HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইল

গুলশানে তরুণীর 'আত্মহত্যা'র ঘটনা মিডিয়া যেভাবে দেখাচ্ছে

এই প্রতিবেদনে দেখার চেষ্টা করা হয়েছে ঘটনাটি বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম কিভাবে কভার করেছে

By - Minhaj Aman | 27 April 2021 10:00 AM GMT

আজ ২৭ এপ্রিল দ্য ডেইলি স্টারের বাংলা ভার্সনে একটি খবর প্রকাশিত হয় যার শিরোনাম, "গুলশানে ফ্ল্যাট থেকে কলেজ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার"

খবরটির ভেতরে বলা হয়েছে, 'রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে এক কলেজ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে 'আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া'র মামলা দায়ের করা হয়েছে।' দেখুন খবরটির স্ক্রিনশট--

খবরটি পড়ুন এখানে। 

খবরটিতে ঘটনার বর্ণনা করতে গিয়ে মৃত তরুণীটির পরিচয় প্রকাশ করেনি। প্রতিবেদনের নিচে একটি ডিসক্লেইমারে বলা হয়েছে, "দ্য ডেইলি স্টারের নীতিমালা অনুযায়ী এই প্রতিবেদনে ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।"

পত্রিকাটির ওয়েসাইটের ইংরেজি ভার্সনে 'College student's body recovered from Dhaka flat; Bashundhara MD sued for abetting suicide' খবরটির নিচেও একইভাবে উল্লেখ করা হয়, "Identity of the victim is held back as part of our policy for reporting on suicide and sexual offence." অর্থাৎ আত্মহত্যা বা যৌন হয়রানি সংক্রান্ত খবরের ক্ষেত্রে ডেইলি স্টার নীতিগতভাবে 'ভিক্টিম' এর পরিচয় প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকে।

দেখুন দ্য ডেইলি স্টারের বাংলা ও ইংরেজি ভাষার প্রতিবেদন দুটি দেখুন এখানেএখানে

কিন্তু ঘটনার পর ডেইলি স্টার প্রথম যে রিপোর্ট প্রকাশ করে (বাংলা ভার্সনে) সেই রিপোর্টে পত্রিকাটি মৃত তরুণী ও তার বোনের নাম পরিচয় প্রকাশ করেছিল। এবং তখন "দ্য ডেইলি স্টারের নীতিমালা অনুযায়ী এই প্রতিবেদনে ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি"- এমন কোনো ডিসক্লেইমারও দেয়া ছিলো না প্রতিবেদনের শেষে। দেখুন নিচের স্ক্রিনশটটি--


ডেইলি স্টার এর প্রতিবেদনের এই ভার্সনটি আর্কাইভ করা আছে এখানে। এই প্রতিবেদনটিই পরে আপডেট করে মৃতের নাম পরিচয় ও তার বোনের নাম পরিচয় বাদ দেয়া হয় এবং ডিসক্লেইমার যুক্ত করা হয়।

ডেইলি স্টারের মতো বিবিসি বাংলার এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনটিতেও মৃত তরুণীর পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে এবং এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার একমাত্র আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে।


দেখুন বিবিসির প্রতিবেদনটি এখানে।  

ডেইলি স্টার তাদের আপডেট করা প্রতিবেদনে এবং বিবিসি বাংলা তাদের প্রতিবেদনে মৃত তরুণীর নাম পরিচয় 'নীতিগত কারণে' প্রকাশ না করলেও বাংলাদেশের শীর্ষ স্থানীয় অন্যান্য প্রায় সব সংবাদমাধ্যম অনুসরণ করেছে ভিন্ন আরেক 'নীতি'। এই 'নীতি' অনুসারে এসব সংবাদমাধ্যম তাদের প্রাথমিক রিপোর্টিংয়ে মৃতের, যাকে ডেইলি স্টার তাদের আপডেটেড প্রতিবেদনে 'ভিকটিম' হিসেবে দেখছে, তার নাম পরিচয় এমনকি ছবিও প্রকাশ করেছে কিন্তু মামলার আসামির নাম পরিচয় তাদের জানা থাকা সত্ত্বেও প্রকাশ করা থেকে বিরত থেকেছে।

যেমন প্রথম আলোর এ সংক্রান্ত প্রথম প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে

প্রথম আলো এই প্রতিবেদনে মৃত তরুণীর ছবি, নাম, ঠিকানা প্রকাশ করেছে। কিন্তু মামলার আসামির নাম পরিচয় প্রকাশ না করে লিখেছে, "দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক"।

একইভাবে বাংলা ট্রিবিউনেও এই খবরটি প্রকাশিত হয় যার শিরোনাম ছিল, 'গুলশানে তরুণীর লাশ উদ্ধার'। প্রতিবেদনটিতে মৃত তরুণীটির নাম-বয়স ছাড়াও  পিতার নাম, স্থায়ী ঠিকানাসহ তার একটি ছবিও প্রকাশ করে বাংলা ট্রিবিউন। মৃত্যুর কারণ হিসেবে খবরটিতে আত্মহত্যা বলা হয় এবং সেখানে পুলিশের বরাতে 'আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলাও (নং ২৭) হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু মামলাটিতে কাকে আসামি করা হয়েছে তার কোনো নাম পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। 

দেখুন বাংলা ট্রিবিউনে প্রকাশিত প্রথম প্রতিবেদনটির আর্কাইভ ভার্সন দেখা যাবে এখানে

 দৈনিক যুগান্তরেও এ ঘটনায় মামলা হবে বলে খবর করা হয়। মৃত তরুণীর ছবিসহ তার সম্পর্কিত তথ্য বিস্তারিত উল্লেখ করে একজন 'ছেলে'র সাথে তার পরিচয়ের কথা বলা হলেও সেই 'ছেলে'টির কোনো পরিচয় প্রতিবেদনে নেই। যুগান্তরের খবরটি পড়তে ক্লিক করুন এখানে।  

একইভাবে সময় টিভি অনলাইন এবং জাগো নিউজ ২৪- এ উক্ত ঘটনায় মৃত তরুণীর ব্যাপারে ছবিসহ বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়। এসব প্রতিবেদনেও একটি মামলার রুজু হওয়ার কথা বলা হলেও অভিযুক্ত ব্যক্তির ব্যাপারে তেমন কোনো তথ্যই প্রকাশ করা হয়নি। এমনকি সময় টিভির 'অভিজাত ফ্ল্যাটে তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ, যাতায়াত ছিলো এক শিল্পপতির' শিরোনামেই 'শিল্পপতি' এর উল্লেখ থাকলেও সে ব্যাপারে কোনো বিস্তারিত তথ্য ছিলো না।

এরকম আরো কিছু রিপোর্ট দেখুন যেখানে মৃত নারীর ছবি এবং নাম পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে কিন্তু এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আসামিকে চেনা যাবে এমন কোনো পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি (কোথাও 'ব্যবসায়ী', কোথাও 'শিল্পপতি' আবার কোথাও 'একটি শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক' ইত্যাদি অস্পষ্ট শব্দ বা শব্দগুচ্ছে আসামির পরিচয় দেয়া হয়েছে)--

ঢাকা ট্রিবিউন- গুলশানে অভিজাত ফ্ল্যাটে মিললো তরুণীর লাশ

সমকাল- গুলশানের ফ্ল্যাট থেকে কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

নিউ এইজ- Body of 'businessman's girlfriend' found in flat

আমাদের সময়- গুলশানের ফ্ল্যাট থেকে তরুণীর লাশ উদ্ধার, ফ্ল্যাটে তিনি একাই থাকতেন

ইত্তেফাক- গুলশানের ফ্ল্যাট থেকে তরুণীর লাশ উদ্ধার

ডয়েচে ভেলে- রাজধানী গুলশানের ফ্ল্যাট থেকে তরুণীর লাশ উদ্ধার

বিডিনিউজ২৪- গুলশানের ফ্ল্যাট থেকে তরুণীর লাশ উদ্ধার

মানবজমিন- কী ঝামেলায় পড়েছিল মেয়েটি, নানা রহস্য

বণিকবার্তা- গুলশানের ফ্ল্যাট থেকে তরুণীর মরদেহ উদ্ধার

আর টিভি- শিল্পপতির ছবি ফেসবুকে আপলোড করাই কাল হলো মেয়েটির (ভিডিও)

ডিবিসি- তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, শিল্পপতির বিরুদ্ধে মামলা

আবার কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রথমে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশের পর তা সরিয়ে নেয়া হয়। এদের মধ্যে আছে, দৈনিক কালের কন্ঠ, ঢাকা পোস্ট এবং সারা বাংলা অনলাইন। তাদের সরিয়ে নেয়া খবরগুলোর ক্যাশে/আর্কাইভ ভার্সনগুলো দেখুন নিচে-

কালের কন্ঠ- গুলশানের ফ্ল্যাটে মিলল তরুণীর ঝুলন্ত লাশ

ঢাকা পোস্ট- গুলশানে ফ্ল্যাট থেকে তরুণীর মরদেহ উদ্ধার

সারা বাংলা অনলাইন- গুলশানের ফ্ল্যাট থেকে কলেজ শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার


বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন ৫টি সংবাদমাধ্যমে মধ্যে একটিতে (কালের কণ্ঠ) এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশের পর ডিলিট করা হয়েছে। মূলত জাগো নিউজের প্রতিবেদনকে হুবহু কপি করে প্রকাশ করা হয়েছিল মঙ্গলবার ভোরে। পরে সেটি সরিয়ে দেয়া হয়। গ্রুপের মালিকানাধীন অন্য চার পত্রিকা- বাংলাদেশ প্রতিদিন, বাংলানিউজ, ডেইলি সান ও নিউজ টোয়েন্টি ফোর-এ ঘটনা সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

প্রথম আলোসহ একাধিক সংবাদমাধ্যম তাদের পরবর্তী প্রতিবেদনগুলোতে মামলার আসামির নাম পরিচয় প্রকাশ করেছে। তবে মৃত তরুণীর ছবিসহ নাম-পরিচয়ও আগের এবং নতুন প্রতিবেদনগুলোতে তখনও বিদ্যমান রয়েছে। এরকম কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

কিছু সংবাদমাধ্যমের কভারেজে মুনিয়াকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরার প্রবণতা লক্ষ্যণীয় ছিলো। যেমন সময় টিভি তাদের অনলাইনে মৃত তরুণীকে নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেগুলো হলো-

লাখ টাকার ভাড়া ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন তরুণী

'উনি আমাকে বিয়ে করবেন না'

মুনিয়ার মৃত্যু: অডিও ক্লিপ ভাইরাল

অভিনেতা বাপ্পীর সঙ্গে গভীর প্রেম ছিল মুনিয়ার

মুনিয়ার মৃত্যু: ৫০ লাখ টাকার রহস্য কী?

এছাড়া সময় টিভির সরিয়ে নেয়া দুটি খবরের স্ক্রিনশট--


এরকম একটি পোস্ট আর্কাইভ করা আছে এখানে। 

Related Stories