HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইল

সিলেটের রায়হান হত্যা: ময়নাতদন্ত নিয়ে ভুল তথ্য ফেসবুকে

প্রথম ময়নাতদন্তের খবর নিয়ে বিভ্রান্তিকর খবর ছড়িয়েছে ফেসবুক পোস্টে।

By - Qadaruddin Shishir | 21 Oct 2020 11:19 AM GMT

সিলেটের মো. রায়হান আহমদের (৩৪) পুলিশের হেফাজতে মৃত্যু নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে কিছু পোস্টে  যেখানে দাবি করা হয়, রায়হানের প্রথম ময়নাতদন্তে কোন আঘাতের চিহ্ন পায়নি সংশ্লিষ্টরা। এ সংক্রান্ত কিছু পোস্ট ফেসবুকে দেখা যাচ্ছে। দেখুন এখানে, এখানে। 

তবে এ ব্যাপারে সর্বপ্রথম নিজের ভেরিফায়েড প্রোফাইলে পোস্ট করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল। যদিও তার প্রোফাইলে উক্ত পোস্টটি এখন পাওয়া না গেলেও দৈনিক নয়াদিগন্তের একটি খবরে তার পোস্টটি উৎস-সহ হুবহু তুলে দেয়া হয়। কিন্তু সেটিও নয়াদিগন্ত পরবর্তীতে সরিয়ে নেয়। অনলাইন সংবাদ মাধ্যম পূর্বপশ্চিমবিডিও আসিফ নজরুলের স্ট্যাটাস নিয়ে খবর প্রকাশ করে। দেখুন এখানে। আর্কাইভ করা আছে এখানে।  

এরকম আরেকটি পোস্ট দেখা যায়, 'বিয়ানী বাজার বড়লেখার বার্তা' নামক একটি ফেসবুক প্রোফাইল থেকে। আর্কাইভ লিংক এখানে। 


উক্ত পোস্টে দাবিকৃত অংশের প্রথম ভাগে বলা হয়, 'সিলেটে রায়হান মারা গেছে ফাঁড়িতে, পুলিশের পিটুনিতে। অথচ প্রথমবার ময়নাতদন্তে ডাক্তার আঘাতের কোনো চিহ্ন পায়নি। ২য় ময়নাতদন্তে ডাক্তার পেয়েছে শতাধিক আঘাতের চিহ্ন।'

অর্থাৎ দাবি করা হচ্ছে, রায়হানের প্রথম ময়নাতদন্ত যেটি সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে সম্পন্ন হয়েছে সেটিতে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। 

মূলধারার খবরের মাধ্যমে জানা যায়, ১১ অক্টোবর ভোরে সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ধরে আনার পর মৃত রায়হানের প্রথম ময়নাতদন্ত হয় একই দিন দুপুর একটার দিকে। তার চারদিন পর ১৫ অক্টোবর পিবিআই তার লাশ দ্বিতীয়বার উত্তোলন করে পূনঃময়নাতদন্ত করে।

প্রথম ময়নাতদন্তে কী আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি?

এ ব্যাপারে মূলধারার খবরমাধ্যমে প্রকাশিত খবরগুলোতে দেখা যায়, ১৮ অক্টোবর 'ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টঃ রায়হানের শরীরে ৯৭টি আঘাতের চিহ্ন' শিরোনামে যুগান্তরের একটি খবরে বলা হয়,

"৬টা ৪০ মিনিটে ভর্তি করা হয় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে তিনি মারা যান। ওই হাসপাতালেই বেলা ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ১৫ অক্টোবর সেই ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়, রায়হানের মৃত্যুর ২ থেকে ৪ ঘণ্টা আগে তার ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। সে হিসেবে ফাঁড়িতে আনার পর থেকেই তার ওপর নির্যাতন চলে।"

অর্থাৎ রায়হানের মৃত্যু-পরবর্তী প্রথম ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টটি সিলেট ওসমানী মেডিকেল থেকে পিবিআই এর কাছে হস্তান্তর করা হয় যেখানে রায়হানের আঘাত ও নির্যাতনের ব্যাপারে উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া বাংলা ট্রিবিউনের আরেকটি রিপোর্টেও প্রথম দফার ময়নাতদন্তে রায়হানের শরীরে আঘাতের চিহ্নের ব্যাপারে নিশ্চিত করেন ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শামসুল ইসলাম। বলা হয়, "সিলেটে পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়া রায়হান উদ্দিনের প্রথম দফার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পিবিআইকে হস্তান্তর করেছে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ। রিপোর্টে রায়হানের শরীরে ১১৩টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। লাঠির আঘাতের কারণে চামড়া ছিলে যাওয়ার ১৪টি জখম পাওয়া গেছে। তার দুটি আঙুলের নখ উপড়ে ফেলাসহ পুরো শরীরে শুধু লাঠির আঘাত রয়েছে ১১১টি। নির্যাতনের সময় রায়হানের পাকস্থলীও খালি ছিল"।  

এবং সময় টিভির একটি খবরে বলা হয়, "ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতেই সিলেটের রায়হান আহমেদের মৃত্যু হয়। প্রথম ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে।"

অর্থাৎ রায়হানের প্রথম ময়নাতদন্তে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে চিকিৎসকের গণমাধ্যমগুলোতে দাবি করা হয়েছে।

দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত'র ব্যাপারে যা জানা যায়:

মূলত ১২ অক্টোবর রায়হানের স্ত্রীর করা মামলার প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য ১৫ অক্টোবর রায়হানের লাশ তোলা হয়। একইদিনে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক শামসুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বোর্ড উক্ত ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন।

প্রথম আলোর ১৭ অক্টোবরের এক খবরে বলা হয়, দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের একটি রিপোর্ট পিবিআইকে দিয়েছে উক্ত তিন সদস্যের মেডিকেল টিম। এছাড়া আরো দাবি করা হয় উক্ত দ্বিতীয় রিপোর্টে রায়হানের "শরীরে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৪টি আঘাতে গুরুতর জখম হয়। বাকি ৯৭টি আঘাত ফোলা জখম।"

এছাড়া জাগো নিউজের একইদিনে "দ্বিতীয় ময়নাতদন্তে রায়হানের দেহে মিলল ১১১টি আঘাতের চিহ্ন" শিরোনামের একটি খবরে বলা হয়, "সিলেট নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত যুবক রায়হান উদ্দিনের (৩৫) মরদেহ দ্বিতীয়বারের মতো ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। এ তদন্তের প্রতিবেদনে তার শরীরে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এরমধ্যে ১৪টি আঘাতের জখম ছিল গুরুতর।"

অর্থাৎ, প্রথম ময়নাতদন্ত যেটির প্রাথমিক রিপোর্ট ১৫ অক্টোবর পিবিআই এর কাছে হস্তান্তর করা হয় সেখানে আঘাতের চিহ্ন প্রাপ্তির কথা নিশ্চিত করা হয় একাধিক গণমাধ্যমে। একইভাবে ১৭ অক্টোবর দ্বিতীয় দফার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেশ করা হয় পিআইবিতে। উক্ত রিপোর্টেও শতাধিক আঘাতের কথা উঠে আসে মূলধারার খবরমাধ্যমে।

তাই উক্ত পোস্টগুলোতে দাবি করা 'প্রথমবার ময়নাতদন্তে ডাক্তার আঘাতের কোনো চিহ্ন পায়নি' বক্তব্যটি সঠিক নয়।

Related Stories