সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হচ্ছে, রাজধানীর সাভারে সাউন্ডবক্স বাজিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে দলবদ্ধভাবে শ্লীলতাহানির সময়ে ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ৬ ডিসেম্বর '১৯৭১' নামে একটি ফেসবুক পেজে ভিডিওটি শেয়ার করে বলা হয়, "ঢাকার সাভারে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ।নতুন বাংলাদেশ নতুন ইতিহাস। এদের কোন বিচার হবে না কারণ সোনার বাংলাদেশ এখন রাজাকারদের দখলে,,চলছে পাকিস্তানের কায়দায় নির্যাতন,,,এসব খবর মিডিয়া প্রকাশ করছে না।" ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওটি সাভারের কোনো শ্লীলতাহানির ঘটনায় ধারণ করা হয়নি। ভারতীয় কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের অভিনয়ের মাধ্যমে তৈরি করা একটি বিনোদনমূলক ভিডিওকে সাভারে শ্লীলতাহানির ঘটনার ভিডিও বলে দাবি করা হচ্ছে।
ভিডিওটি সম্পর্কে জানতে ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম কেটে নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে 'ajayshing0021' নামে একটি ইন্সটাগ্রাম একাউন্ট থেকে পোস্ট করা আলোচ্য ভিডিওটির মত একটি হুবহু ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ওই পোস্টটিতে আরো দুটি ইন্সটাগ্রাম একাউন্টকে ট্যাগ করতে দেখা যায়। ভিডিওটির নিচের দিকে ভিডিও রেকর্ডকারী ডিভাইসের নাম realme C75 5G লেখা থাকতে দেখা যায়। এছাড়াও, ভিডিওটির ধারণস্থল হিসেব ব্যাঙ্গালোর এবং সময় রাত ৯ টা বেজে ২৪ মিনিট, ১০ আগস্ট, ২০২৫ উল্লেখ থাকতে দেখা যায়। ভিডিওটির শেষদিকে শুয়ে থাকা ব্যক্তিকে উঠে বসতে দেখা যায়। তবে, তাকে নারী নয় বরং তরুণ বলে প্রতীয়মান হয়। ইন্সটাগ্রাম পোস্টটি দেখুন--
পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ওই ইন্সটাগ্রাম একাউন্টের সাথে ট্যাগ করা 'ray______ji_deepak' নামে আরেকটি ইন্সটাগ্রাম একাউন্ট থেকে করা একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। ওই পোস্টে আলোচ্য ভিডিওটির একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে বলা হয়, "ভাই ও বোনেরা, আগে দেখুন এখানে সবাইকে দেখতে কেমন লাগে। মেয়েদের মত দেখলেই কেউ মেয়ে হয়ে যায় না। (অনূদিত)"। ওই ইন্সটাগ্রাম পোস্টটিতে আলোচ্য ভিডিওটিতে শুয়ে থাকা ব্যক্তির মত দেখতে একজনসহ একটি ছবি দেখতে পাওয়া যায়। ইন্সটাগ্রাম পোস্টটি দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। আলোচ্য ভিডিওটি সাভারে নয় বরং ভারতে ধারণ করা হয়েছে। ভারতের কয়েকজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর বিনোদনের উদ্দেশ্যে আলোচ্য ভিডিওটি ধারণ করেন।
সুতরাং ভারতীয় কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের বিনোদনমূলক উদ্দেশ্যে তৈরি করা ভিডিওকে বাংলাদেশের সাভারের নারীর শ্লীলতাহানীর ভিডিও বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে যা বিভ্রান্তিকর।




