সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে সম্প্রতি ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত মাইলস্টোন কলেজে যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার পর স্কুল শিক্ষার্থীরা শেখ হাসিনাকে ফেরত আনতে কর্মসূচী করেছে দাবিতে একটি ছবি পোস্ট করা হচ্ছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২২ জুলাই 'শেখ মুজিবুর শৈনিক' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করে উল্লেখ্য করা হয়, “কথা একটাই🤙।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ছবিতে একজন স্কুল শিক্ষার্থীর হাতে একটি প্লেকার্ডে লেখা ‘আমরা শেখ হাসিনাকে চাই’।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ছবিটি বাস্তব নয়। অর্থাৎ ছবিটি উত্তরার মাইলস্টোন কলেজে যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্তের পর স্কুল শিক্ষার্থীদের শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার কোনো কর্মসূচীর দৃশ্য নয় বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।
আলোচ্য ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে গ্রহণযোগ্য কোনো মাধ্যমে দাবি অনুযায়ী ছবিটি বাস্তব হওয়ার বিষয়ে কিংবা ছবির বিষয়েও উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ছবিটিতে স্কুল ড্রেস পরা শিক্ষার্থীদের মুখাবয়ব, হাত ও প্ল্যাকার্ডের লেখা অত্যন্ত নিখুঁত ও ভারসাম্যপূর্ণ, যা বাস্তব ছবিতে কম দেখা যায়। ব্যাকগ্রাউন্ডের ছাত্রদের চেহারা ও ভঙ্গিমা প্রায় একরকম, যা এআই জেনারেটেড ছবির সাধারণ বৈশিষ্ট্য। প্লেকার্ডের লেখা ডিজিটালি বসানো মনে হয়, যা বাস্তবতার সাথে অসামঞ্জস্য। এসব লক্ষণ ছবিটিকে কৃত্রিম বা এআই-জেনারেটেড বলে চিহ্নিত করে।
পাশাপাশি আলোচ্য ছবিটি এআই ব্যবহার করে তৈরি করা ছবির বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়।
পরবর্তীতে, এআই ছবি শনাক্তের টুল 'হাইভ' ব্যবহার করে ছবিগুলো যাচাই করা হয়। টুলটি ছবিটিকে সম্ভাব্য এআই দ্বারা তৈরি ছবি হিসেবে ফলাফল প্রদান করেছে। ছবিটির ফলাফলের স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়া এআই ছবি শনাক্তের আরেক টুল 'সাইট ইঞ্জিন' ব্যবহার করেও ছবিটি যাচাই করা হয়। এই টুলটিও ছবিটিকে সম্ভাব্য এআই দ্বারা তৈরি ছবি হিসেবে ফলাফল প্রদান করেছে। ছবিটির ফলাফলের স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য ছবিটি বাস্তব নয় বরং এটি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ছবিকে স্কুল শিক্ষার্থীরা শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার কর্মসূচীর দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।