সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে একজন ব্যক্তি অপর একজন মহিলাকে প্রকাশ্য দিবালোকে নৃশংসভাবে আক্রমণ করার একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, এটি বাংলাদেশের ঘটনা। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে এবং এখানে।
গত ২৬ অক্টোবর ‘বঙ্গবন্ধু গেরিলা বাহিনী’ নামক একটি পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, “বর্তমান সময়ে ডক্টর ইউনুস এর শাসনামূলে মানুষের মধ্য কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। এভাবে একটা স্বাধীন রাষ্ট্র চলতে পারেনা।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে আলোচ্য ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো ঘটনার নয় বরং এটি ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বিজয়পুরা জেলার সিনদাগি শহরের আনন্দ টকিজের কাছে এক ব্যক্তির প্রকাশ্যে দিবালোকে তার স্ত্রীকে দা দিয়ে নৃশংসভাবে আক্রমণ করার ঘটনার দৃশ্য।
ভাইরাল ভিডিওটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে “Man Attacks Wife With Machete in Broad Daylight In Vijayapura, Locals Thrash Him With Stones, Iron Rods” শিরোনামে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ‘Republic’ এর অনলাইনে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। গত ২৪ অক্টোবর প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রকাশিত ছবির সঙ্গে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বিজয়পুরা জেলার সিনদাগি শহরের আনন্দ টকিজের কাছে এক ব্যক্তি প্রকাশ্যে দিনে তার স্ত্রীকে দা দিয়ে নৃশংসভাবে আক্রমণ করার এক চমকপ্রদ ঘটনা সামনে এসেছে। ভয়াবহ এই ঘটনাটি ক্যামেরায় ধরা পড়ে এবং ভিডিওটি ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
আলোচ্য তথ্যের ভিত্তিতে কি ওয়ার্ড সার্চ করে “Vijayapura Man Brutally Assaults Wife With Machete | Sindagi Machete Attack” শিরোনামে ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম ‘NEWS9 Live’ এর ইউটিউব চ্যানেলে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। গত ২৫ অক্টোবর প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রকাশিত ভিডিওর সঙ্গে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, বিজয়পুরা জেলার সিনদাগি শহরে এক ভয়াবহ ঘটনা ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ৬০ বছর বয়সী ইয়ামানাপ্পা মাদার ব্যস্ত সড়কে আনন্দ টকিজের কাছে তার স্ত্রী অনসূয়া মাদারকে দা দিয়ে আক্রমণ করেন। পথচারীরা হতভম্ব হয়ে ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেন, আর নারীটি গুরুতর আহত হন। ইয়ামানাপ্পাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পুলিশ এই নৃশংস হামলার পেছনের কারণ তদন্ত করছে। ভিডিওটি দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো ঘটনার নয়। বরং এটি ভারতের কর্ণাটকে এক ব্যক্তির প্রকাশ্যে দিবালোকে তার স্ত্রীকে নৃশংসভাবে আক্রমণ করার ভিডিও।
সুতরাং ভারতে স্ত্রীকে নৃশংসভাবে আক্রমণ করার ভিডিও দিয়ে ঘটনাটি বাংলাদেশের বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।




