সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করে বলা হচ্ছে, এটি রাজধানী উত্তরার মাইলস্টোন কলেজের ওপর বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার দৃশ্য। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে ও এখানে।
২১ জুলাই ‘শফিক ইসলাম’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, “যেভাবে মাইলস্টোন স্কুলের ৭-৮শ্রেণীতে ঢুকে পড়ে দুর্ঘটনা কবলিত বিমানটি৷”। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওটি বাস্তবে মন্তব্য করার ঘটনার নয় বরং এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ভিডিওকে বাস্তব ঘটনার বলে প্রচার করা হয়েছে।
পরবর্তীতে পর্যবেক্ষণ করে মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজের ভবনের সাথে অমিল দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও নামফলকে অস্পষ্টতা এবং ভিডিওটি ধারণের ক্ষেত্রে বাস্তবতার সাথে অসঙ্গতি পাওয়া যায়। সাধারণত এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ভিডিওতে এরকম অসঙ্গতি দেখা যায়।
এছাড়াও ভিডিওর নিচের দিকে ডান পাশে 'Veo' সাইন দেখতে পাওয়া যায়। গুগল 'Veo' হলো গুগলের একটি প্রায় বাস্তবসম্মত ভিডিও জেনারেশন টুল যা গুগল ডিপমাইন্ড দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। এটি টেক্সট-টু-ভিডিও জেনারেশন, ইমেজ-টু-ভিডিও জেনারেশন এবং সর্বশেষ সংস্করণ, ভিও-৩ ভিডিওর পাশাপাশি নেটিভ অডিও তৈরি করতে পারে। স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়াও গুগলের জেনারেটিভ টুল তাদের কন্টেন্টে 'SynthID' নামক এক ধরণের ওয়াটারমার্কিং ব্যবহার করে যা খালি চোখে দেখা না গেলেও গুগলের SynthID ডিটেকশন টুল তা শনাক্ত করতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় যাচাই করলে টুলটি ভিডিওটির সম্পূর্ণ অডিওকে ভিও দিয়ে তৈরি বলে ফলাফল দিয়েছে। দেখুন--
তবে ভিডিওটির কোয়ালিটি অনেক কম থাকায় ভিডিওর 'SynthID' ধরতে পারেনি। সাধারণত একটি ভিও-জেনারেটেড ভিডিওর কোয়ালিটি বিভিন্ন কারণে স্বাভাবিকের তুলনায় কম হয়ে গেলে কিংবা কম্প্রেস করা হলে অনেক ক্ষেত্রেই 'SynthID' ওয়াটারমার্ক শনাক্ত করা কঠিন হয়ে যায় কিংবা ধরা পড়েনা। বিভিন্নভাবে খুঁজে ভিডিওটির উন্নত কোয়ালিটি সংস্করণ পাওয়া যায়নি।
এআই কন্টেন্ট ডিটেকশন টুল 'হাইভ' ব্যবহার করে যাচাই করলে ভিডিওটি ৭৪ শতাংশ সম্ভাব্য এআই দিয়ে তৈরি বলে ফলাফল দিয়েছে। দেখুন --
অর্থাৎ ভিডিওটি এআই প্রযুক্তিতে তৈরি।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ভিডিওকে বাস্তব ঘটনার বলে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।