সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের উপর সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৬ এপ্রিল ‘আওয়ামি লীগের রিজার্ভ পোজ’ নামক আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, “সন্ত্রাসীদের দখলে দেশ,রাজাকার বাহিনী করিতেছে শেষ।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে আলোচ্য ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় বরং এটি ভারতের ভারতের মধ্যপ্রদেশের সেহর জেলার দুই গোত্রের মধ্যকার সংঘর্ষের ভিডিও।
বাংলাদেশে সম্প্রতি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটলে তা জাতীয় গণমাধ্যমগুলোতে প্রচার করাটা স্বাভাবিক। যদিও কি-ওয়ার্ড সার্চ করে এ দাবিতে কোনো প্রতিবেদন বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে ভাইরাল ভিডিওটির কি ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘Lokesh Bag’ নামের একটি এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৭ মার্চ একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। যেই ভিডিওটির শুরুর ১৭ সেকেন্ডের ফুটেজের সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওর মিল পাওয়া যায়। যেখানে উল্লেখ্য করা হয়, এটি মধ্যপ্রদেশের বাকতারা নামক গ্রামের। এতে প্রায় ৫০০ জাতিবাদীকে একটি দলিত বসতিতে হামলা চালাতে দেখা যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--
নিচে ফেসবুকে ভাইরাল দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর স্ক্রিনশট (বামে) এবং ভারতের ঘটনার ভিডিওর স্ক্রিনশট (ডানে) দুটির মধ্যে মিল দেখুন পাশাপাশি--
পাশাপাশি, আলোচ্য তথ্যের ভিত্তিতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে “Sehore Riot Updates: खौफनाक..! घर में बेबस लोग..जला दिया पूरा गांव!” শিরোনামে ‘Zee News’ এর ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে উল্লিখিত তথ্যের সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটির বর্ণনা হিন্দি ও ইংরেজি উভয় ভাষায় দেওয়া হয়। যেখানে বলা হয়, মধ্যপ্রদেশের সেহর জেলার বাকতারা নামক গ্রামে বাবলেশ চৌহান নামের এক যুবকের হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে কিরার ও দলিত সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কিরার সম্প্রদায়ের লোকজন সন্দেহ করে বাবলেশকে দলিতরা হত্যা করে। ফলে বাবলেশ চৌহানের হত্যার প্রতিশোধ নিতে কিরার গোষ্ঠী দলিতদের উপর আক্রমণ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে ওই গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ভিডিওটি দেখুন--
অর্থাৎ ভাইরাল ভিডিওটি বাংলাদেশের কোথাও সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার নয় বরং এটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের সেহর জেলার দুই গোত্রের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে সংঘর্ষের ঘটনার।
সুতরাং ভারতের মধ্যপ্রদেশের একটি সংঘর্ষের ঘটনার ভিডিওকে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।