সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে আগুনে পুড়তে থাকা এক ব্যক্তির ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কে জামায়াত ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা মেরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২৪ মে ‘Tofayel Ahmed’ নামক আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, “কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি কে জামাত শিবির রাজাকারেরা মেরে আগুন দিয়ে দিছে। আইয়া মে জাহেলিয়াত কেও হার মানিয়েছে।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে আলোচ্য ভিডিওটি কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ নেতার গায়ে আগুন লাগানোর দৃশ্যের নয় বরং এটি ২০২৩ সালের মে মাসে মেক্সিকোর এক মাদক পাচারকারী চক্র তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর সদস্যকে পুড়িয়ে মারার দৃশ্যের।
ভাইরাল ভিডিওটির কি ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে “Yeah, Let’s Light This Zeta On Fire” শিরোনামে ‘Borderland Beat’ নামে একটি ওয়েবসাইটে একটি ভিডিওসহ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২৩ সালের ৫ মে প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রকাশিত ভিডিওর সঙ্গে ফেসবুকে আলোচ্য দাবিতে ভাইরাল ভিডিওর হুবহু মিল পাওয়া যায়। স্প্যানিশ ভাষায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে (অনূদিত) বলা হয়, মেক্সিকোর মাদক পাচারকারী চক্র কার্টেল দেল গলফোর সশস্ত্র শাখা গ্রুপো এসকরপিয়নের সদস্যরা অপর চক্র জেতা ভিয়েজা এসকুয়েলা নামের আরেক চক্রের সদস্যকে পুড়িয়ে মেরে ফেলে। স্ক্রিনশট দেখুন--
আলোচ্য তথ্যের ভিত্তিতে কি ওয়ার্ড সার্চ করে “Naked drug cartel captive shrieks in pain as he's burned alive by twisted hitmen” শিরোনামে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদপত্র ‘ডেইলি স্টারের’ ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ৬ মে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে প্রকাশিত ছবির সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওর দৃশ্যের সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, মেক্সিকোর মাদক পাচারকারী চক্র গ্রুপো এসকরপিয়ন ও জেতা ভিয়েজা এসকুয়েলার মধ্যে বিরোধের জের ধরে অপর পক্ষের সদস্যকে পুড়িয়ে মারে। যেখানে কার্টেল দেল গলফো চক্রটি মেক্সিকোর পুরোনো মাদক পাচারকারী চক্রগুলোর মধ্যে একটি। উত্তর-পূর্ব সীমান্তবর্তী রাজ্য তামাউলিপাসে এদের প্রভাব-প্রতিপত্তি রয়েছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়া, কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচ্য দাবির পক্ষে কোনো প্রতিবেদন বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ কুমিল্লায় আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়নি এবং ভিডিওটিও এরকম কোনো ঘটনার নয় বরং এটি মেক্সিকোর ভিন্ন ঘটনার একটি ভিডিও।
সুতরাং মেক্সিকোর ভিডিও দিয়ে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাকে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।