সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় একজন নারী ১৮টি সন্তান প্রসব করেছেন দাবিতে একটি ছবি পোস্ট করা হচ্ছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর 'Md Shafiul Islam' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করে উল্লেখ্য করা হয়, “চট্টগ্রামের রাউজানে এক মা একসাথে জন্ম দিলেন ১৮টি জমজ সন্তান। পুরো দেশ ও বিশ্বকে অবাক করে দেওয়া এই খবর মুহূর্তেই হয়ে উঠল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বলছেন—এ ঘটনা পৃথিবীর বিরলতম ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি, আর সাধারণ মানুষ একে দেখছে মাতৃত্বের মহিমার সর্বোচ্চ রূপ হিসেবে।..... এই মায়ের কাহিনি শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বকে জানিয়ে দিল—মাতৃত্বের শক্তি অসীম, ভালোবাসার শক্তি অপরাজেয়, আর মানবতার ইতিহাসে নারীই আসল স্রষ্টা।” স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ছবিটি বাস্তব নয়। অর্থাৎ ছবিটি এক নারীর ১৮টি সন্তান প্রসবের কোনো ঘটনার নয় বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।
আলোচ্য ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে গ্রহণযোগ্য কোনো মাধ্যমে দাবি অনুযায়ী ছবিটি বাস্তব হওয়ার বিষয়ে কিংবা ছবির বিষয়েও উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ছবিটিতে মুখ ও অভিব্যক্তি অস্বাভাবিকভাবে নিখুঁত ও স্থির। মা ও শিশুদের চারপাশে আলোর ভারসাম্য অস্বাভাবিক। সব শিশুদের মুখ ও দেহের গঠন প্রায় অভিন্ন, যা এআই ছবি তৈরির সময় ক্লোনিংয়ের ফল হতে পারে। কিছু হাত ও আঙুল বিকৃত বা অস্পষ্ট মনে হয়। ব্যাকগ্রাউন্ডের চিকিৎসক ও নার্সদের মুখের অভিব্যক্তি অস্বাভাবিকভাবে মিল রয়েছে, যা এআই ছবির বৈশিষ্ট্য।
পাশাপাশি আলোচ্য ছবিটি এআই ব্যবহার করে তৈরি করা ছবির বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়।
পরবর্তীতে, এআই ছবি শনাক্তের টুল 'হাইভ' ব্যবহার করে ছবিগুলো যাচাই করা হয়। টুলটি ছবিটিকে সম্ভাব্য এআই দ্বারা তৈরি ছবি হিসেবে ফলাফল প্রদান করেছে। ছবিটির ফলাফলের স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়া এআই ছবি শনাক্তের আরেক টুল 'সাইট ইন্জিন' ব্যবহার করেও ছবিটি যাচাই করা হয়। এই টুলটিও ছবিটিকে সম্ভাব্য এআই দ্বারা তৈরি ছবি হিসেবে ফলাফল প্রদান করেছে। ছবিটির ফলাফলের স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য ছবিটি বাস্তব নয় বরং এটি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ছবিকে এক নারীর ১৮টি সন্তান প্রসবের ঘটনার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।




