পানিতে ভেসে ধারণ করা তরুণীর ভিডিও বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচার
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, একটি ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে মজাচ্ছলে এক তরুণীর পানিতে ভেসে ধারণ করা ওই ভিডিওটি আপলোড করা হয়।

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি মেয়ের পানির উপরে শুয়ে থাকার ভিডিও শেয়ার করে বলা হচ্ছে, মেয়েটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে জঙ্গলের পানিতে ফেলে রাখা হয়েছে। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১ জুলাই 'Abdul Malik' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হয়, "বাংলাদেশে আর কত সংখ্যা ধর্ষণ হলে জামাত বিএনপি শান্ত হবে?? এই মেয়ে কে ধর্ষণ করার পর হত্যা করে ঝোপ জঙ্গেলের জলে পেলে চলে গেছে। এই ভাবে আর কত নারী ধর্ষণে পর হত্যা হবে?? ২০২৪ এর আগস্ট মাস থেকে নারীদের উপর নির্মম অত্যাচার চলছে সারা দেশে।" ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, বাংলাদেশে কোনো মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে পানিতে ফেলে রাখার ভিডিও নয় এটি। বরং ভারতের উত্তরপ্রদেশ থেকে পরিচালিত 'kallo_tejyain' নামে একটি ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে আলোচ্য ভিডিওটি আপলোড করা হয়। মূলত পানিতে ভেসে মজাচ্ছলে ধারণ করা হয় এই ভিডিওটি।
আলোচ্য ভিডিওটি সম্পর্কে জানতে ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম কেটে নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে 'kallo_tejyain' নামে একটি ইন্সটাগ্রাম একাউন্ট থেকে শেয়ার করা আলোচ্য ভিডিওটির একটি বড় ভার্সন খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে আলোচ্য পোস্টে দেখানো মেয়েটিকে একই অবস্থান থেকে একটি ভিডিও ধারণ করতে দেখা যায়। তবে উক্ত ভিডিওটিতে মেয়েটিকে মাথা উঁচু করে হিন্দি ভাষায় বলতে শোনা যায়, "মরিনি। ঠাণ্ডা নিচ্ছি, ঠাণ্ডা। খুব গরম পড়েছে!"। ইন্সটাগ্রাম পোস্টটি দেখুন--
পরবর্তীতে উক্ত একাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে উক্ত ইন্সটাগ্রাম একাউন্টটিতে আলোচ্য ভিডিওর তরুণীকে এধরণের অনেক ভিডিওতে কথা বলতে এবং কনটেন্ট বানাতে দেখা যায়। উক্ত ইন্সটাগ্রাম একাউন্ট থেকে একই পোশাকে আলোচ্য ভিডিওতে উপস্থিত মেয়েটির তৈরি দুটি পোস্ট দেখুন এখানে ও এখানে। তন্মধ্যে একটি ভিডিওতে নিজেকে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা হিসেবে উল্লেখ করেন ওই তরুণী।
অর্থাৎ আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। ভারতীয় একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটরের তৈরি ভিডিওর খণ্ডাংশ প্রচার করে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে হত্যার শিকার হওয়ার বিভ্রান্তিকর দাবিসহ প্রচার করা হচ্ছে।
সুতরাং ভারতের কনটেন্ট ক্রিয়েটরের পানিতে ভাসমান ভিডিওর খণ্ডাংশ বিভ্রান্তিকর দাবিসহ প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।