সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কথা বলার একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হচ্ছে, ইতালিতে সফররত অবস্থায় তার উপর আওয়ামী লীগের হামলার পরে ওই বক্তব্য দেন তিনি। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৩ অক্টোবর 'মোঃ সোহেল রানা' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে ভিডিওটি শেয়ার করে বলা হয়, ""ইতালিতে~ইউনূস কে আওয়ামীলীগ আপ্যায়ন করার পরে। ইউনূসের প্রতিক্রিয়া,, বেচারা হতবাক হয়ে গেছে।" ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। গত ২১ জুলাই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস। প্রধান উপদেষ্টার সেই বক্তব্য দেওয়ার ভিডিওকে বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচার করা হচ্ছে।
আলোচ্য ভিডিওটি সম্পর্কে জানতে ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম কেটে নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে গত ২১ জুলাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পরিচালিত ফেসবুক পেজ 'Chief Adviser GOB'-তে পোস্ট করা একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ফেসবুক পোস্টটির ক্যাপশনে লেখা থাকতে দেখা যায়, "মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় শোক জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ভিডিওবার্তা।" ওই ভিডিওটির ১৬ সেকেন্ড থেকে আলোচ্য পোস্টের ভিডিওটির সাথে মিল রয়েছে। ফেসবুক পোস্টটি দেখুন--
আরো সার্চ করে দৈনিক বণিক বার্তার ইউটিউব চ্যানেলে গত ২১ জুলাই "প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় শোক জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ভিডিওবার্তা" শিরোনামেও আলোচ্য ভিডিওটির মত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ইউটিউব ভিডিওটি দেখুন--
পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে জানা যায়, গত ২১ জুলাই রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে একটি প্রশিক্ষণরত যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে আগুন ধরে যায়। ওই ঘটনায় নিহত হন প্রতিষ্ঠানটির শিশুশিক্ষার্থীসহ অন্তত ৩৪ জন।
অর্থাৎ প্রধান উপদেষ্টার কথা বলার আলোচ্য ভিডিওটি তার সাম্প্রতিক ইতালি সফরের সময়কার নয়। আলোচ্য ভিডিওটি গত জুলাই মাসে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের ক্যাম্পাসে প্রশিক্ষণরত যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্টাফদের মৃত্যুর ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য প্রদানের সময়ে ধারণ করা হয়। এছাড়াও, ইতালি সফরকালে প্রধান উপদেষ্টার উপরে কোনো প্রকারের হামলার তথ্য গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সুতরাং ভিন্ন ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য দেওয়ার ভিডিওকে ইতালিতে হামলার শিকার হয়ে দেওয়া বক্তব্য বলে প্রচার করা হচ্ছে যা বিভ্রান্তিকর।




