সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। এতে তাকে বলতে দেখা যায়, প্রধান বিচারপতি পদত্যাগ করেছেন। পোস্টগুলোতে, বর্তমান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ পদত্যাগ করেছেন (এমন কথা বলেছেন ড. আসিফ নজরুল); হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৩শে মে ‘Parvin Akter’ নামক ইউজারনেম এর একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, “প্রধান বিচারপতি পদত্যাগ করেছেন। টান টান উত্তেজনা চলছে...”। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। ২০২৪ সালে তৎকালীন বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের পদত্যাগের তথ্য সম্বলিত ভিডিও বিভ্রান্তিকরভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে বর্তমান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ পদত্যাগ করেছেন হিসেবে প্রচার করা হয়েছে।
ড. আসিফ নজরুলের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে সম্প্রতি এই সংক্রান্ত কোনো ভিডিও পাওয়া যায়নি। তবে পুরোনো পোস্ট সার্চ করে ২০২৪ সালের ১০ আগস্ট ‘প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। প্রাপ্ত ভিডিওটির সাথে আলোচ্য ভিডিওর হুবহু মিল পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ভিডিওটিতে সেসময়ে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের পদত্যাগের কথা জানিয়েছিলেন ড. আসিফ নজরুল।
পাশাপাশি, কি-ওয়ার্ড সার্চ এর মাধ্যমে দৈনিক প্রথম আলো'র অনলাইন সংস্করণে ২০২৪ সালের ১০ আগস্ট “পদত্যাগ করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান” শিরোনামের প্রতিবেদন পাওয়া যায়। একই সংবাদ সেসময়ে প্রকাশিত প্রায় সবগুলো গণমাধ্যমেই পাওয়া যায়।
প্রথম আলোর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পদত্যাগ করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। ১০ আগস্ট (শনিবার) বেলা আড়াইটার দিকে আইন মন্ত্রণালয়ের সূত্র এ কথা জানিয়েছে। প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পদত্যাগ দাবিতে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বর্ধিত ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়াও বর্তমান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ পদত্যাগ করেছেন এমন কোনো তথ্যও গণমাধ্যমে কিংবা গ্রহণযোগ্য কোনো সূত্রে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ ভিডিওটি ড. আসিফ নজরুল তার ফেসবুক পেজে প্রকাশ করেছিলেন ২০২৪ সালের ১০ আগস্ট। পুরোনো এই ভিডিওর খণ্ডাংশ প্রচার করে সাম্প্রতিক দাবিতে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে ২০২৪ সালে তৎকালীন বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের পদত্যাগের তথ্য সম্বলিত ভিডিও বিভ্রান্তিকরভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে বর্তমান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ পদত্যাগ করেছেন হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।