সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে একটি হামলার ঘটনার ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকদের ওপর ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা হামলা করে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৪ ডিসেম্বর ‘Faceless Democracy - মুখহীন গণতন্ত্র’ নামক একটি পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, “বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সাদেক কাইয়ুম কে সাংবাদিকরা রা'জাকার,আল বদর,আল শামসদের বিষয়ে জানতে চেয়ে প্রশ্ন করলে।শি'বিরের প্র'শিক্ষিত ক্যাডাররা সাংবাদিক এর উপর নেক্কারজনক হা'মলা চালায়। তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে আলোচ্য ভিডিওটি সাংবাদিকদের ওপর ছাত্রশিবিরের হামলার কোনো ঘটনার নয়। বরং এটি গত ১৪ ডিসেম্বর ঢাকার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকদের ওপর স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েকজন কর্মী-সমর্থকদের হামলার ঘটনার দৃশ্য।
সংশ্লিষ্ট কি ওয়ার্ড সার্চ করে “বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকদের ওপর হা’মলা চালালো স্বেচ্ছাসেবক দল” শিরোনামে ‘দৈনিক যুগান্তর’ এর ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত ভিডিওর সঙ্গে ফেসবুকে আলোচ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালালো স্বেচ্ছাসেবক দল। ভিডিওটি দেখুন--
কি ওয়ার্ড সার্চ করে “বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকের ওপর হামলা-ক্যামেরা ভাঙচুর, আহত ৫” শিরোনামে ‘যুগান্তর’ এর ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে উক্ত ঘটনার বিবরণে বলা হয়, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকদের ওপর বর্বর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার সকাল আনুমানিক ৯টা ৪০ মিনিটে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দেওয়ার সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েকজন কর্মী–সমর্থক এই হামলা চালায়। এতে অন্তত ৫ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। হামলার ঘটনায় উপস্থিত সাংবাদিকরা বাকরুদ্ধ ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। স্ক্রিনশট দেখুন--
কি ওয়ার্ড সার্চ করে, হামলার ঘটনায় ‘ডিজিটাল রিপোর্টার্স ফোরাম’ এবং ‘মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন’ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয়।
অর্থাৎ আলোচ্য ভিডিওটি সাংবাদিকদের ওপর ছাত্রশিবিরের হামলার ঘটনার ভিডিও নয়; বরং এটি শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকদের ওপর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনার ভিডিও।
সুতরাং সাংবাদিকদের ওপর স্বেচ্ছাসেবক দলের হামলার ভিডিও ছাত্রশিবিরের হামলা বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।




