HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
ফেক নিউজ

৮ মে 'আসল জন্মদিন' বলে কি স্বীকার করেছেন খালেদা জিয়া?

খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে ১৫ আগস্টকে তার জন্মদিন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ল্যাবএইড হাসপাতালে করা কোভিড টেস্টের রিপোর্টে

By - BOOM FACT Check Team | 10 May 2021 11:35 AM GMT

ফেসবুকে একটি হাসপাতালে করা কোভিড পরীক্ষার ফলাফলের নথির একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। ওই নথিতে দেখা যাচ্ছে, পরীক্ষার ফলাফল এসেছে "Negative"।

Test Report নামের ওই নথিতে রোগীর নাম (Patient Name) এর ঘরে লেখা রয়েছে "BEGUM KHALEDA ZIA".

নথিতে উল্লেখ রয়েছে "Invoice No: V2105006428", "LAB No: 12105297088" এবং "Report No: 12105958358".

এতে আরও দেখা যাচ্ছে, খালেদা জিয়ার বয়স লেখা রয়েছে ৭৫ বছর ((75 Y)।

জন্ম তারিখের ঘরে লেখা রয়েছে, "08 MAY 1946"।

এই নথিটি বেশ কিছু ফেসবুক প্রোফাইল ও পেইজ থেকে পোস্ট করা হয়েছে। Dhaka Television নামে একটি ফেসবুক পেইজে নথির ছবিটি পোস্ট করে ক্যাপশন দেয়া হয়েছে, "মৃত্যু ভয়ে খালেদা জিয়া তার আসল জন্মদিনের কথা স্বীকার করলো! গতকাল খালেদা জিয়ার আসল জন্মদিন ছিলো। তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা রইলো..."।

দেখুন স্ক্রিনশট--



অর্থাৎ, দাবি করা হচ্ছে যে, খালেদা জিয়া বা তার পক্ষ থেকে যারা কোভিড পরীক্ষাটি করার জন্য তার সংক্রান্ত তথ্য ও কাগজপত্র হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সরবরাহ করেছেন সেখানে খালেদা জিয়ার জন্মতারিখ ০৮ মে, ১৯৪৬ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এরকম আরও কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানেএখানে

৯ মে ফেসবুক নথিটি ছড়ানোর পর কয়েকটি সংবাদমাধ্যমেও এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। যেমন-

দৈনিক সমকালের শিরোনাম, "ফের আলোচনায় খালেদা জিয়ার জন্মদিন"

ঢাকা পোস্টের শিরোনাম, "নতুন করে আলোচনায় খালেদা জিয়ার জন্ম তারিখ"

বাংলাদেশ প্রতিদিন: "করোনা পরীক্ষার রিপোর্টে খালেদার জন্মদিন ৮ মে"

একই নথির বরাত দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও ১০ মে সংবাদমাধ্যমের কাছে বক্তব্য দিয়েছেন যে, খালেদা জিয়ার 'আসল জন্মদিন' প্রকাশিত হয়ে পড়েছে। দেখুন কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম:

বাংলানিউজ: 'করোনা রিপোর্টে খালেদার আসল জন্মদিনের তথ্য প্রকাশ পেয়েছে'

জাগোনিউজ: অবশেষে খালেদার সঠিক জন্মদিন প্রকাশ পেল : কাদের

কালের কণ্ঠ: ১৫ আগস্ট নয়, খালেদা জিয়ার জন্মদিন ৮ মে : কাদের

ফ্যাক্ট চেক:

বুম বাংলাদেশ ভাইরাল হওয়া নথিটির সত্যমিথা যাচাই করার চেষ্টা করেছে।

নথিতে দেখা যাচ্ছে, প্রফেসর ডা. এ জে এম জাহিদ হোসেন নামে একজনের রেফারেন্স দেয়া হয়েছে। একই সাথে একটি মোবাইল নম্বরও দেখা যাচ্ছে (০১৭১৩১৯৩৬৯৩)।

বুম বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উক্ত নম্বরে কল করা হলে প্রফেসর ডা. এ জে এম জাহিদ হোসেন তা রিসিভ করেন। জনাব জাহিদ ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর সাবেক মহাপরিচালক। তিনি বর্তমানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এবং খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের সদস্য।

খালেদা জিয়ার কোভিড টেস্টের রিপোর্টে তার জন্মদিন ৮ মে বলে উল্লেখ করা যে নথি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে সেটির ব্যাপারে জানতে চাইলে জনাব জাহিদ জানান, টেস্টের রিপোর্টের মূল হার্ড কপিটি তার কাছে রয়েছে এবং সেখানে খালেদা জিয়ার জন্মদিন লেখা রয়েছে ১৫ আগস্ট, ১৯৪৬ সাল।

তার কাছে থাকা টেস্ট রিপোর্টের মূল কপির একটি ছবিও তুলে পাঠিয়েছেন ডা. জাহিদ হোসেন। ছবিটে দেখুন-


তিনি বলেন, আমরা ৮ মে তার টেস্টের জন্য স্যাম্পল জমা দিয়েছি এবং আমি নিজে সেটির রিপোর্ট সংগ্রহ করেছি। কাগজে প্রিন্ট করা রিপোর্টেও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে খালেদা জিয়ার জন্মদিন ১৫ আগস্ট।

ডা. জাহিদ মনে করেন, কেউ বিতর্ক সৃষ্টির জন্য মূল রিপোর্টের ছবি তুলে এডিট করে তথ্যবিকৃতি ঘটিয়ে থাকতে পারে।

এ বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবিরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "কিছু সংবাদমাধ্যমে খবরটি দেখতে পেয়ে আমরা হাসপাতাল থেকে রিপোর্টের মূল কপি উঠিয়েছি। সেখানে স্পষ্টভাবেই ১৫ আগস্ট ম্যাডামের জন্মদিন হিসেবে উল্লেখ রয়েছে।"

"একজন জাতীয় নেত্রী যখন অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেই সময়ে এমন মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর মত প্রকাশ করা সত্যি দুঃখজনক" বলেছেন জনাব কবির।

বুম বাংলাদেশ ফেসবুকে ছড়ানো নথিটি এবং খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদলের সদস্য ডা. জাহিদ হোসেনের কাছ থেকে প্রাপ্ত মূল টেস্ট রিপোর্টটি মিলিয়ে দেখেছে, উভয় রিপোর্টের ইনভয়েস নম্বর একই (V2105006428)। যদি দুটি রিপোর্টই সত্য হয়ে থাকে তাহলে উভয়ের একই ইনভয়েস নম্বর হওয়ার ‍সুযোগ নেই। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক, যিনি মূল রিপোর্টি হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করেছেন এবং সেটি তার কাছে সংরক্ষিত আছে বলে বুম বাংলাদেশ এর কাছে প্রমাণ সরবরাহ করেছেন, ফলে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, ফেসবুকে ছড়ানো (৮ মে জন্মতারিখ যুক্ত নথিটি) বানোয়াট।

"মৃত্যু ভয়ে খালেদা জিয়া তার আসল জন্মদিনের (৮ মে) কথা স্বীকার করলো!" বলে যে বক্তব্য ফেসবুকে ছড়ানো হয়েছে সেটিও ভুয়া; কারণ খালেদা জিয়ার নিজস্ব চিকিৎসক, যার নাম ভাইরাল হওয়া নথিতেও 'রেফার্ড বাই' হিসেবে লেখা রয়েছে, তার কাছে সংরক্ষিত নথিতে দেখা যাচ্ছে খালেদা জিয়া তার জন্মদিন ১৫ আগস্ট বলেই উল্লেখ করেছেন।

মূল নথিতে দেখা যাচ্ছে, খালেদা জিয়ার টেস্ট করা হয়েছে ঢাকার ল্যাব এইড হাসপাতালে। হাসপাতালটির কাছে সংরক্ষিত ডকুমেন্টে খালেদা জিয়ার জন্মদিন হিসেবে কোন তারিখটির উল্লেখ রয়েছে- ৮ মে, নাকি ১৫ আগস্ট- তা জানতে হাসপাতালটির কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা এই মূহূর্তে কোনো তথ্য জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। হাসপাতালে গিয়ে সরাসরি যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেন।

উপরে উল্লিখিত দৈনিক সমকাল এর "ফের আলোচনায় খালেদা জিয়ার জন্মদিন" শিরোনামের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে, ৮ মে জন্মদিন লেখা নথিটি প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তাদের ফেসবুক পেইজে পোস্ট করেছিলেন।

সমকালের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে--

"প্রধানমন্ত্রীর ছেলে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় রোববার তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে খালেদা জিয়ার করোনা টেস্টের রিপোর্টটি তুলে দিয়েছেন। রিপোর্টের নিচে স্ট্যাটাস আকারে লাল সাদা হরফে একটি লেখাও তুলে ধরেছেন তিনি। যেখানে লেখা রয়েছে, 'মৃত্যুভয়ে খালেদা জিয়া তার আসল জন্মদিনের কথা স্বীকার করলো, খালেদা জিয়ার জন্মদিন ০৮ মে ১৯৪৬।'

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তার ফেসবুকে এক পোস্টে বিএনপিকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে লিখেছেন, 'আমি আওয়ামী লীগ করি। বিষয়টা আমার কাছে যেকোনো সময়, যেকোনো পরিস্থিতিতেই প্রাসঙ্গিক। এখন আপনি (খালেদা জিয়া) বলছেন, ৮ মে'তে আপনি জন্মেছেন। তাহলে আমাদের রক্তক্ষরণ করিয়ে ১৫ আগস্ট যে জন্মদিন নিজে পালন করে এসেছেন, আপনার দলের নেতাকর্মীরা যে পালন করেছে, আমাদের শোককে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, তার জন্য ন্যূনতম ক্ষমা, মানুষ হিসেবে আপনার এবং আপনার দলের নেতাদের চাওয়া উচিত।'


যদিও আজ মে তাদের উভয়ের ফেসবুক পেইজে গিয়ে দেখা গেছে এ ধরনের কোনো পোস্ট নেই। অর্থাৎ, পোস্টগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

Related Stories