটের মধ্যে ৫১২টি সাইট বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতাবহির্ভূত রয়েছিল বন্যার কারণে। ধীরেধীরে অচল সাইট অপারেটরের সার্বিক প্রচেষ্টায় সচল করা হয়েছে বলেও জানানো হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই পুরোনো বন্যার সময়কাল জুড়েই বন্যা পীড়িত অঞ্চলে তথ্যের প্রবাহ ছিল কম। এই সুযোগে বন্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্যও ছড়িয়ে পড়েছিল সামাজিক মাধ্যমে। কোনো কোনো তথ্য, ভিডিও শেয়ার হয়েছিল হাজারের অধিক এবং ব্যবহারকারীরা বিভ্রান্তিকর ভিডিও দেখেছিল কয়েক মিলিয়নবার।

ভুল তথ্যগুলো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দ্রুত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এবারে চলমান বন্যাকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়া ভুয়া তথ্যকে খণ্ডন করে বুম বাংলাদেশে প্রকাশিত শীর্ষ পাঁচটি ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন সংক্ষেপে তুলে ধরা হল:

এক.

গত ১৮ জুন সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ থেকে একটি বাঁধের ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হয়েছিল, ভারতের টিপাইমুখ বাঁধের ১১ টি গেট খুলে দেয়া হয়েছে। যার ফলেই বন্যার সৃষ্টি হয়েছে সিলেটে। পরে বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখে, ভিডিওর ক্যাপশনে করা দাবিটি সঠিক নয়। মূলত ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে অবস্থিত একটি বাঁধের ভিডিও পোস্ট করে ভারতের টিপাইমুখ বাঁধের গেট খুলে দেয়ার বিভ্রান্তিকর দাবি করা হয়ে সামাজিক মাধ্যমে। প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--

প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে

দুই.

বন্যার পানিতে গবাদিপশু মরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এমন একটি ছবি ছড়িয়ে পরে সামাজিক মাধ্যমে। দাবি করা হয় সিলেটে চলমান বন্যার ছবি এটি। এর প্রেক্ষিতে বুম বাংলাদেশ ছবিটি যাচাই করে দেখে, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের গারোপাহাড়ে সাম্প্রতিক ভূমিধস ও বন্যার সময়কার ছবি এটি। বিভ্রান্তিকরভাবেই একে সিলেটের সাম্প্রতিক বন্যার সাথে মিলিয়ে প্রচার করা হচ্ছিল ফেসবুকে। দেখুন--

প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে

তিন.

বন্যার সময়ে সামাজিক মাধ্যমে সব থেকে প্রচারিত একটি ছবি ছিল পানিতে ভাসমান মৃত এক শিশুর। ছবিটির সাথে মানবিক গল্পও জুড়ে দেয়া হয়। দাবি করা হচ্ছিল অসুস্থ শিশুটিকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন মা। কিন্তু হাসপাতালেও বন্যার পানি ওঠায় শিশুটিকে নিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে নৌকা ডুবে গেলে এভাবেই ভেসে চলে যায় শিশুটি। বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখে ছবিটি সাম্প্রতিক নয় এবং বাংলাদেশেরও নয় বরং নেপালের। ৮ বছর বয়সি কমল সাদা নামে ঐ নেপালি শিশুটির ছবি ২০১৭ সালে বন্যার সময় নরেন্দ্র শ্রেষ্ঠা নামে একজন নেপালি ফটোগ্রাফার ধারণ করেছিলেন। এ নিয়ে ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দেখুন--

প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে

চার.

সামাজিক মাধ্যমে একটি জলাবদ্ধ স্থানে বহু মানুষের ছবি শেয়ার করে দাবি করা হয়, ছবিটি সিলেটে চলমান বন্যার। পরবর্তিতে যাচাই করে বুম বাংলাদেশ নিশ্চিত হয় ছবিটি বাংলাদেশের নয় বরং পাকিস্তানের লাহোর শহরে একটি খালের। সিলেটের সাম্প্রতিক বন্যার সাথে এই ছবির কোনো সম্পর্ক নেই। দেখুন--

প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে

পাচ.

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা কবলিত এলাকা এবং বন্যার্ত মানুষের দুর্দশা সরেজমিন দেখতে সিলেটে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরমধ্যে একটি কোলাজ ছবি ছড়িয়ে পরে যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দুটি আলাদা শাড়ি পরিহিত দেখা যায়। সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত পোস্টে দাবি করা হয় দুটি ছবিই সিলেটে পরিদর্শনের সময়ের। বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখে, দাবিটি বিভ্রান্তিকর। ছবি দুটি ভিন্ন সময়ের। একটি সাম্প্রতিক হলেও অন্যটি ৫ বছর পুরোনো ২০১৭ সালে সুনামগঞ্জ সফরকালের। দেখুন বুম বাংলাদেশের ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন--

প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে

বুম বাংলাদেশ দেখেছে, সাধারণত কোন ঘটনা-দুর্ঘটনা কিংবা ঘটন-অঘটনকে আশ্রয় করেই ছড়িয়ে পড়ে ভুয়া তথ্য কিংবা ভুয়া খবর। তাই সিলেটে বন্যায় সৃষ্ট এ অঞ্চলের মানবিক পরিস্থিতিকে আশ্রয় করেই ছড়িয়ে পড়ে ভুয়া খবর। যেহেতু এই বন্যা মাত্রার দিক থেকে ছিল ভয়াবহ, সেহেতু ভুয়া খবর ছড়িয়ে পড়ার মাত্রাও ছিল বেশি।

Tags:

Fact File

Related Stories