সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে কালবেলার লোগোযুক্ত একটি ফটোকার্ড পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, অস্ত্রসহ দুই শিবির কর্মী আটক হয়েছেন। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে এবং এখানে।
গত ১৩ ডিসেম্বর ‘দশেরলাঠি - Dosherlathi’ নামক একটি পেজ থেকে ফটোকার্ডটি পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, “অস্ত্রসহ দুই শিবির কর্মী আটক।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দৈনিক কালবেলা এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। এমনকি আলোচ্য ফটোকার্ড সম্পর্কিত খবর অন্য সংবাদমাধ্যমেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে কালবেলার সাথে যোগাযোগ করা হলে, গণমাধ্যমটি ফটোকার্ডটিকে ভুয়া বলে চিহ্নিত করেছে।
আলোচ্য ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ লেখা রয়েছে। কি-ওয়ার্ড সার্চ করে দৈনিক কালবেলার ওয়েবসাইট এবং তাদের ফেসবুক পেজে উক্ত তারিখ এবং সাম্প্রতিক তারিখের সংবাদ সন্ধান করে এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে, কি ওয়ার্ড সার্চ করে, একই দিনে অর্থাৎ ১৩ ডিসেম্বর পত্রিকাটির ফেসবুক পেজে একই ধরণের একটি ফটোকার্ড পোস্ট পাওয়া যায়। যেখানে উল্লেখ্য করা হয়, “অস্ত্রসহ দুই সন্ত্রাসী গ্রেফতার”। একই শিরোনামে কালবেলার অনলাইনে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে গ্রেফতারকৃতদের পরিচয় উল্লেখ্য করা থাকলেও তাদের সঙ্গে শিবিরের সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ফটোকার্ডটি দেখুন--
নিচে ফেসবুকে প্রচারিত ভাইরাল ফটোকার্ড (বামে) এবং কালবেলার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ড (ডানে) দুটির মধ্যে পার্থক্য দেখুন পাশাপাশি--
কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ফটোকার্ডে প্রকাশিত তথ্য সম্পর্কিত কোনো প্রতিবেদন ভিন্ন কোনো গণমাধ্যমেও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে, ভাইরাল ফটোকার্ডে যুক্ত করা ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে “বিদেশি রিভলবারসহ লক্ষ্মীপুরে ২ যুবক গ্রেপ্তার” শিরোনামে ‘ঢাকা পোস্ট’ এর ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ১৩ ডিসেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রকাশিত ছবির সঙ্গে ফেসবুকে আলোচ্য দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে লক্ষ্মীপুরে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনী। এ সময় ৫টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১৬টি কার্তুজসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আলাউদ্দিন বশিকপুর ইউনিয়নের বিরাহিমপুর গ্রামের মৃত সুলতান আহমদের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও মাদকসহ বিভিন্ন ঘটনায় অন্তত ১৮টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। অপর গ্রেপ্তারকৃত পারভেজ লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের সমসেরাবাদ এলাকার মৃত সৈয়দ আহমেদের ছেলে। স্ক্রিনশট দেখুন--
আলোচ্য প্রতিবেদনে কোথাও আটককৃতদের সঙ্গে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আলোচ্য ফটোকার্ড সম্পর্কে আরো নিশ্চিত হতে দৈনিক কালবেলার অনলাইন ম্যানেজার মোহাম্মাদ জোবায়ের এই ফটোকার্ডটি ফেক বলে বুম বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছেন।
অর্থাৎ আলোচ্য ফটোকার্ডটি এডিটেড।
সুতরাং কালবেলার এডিটেড ফটোকার্ড দিয়ে অস্ত্রসহ দুই শিবির কর্মী আটক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।




