টঙ্গীতে ধর্ষককে বন্দুকযুদ্ধে হত্যার এই ভিডিওটি ৫ বছরের পুরোনো
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, টঙ্গীতে ২০২০ সালে এক শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তকে ক্রসফায়ারে দেয়ার পর ভিডিওটি ধারণ করা হয়।

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হচ্ছে, সম্প্রতি টঙ্গীতে ৭ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যামামলার আসামী র্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৮ মার্চ 'মুহাম্মাদ সামিউল ইসলাম' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে ভিডিওটি শেয়ার করে লেখা হয়, "ধ*র্ষ*ক রে সরাসরি ক্রসফায়ার করল RAB!এমন বাংলাদেশ আমরা চাই ✊✊টঙ্গী মধুমিতা রোডে সাত বছরের শিশু বাচ্চাকে ধ*র্ষ*ণ করার অপরাধে ধ*র্ষ*ককে ক্রসফায়ার দিলো RAB। এজন্য RAB কে ধন্যবাদ জানিয়ে এলাকাবাসী আনন্দ উল্লাস করতেছে"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি বিভ্রান্তিকর। আলোচ্য ভিডিওটি সাম্প্রতিক নয় বরং ২০২০ সালের মে মাসে ভিডিওটি ধারণ করা হয়। গাজীপুরের টঙ্গীতে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ৭ বছর বয়সের এক শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামী আবু সুফিয়ান নিহত হওয়ার পরে এই ভিডিওটি ধারণ করা হয়।
ভিডিওটির ব্যাপারে জানতে ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম কীট নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে 'রুপসী বাংলা' নামে একটি ফেসবুক পেজে আলোচ্য ভিডিওটিসহ ২০২০ সালের ২২ মে করা একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে লেখা থাকতে দেখা যায়, "#টঙ্গীতে ৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছিল।আসামিকে সেই জায়গাতেই ক্রসফায়ার। ধর্ষণের শাস্তি হোক এভাবেই ✌️❤️"। ফেসবুক পোস্টটি দেখুন--
পরবর্তীতে, আরো সার্চ করে ২০২০ সালের ২২ মে 'YouTube Bangla Pro' নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলেও "টঙ্গীতে RAB এর সাথে বন্দুক যুদ্ধে শিশু চাদনীর ধর্ষক সুফিয়ান নিহত।। হাজার হাজার মানুষের উচ্ছ্বাস ।।" শিরোনামে আপলোডকৃত আলোচ্য ভিডিওটির মত একটি খুঁজে পাওয়া যায়। ইউটিউব ভিডিওটি দেখুন--
উপরের ভিডিওর সূত্রে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ৪ জুন "'বন্দুকযুদ্ধে' শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি নিহত" শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, "গাজীপুরের টঙ্গীতে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শিশু ধর্ষণ ও হত্যার মামলার প্রধান আসামি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে টঙ্গীর মধুমিতা রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।" স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়া দৈনিক পত্রিকা ইত্তেফাক, টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভি এবং সময় টিভির অনলাইন ভার্সনে প্রচারিত সংবাদ থেকেও জানা যায় একই তথ্য।
অর্থাৎ আলোচ্য পোস্টে যুক্ত ভিডিওটি পুরোনো। ২০২০ সালের মে মাসে র্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে শিশুধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামী নিহত হওয়ার পরে আলোচ্য ভিডিওটি ধারণ করা হয়, এটি সাম্প্রতিক ঘটনা নয়।
সুতরাং ৫ বছরের পুরোনো ভিডিওকে নতুন করে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।