HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
ফেক নিউজ

মুসা বিন শমসের কি 'এশিয়ার শ্রেষ্ঠ ধনকুবের'?

ইংরেজি ও বাংলা একাধিক বাংলাদেশি অনলাইন পোর্টালে মুসা বিন শমসেরকে এশিয়ার শ্রেষ্ঠ ধনকুবের বলে ভুয়া দাবী করা হয়েছে।

By - Mazed Mohammad | 30 July 2020 1:23 AM GMT

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ''৮২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মালিক মূসা বিন শমশের এশিয়ার শ্রেষ্ঠ ধনকুবের'' শিরোনামে একটি খবর ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে যা মূলত 'সময়টুডে' নামক একটি পোর্টালে প্রতিবেদন আকারে প্রকাশিত হয়েছে।


সংবাদটি মূলত ঢাকা ভিত্তিক একটি অনলাইন পোর্টালের ইংরেজী একটি প্রতিবেদনের অনুবাদ। এতে বিশিষ্ট অস্ত্র ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরকে ৮২ বিলিয়ন ডলারের মালিক অভিহিত করে তাকে এশিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ ধনী বলে দাবী করা হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে লেখা হয়েছে--
''এদিকে সুইস ব্যাংকের আইন এত কড়া যে কোন কর্মচারী যদি গ্রাহকের গোপনীয়তা ভঙ্গ করে তাকে অনিবার্য ভাবেই জেলে যেতে হবে। মূসা বিন শমশেরের প্রকৃত অর্থের পরিমাণ জানতে সুইজারল্যান্ডে আমরা কয়েক বছর ধরে কাজ করছি। আমরা ভাগ্যবান যে বছর কয়েক আগে আমরা তা উৎঘাটনে সমর্থ হয়েছি। সদ্য মৃত অস্ত্র ব্যবসায়ী আদনান খাসোগীর এক সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে আমরা ড. মূসার প্রকৃত সম্পদের পরিমাণ জানতে পারি। খাসোগীর সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি মূসার মোট সম্পদেও পরিমাণ ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা সুইস ব্যাংকে জব্দ। আদনান খাসোগী বলেন, এটা মূসার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক একটি ষড়যন্ত্র। কাজটা আমাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন ছিল কিন্তু এখন আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি মূসা বিন শমশের এশিয়ার সবচেয়ে বড় ধনকূবের।
আমাদের প্রশ্নের সমাধানটা হয়েছিল ২০১৭ সালে যখন আমরা আদনান খাসোগীর সাক্ষাৎকার নিতে সমর্থ হই। মূসার পার্টনার আদনান খাসোগী আমাদের জানিয়েছিলেন, মূসার নিজস্ব সম্পদের পরিমাণ ৬০ বিলিয়ন ডলার। পরবর্তীতে খাসোগী মারা যান। তিনি তার পার্টনার ড. মূসাকে ২০ বিলিয়ন ইউরো উইল করে যান তার আইনজীবির মাধ্যমে। যে টাকাটা আদনান খাসোগীর কাছে গচ্ছিত ছিল। এখন সব মিলিয়ে মূসার মোট সম্পদের পরিমাণ দাড়ায় ৮২ বিলিয়ন ডলার। সুতরাং এটা বাস্তব সত্য ও প্রমানীত যে, মূসা বিন শমশেরেই এশিয়ার শ্রেষ্ঠ ধনী। শুধু তাই নয় তিনি এখন বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ধনী।''

অন্য আরেকটি পোর্টালে প্রকাশিত একই খবর Prince Dr. Moosa Bin Shamsher নামের একটি ফেসবুক পেইজে শেয়ার করা হয়েছে।


ফ্যাক্ট চেক:

প্রতিবেদনটিতে মূলত: দুটি দাবী করা হয়েছে।

১. মুসা বিন শমসের ৮২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মালিক।

২. তিনি এশিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ ধনী।

প্রথম দাবির বিষয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা যায়, ২০১৫ সালে বাংলাদেশের দুুর্নীতি দমন কমিশনে জমা দেওয়া হিসাবে মুসা দাবি করেন, তার সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১২ বিলিয়ন ইউএস ডলার। এবং দুদককে এটাও জানানো হয় যে, তার এই অর্থের প্রায় পুরোটাই সুইস ব্যাংকে সাময়িকভাবে জব্দ অবস্থায় আছে। 

ইংরেজী দৈনিক নিউ এইজের একটি খবরে দেখা যায়, মুসা বিন শমসের ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রনালয়ের কাছে দেয়া এক চিঠিতে বিদেশ থেকে তার ২০ বিলিয়ন ইউরো দেশে আনার উদ্যোগ গ্রহণের আবেদন করেছেন। যদিও পরে আর এই ব্যাপারে কোনো তথ্য প্রকাশিত হয়নি।

তবে বিখ্যাত মার্কিন বিজনেস সাময়িকী ফোর্বসের শীর্ষ ২০০ ধনীর তালিকায় মুসা বিন শমসেরের নাম পাওয়া যায়নি যেখানে ১১৩ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের মালিক বিশ্বের শীর্ষ ধনী জেফ বেজোস থেকে শুরু করে ৭ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ সম্পদের মালিক জন ডোয়ারের নাম রয়েছে। ফোর্বসের অতীতের কোন তালিকায়ও তার নাম আসেনি। যদিও ফোর্বসের তালিকার বাইরে বিশ্বে অনেক বিলিয়নেয়ার রয়েছেন বলে মনে করা হয়।

ফোর্বসের বাইরেও স্বীকৃত কোনো সংবাদমাধ্যম বা কোনো স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে এমন মুসা বিন শমসেরের মোট সম্পদের পরিমাণ কত তার কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তার সম্পদের পরিমাণ বিষয়ে যেসব অনুমান বিদ্যমান রয়েছে সেগুলো তার নিজের পক্ষ থেকে করা দাবি।

তার নিজের দাবিকেও সঠিক বলে মনে করা হলে মাত্র ৫ বছর আগে শমসেরের সম্পদের পরিমাণ ছিলো ১২ বিলিয়ন ডলার। গত ৫ বছরে সেই সম্পদের সাথে ৭০ বিলিয়ন ডলার নতুনভাবে যুক্ত হয়েছে- এমন কোনো তথ্যও স্বীকৃত কোনো দেশি বা বিদেশি সংবাদমাধ্যমে পাওয়া যায়নি। এবং কোনো উল্লেখযোগ্য ব্যবসার সাথে বর্তমানে জড়িত থেকে এমন পরিমাণ সম্পদ হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া খুবই অস্বাভাবিক বিষয়।

৮২ ডলার সম্পদের মালিক কোনো ব্যক্তি বর্তমান পৃথিবীর ৩য় শীর্ষ ধনকুবের হওয়ার কথা। ২০২০ সালের ফোবর্সের তালিকা অনুযায়ী, ১১৩ বিলিয়ন ডলার নিয়ে জেফ ব্যাজোস বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ধনকুবের, ৯৮ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ নিয়ে ২য় শীর্ষ ধনী হলেন বিল গেটস, আর ৩য় ধনীর সম্পদের পরিমাণ ৭৬ বিলিয়ন ডলার।


অর্থাৎ, শমসেরের সম্পদের পরিমাণ বর্তমানে ৮২ বিলিয়ন ডলার- এই তথ্যটি বানোয়াট।

প্রতিবেদনটির দ্বিতীয় দাবির ব্যাপারে খোঁজ নিলে দেখা যায়, বর্তমানে এশিয়ার শীর্ষ ধনী হলেন ভারতের রিলায়েন্স এর কর্ণধার মুকেশ আম্বানী যিনি ব্লুমবার্গ বিলিওনিয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী সম্প্রতি বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী ব্যাক্তির তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। তার মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলার যা অন্যতম শীর্ষ ধনী ওয়ারেন বাফেটের চেয়েও বেশী।

যদিও ফোর্বসের ২০২০ সালের তালিকায় আম্বানি বিশ্বের ২১ তম শীর্ষ ধর্নী ব্যক্তি যার সম্পদের পরিমাণ ৩৬ বিলিয়ন ডলার। এই তালিকায় চীনের ব্যবসায়ী জ্যাক মা'র চেয়ে পিছিয়ে এশিয়ার ২য় শীর্ষ ধনী ব্যক্তি হিসেবে স্থান পেয়েছেন আম্বানি।

তবে এশিয়ার শীর্ষ ধনী পরিবার হিসেবে ফোবর্সেরই আরেক তালিকায় আম্বানি পরিবারকে এশিয়ার সবচেয়ে ধনী পরিবার হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে ৪৪ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক হিসেবে।

এসব তালিকার কোথাও মুসা বিন শমসেরের নাম নেই।

অর্থাৎ, মুসা বিন শমসের এশিয়ার 'শ্রেষ্ঠ' বা শীর্ষ ধনী- এই তথ্যটিও ভুয়া।

Related Stories