HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্য

করোনাভাইরাস সংক্রান্ত এই 'অ্যাডভাইজারি' ইউনিসেফের নয়

বুম অনুসন্ধান করে দেখেছে ইউনিসেফ এই 'অ্যাডভাইজারি' প্রকাশ করেনি এবং বার্তাটির বেশির ভাগ দাবির কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

By - Qadaruddin Shishir | 20 March 2020 7:18 AM GMT

একটি ভাইরাল হওয়া মেসেজে করোনাভাইরাসের সঙ্গে সম্পর্কহীন নানা তথ্য দেওয়া হয়েছে এবং ভুয়ো দাবি করা হয়েছে যে এই সব তথ্য রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থা ইউনাইটেড নেশনস ইন্টারন্যাশনাল চিল্ড্রেনস এমার্জেন্সি ফান্ড বা ইউনিসেফের তরফ থেকে দেওয়া হয়েছে। ইউনিসেফ এ রকম কোনও 'অ্যাডভাইজারি' প্রকাশ করেনি। তা ছাড়া এই মেসেজে যে সব তথ্য দেওয়া হয়েছে, তার বেশির ভাগেরই কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মেসেজটি ছড়িয়ে পড়েছে এবং দুনিয়াজুড়ে এটি শেয়ার করা হয়েছে। কোভিড-১৯ ভাইরাসকে প্রতিরোধ করার জন্য আটটি দাবি করা হয়েছে। এতে আরও দাবি করা হয়েছে যে এই সব উপদেশ মানলে এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।



লেখা এবং ছবি, দু'ধরণেই হোয়্যাটসঅ্যাপে এই মেসেজটি ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। বুম তার হোয়্যাটসঅ্যাপ হেল্পলাইনে (+৯১৭৭০০৯০৬১১১) অনেক বার এই ছবি এবং মেসেজ পেয়েছে।



তথ্য যাচাই:

এই ভাইরাল হওয়া মেসেজে আটটি দাবি করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে এগুলি ইউনিসেফের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে।

বুম অনুসন্ধান করে দেখেছে ইউনিসেফের সোশ্যাল মিডিয়া বা তার ওয়েবসাইটে এ রকম কোনও 'অ্যাডভাইজারি' দেওয়া হয়নি।

আফ্রিকার আফ্রিকা চেক জানিয়েছে যে আফিকা মহাদেশেও এই মেসেজটি ছড়িয়ে পড়েছে এবং তারা ইউনিসেফের এক মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানিয়েছেন যে ইউনিসেফ এরকম কোনো মন্তব্য করেনি। ইউনিসেফের এক মুখপাত্র জিওফ্রে নককু আফ্রিকা চেককে জানিয়েছেন, "এই দাবিগুলি ইউনিসেফের নয়।"

২০২০ সালের ৬ মার্চ ইউনিসেফ একটি প্রেস রিলিজ প্রকাশ করে সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করে যে তাঁরা যেন কোনও তথ্য পেলে তা সেই মেসেজে উল্লিখিত তথ্যসূত্র থেকে যাচাই করে নেন, কোনও মিথ্যা বার্তায় বিশ্বাস না করেন।


যাইহোক এই মেসেজটি ইউনিসেফের বলে দাবি করে অথবা সেই দাবি ছাড়াই চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে।

এই দাবিগুলির কয়েকটার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি তথ্যের বুম আগেই সত্যতা যাচাই করেছে।

এই দাবিগুলি সম্বন্ধে সত্যি তথ্যগুলি হল:

১. করোনাভাইরাস আয়তনে যথেষ্ট বড়। তার কোষের ব্যাস ৪০০-৫০০ মাইক্রো, কাজেই যে কোনও মাস্কই এই ভাইরাসকে আটকাতে পারবে। অতএব, বিশেষ মাস্ক কেনার কোনও প্রয়োজন নেই।

রেটিং: বিভ্রান্তিকর

তথ্য: করোনাভাইরাস কোনও একটি কোষ নয়, বরং একটি সংক্রমক এজেন্ট, যা কোনও জৈব কোষের সংখ্যা অতি দ্রুত বৃদ্ধি করে। এই ভাইরাসটির আয়তন ঠিক ভাবে জানার জন্য এখনও গবেষণা চলছে।

তা ছাড়াও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, শুধুমাত্র অসুস্থ ব্যক্তিদেরই মাস্ক পরা উচিত, সুস্থদের নয়। ফেসমাস্ক পরলে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো যাবে, এমন কোনও প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। মাস্ক পরলে সংক্রমিত ব্যক্তির থেকে সুস্থ মানুষের মধ্যে ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা কমে। অনেকেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য প্রচুর পরিমাণে মাস্ক কিনে বাড়িতে জমাচ্ছেন, তার ফলে বাজারে এই মাস্কের ঘাটতি দেখা দিয়েছে, এবং সাধারণ মানুষের মনেও এই বিষয়ে ভীতির সঞ্চার হয়েছে।

২. এই ভাইরাস বাতাসে থাকে না, বরং মাটিতে থাকে। কাজেই এই ভাইরাস বায়ুবাহিত নয়।

রেটিং: আংশিক ভাবে সত্য/ আংশিক ভাবে মিথ্যা

করোনাভাইরাস বায়ুবাহিত নয়, এই দাবিটি এখনও অবধি প্রমাণিত হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে যে এই ভাইরাস ড্রপলেটের মাধ্যমে ছড়ায়। অসুস্থ মানুষের হাঁচি বা নিঃশ্বাসের সঙ্গে যে ড্রপলেট তার নাক-মুখ থেকে বেরোয়, এই ভাইরাস তাতে ছড়াচ্ছে। এই ড্রপলেট কাছাকাছি থাকা বিভিন্ন জিনিসের ওপর পড়ে। কোনও সুস্থ মানুষ সেই সব জিনিসে হাত দিয়ে তার পর নিজের চোখ, নাক বা মুখে হাত দিলে তিনিও সংক্রমিত হন। কোভিড-১৯ আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির হাঁচি বা নিঃশ্বাস থেকে বেরোনো ড্রপলেট যদি কোনও সুস্থ লোক নিঃশ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করেন, তবে তিনিও কোভিড-১৯ আক্রান্ত হতে পারেন। এই কারণেই যে কোনও অসুস্থ ব্যক্তির সঙ্গে অন্তত এক মিটার বা তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি।

হাওয়ায় ড্রপলেটের উপস্থিতি আছে, এবং কোনও ব্যক্তি যদি কোনও সংক্রমিত ব্যক্তির খুব কাছাকাছি চলে আসেন, তবে তিনিও কোভিড-১৯ পজিটিভ হবেন, সেই সম্ভাবনা রয়েছে।

৩. কোনও ধাতব বস্তুর ওপর করোনভাইরাস ১২ ঘণ্টা অবধি বেঁচে থাকতে পারে। কাজেই, সাবান আর জল দিয়ে হাত ধুলেই চলবে।

রেটিং: আংশিক ভাবে সত্য/ আংশিক ভাবে মিথ্যা

তথ্য: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের কোভিড-১৯ বিষয়ক প্রশ্নোত্তর অংশে এই দাবিটি সম্বন্ধে লিখেছে যে এখনও নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি কোভিড-১৯-এর পিছনে থাকা করোনাভাইরাস কোনও বস্তুর ওপর কত ক্ষণ জীবিত থাকতে পারে। কিন্তু অনুমান করা হচ্ছে যে এটির ধর্মও অন্যান্য করোনাভাইরাসের মতো। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে, হরক রকমের করোনাভাইরাস বিভিন্ন বস্তুর ওপর কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন অবধি বেঁচে থাকতে পারে। এই তথ্যের মধ্যে নভেল করোনাভাইরাস বিষয়ে গবেষণার প্রাথমিক তথ্যও রয়েছে।

বিভিন্ন প্রাকৃতিক অবস্থার কারণে (যার মধ্যে বস্তুটির ধরন, তাপমাত্রা, আপেক্ষিক আর্দ্রতা ইত্যাদি রয়েছে) করোনাভাইরাসের আয়ুর তারতম্য হয়। যদি মনে হয় কোনও জিনিসের ওপর সংক্রমণ ছড়িয়েছে, তা হলে সেটিকে সাধারণ ডিসইনফেক্ট্যান্ট দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। নিজেও নিরাপদ থাকুন, অন্যদেরও নিরাপদ রাখুন। অ্যালকোহল-বেসড হ্যান্ড রাব বা জল ও সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন। চোখে, নাকে, মুখে হাত দেবেন না। কাজেই, যদিও এই কথাটির কোনও প্রমাণ মেলেনি যে করোনাভাইরাস কোনও জিনিসের ওপর ১২ ঘণ্টা বেঁচে থাকতে পারে, কিন্তু সংক্রমিত জিনিসপত্র ডিসইনফেক্ট্যান্ট দিয়ে পরিষ্কার করা, নিয়মিত হাত ধোয়া ইত্যাদি সংক্রমণকে দূরে রাখতে পারে বলেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মত।

৪. জামাকাপড়ের ওপর করোনাভাইরাস ৯ ঘণ্টা বাঁচতে পারে। কাজেই জামাকাপড় কেচে নিলে অথবা দু'ঘণ্টা সূর্যের আলোয় রাখলেই তা ভাইরাস মারার জন্য যথেষ্ট।

রেটিং: বিভ্রান্তিকর

তথ্য: সূর্যের আলোয় দিলেই এই ভাইরাস মারা পড়বে, এমন দাবির পক্ষে কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। বিভিন্ন তলের ওপর জীবাণুর আয়ু বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যা বলেছে, সে কথাই ফের মনে করিয়ে দিয়ে বলা প্রয়োজন যে করোনাভাইরাসের এই নতুন রূপটি নিয়ে গবেষণা চলছে। কাজেই, ভাইরাসের আয়ু এত ক্ষণ, এমন কোনও বার্তা প্রচার করা এই অবস্থায় অত্যন্ত বিপজ্জনক।

৫. ভাইরাসটি হাতে মাত্র ১০ মিনিট বাঁচতে পারে। কাজেই, তার থেকে নিরাপত্তার জন্য পকেটে অ্যালকোহল স্যানিটাইজার রাখলেই যথেষ্ট।

রেটিং: আংশিক ভাবে সত্য/ আংশিক ভাবে মিথ্যা

তথ্য: ভাইরাসটির আয়ু কত ক্ষণ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানায়নি। কিন্তু, সেই ভাইরাস প্রতিরোধে স্যানিটাইজার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে। অ্যালকোহল-বেসড স্যানিটাইজার ব্যবহার করলে হাত তাড়াতাড়ি শুকোয়। বেশির ভাব বিজ্ঞানীই বলছেন, ঘন ঘন স্যানিটাইজার ব্যবহারের বদলে সাবান আর জল দিয়ে হাত ধোয়া ভাল।

৬. করোনাভাইরাসকে ২৬-২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখলে তা মরে যাবে। এই ভাইরাস উষ্ণ এলাকায় বাঁচে না। তা ছাড়াও গরম জল খেলে আর সূর্যের আলোয় থাকলেই যথেষ্ট।

রেটিং: আরও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ প্রয়োজন

তথ্য: অন্যান্য এনভেলপড ভাইরাসের মতোই করোনাভাইরাসও উচ্চ তাপমাত্রায় দ্রুত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। কিন্তু ঠিক কোন তাপমাত্রায় তা ঘটে, তা এখনও জানা যায়নি। সাধারণত যে সব ভাইরাসের কারণে সর্দিকাশি বা ফ্লু হয়, সেগুলি অপেক্ষাকৃত কম তাপমাত্রা থাকাকালীন সক্রিয় হয়। কিন্তু তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেগুলি সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয় না।

৭. আইসক্রিম বা ঠান্ডা খাবারের থেকে দূরে থাকা জরুরি ।

রেটিং: মিথ্যা

তথ্য: গরম জল খেলে, সূর্যের আলোয় থাকলে বা "আইসক্রিম থেকে দূর্ থাকলে" সংক্রমণ এড়ানো যায়, এমন দাবির সপক্ষে আমরা কোনও তথ্যপ্রমাণ পাইনি। বুম এর আগেও এই দাবিটিকে মিথ্যা প্রমাণ করেছে।

৮. গরম নুনজলে কুলকুচি করলে জীবাণু গলাতেই মারা যায়, ফলে তা ফুসফুসে পৌঁছোতে পারে না।

রেটিং: অস্পষ্ট

তথ্য: সাধারণ সর্দিকাশির ক্ষেত্রে গরম নুনজলে কুলকুচি করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এর সঙ্গে আলাদা করে কোভিড-১৯এর কোনও সম্পর্ক নেই।


--এই রিপোর্টটি প্রথমে BoomBangla-তে প্রকাশিত হয়েছে।

Related Stories