ধর্ষণের পর মরদেহ উদ্ধারের এই ছবিটি ভারতের
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ভাইরাল ছবিটি বাংলাদেশের নয় বরং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জুনপুট এলাকার ঘটনা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে একজন নারীর মরদেহ উদ্ধারের একটি ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, ঘটনাটি বাংলাদেশের একজন নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে এবং এখানে।
গত ২৯ অক্টোবর ‘Hasmot Ali’ নামক একটি আইডি থেকে একটি ছবি পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, “কিছু লোক মেয়ে টাকে ধ'র্ষ'ণ করে জীবন্ত মাটিতে চাপা দিয়ে চলে গেছে।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। আলোচ্য ছবিটি বাংলাদেশের কোনো ঘটনার নয় বরং এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জুনপুট এলাকার ঘটনার দৃশ্য।
ফেসবুকে আলোচ্য দাবিতে প্রচারিত ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে “ঝাউবনে হাত-পা বাঁধা কিশোরীর দেহ উদ্ধার, পুলিশের বিরুদ্ধে সরব বিজেপি” শিরোনামে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘টিভি৯ বাংলা’র ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ২৬ অক্টোবর প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রকাশিত ছবির সঙ্গে ফেসবুকে আলোচ্য দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, ঝাউবন থেকে কিশোরীর হাত-পা বাঁধা দেহ উদ্ধার হল। মৃতার নাম অর্চনা পণ্ডিত (১৫)। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির জুনপুট থানার গোপালপুরে। কিশোরীর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের পরই জানা যাবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। জুনপুট থানার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। স্ক্রিনশট দেখুন--
আলোচ্য তথ্যের ভিত্তিতে কি ওয়ার্ড সার্চ করে “বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি! পরের দিন জুনপুটের ঝাউবন থেকে উদ্ধার কিশোরীর দেহ, ধৃত এক” শিরোনামে ‘আনন্দবাজার’র পত্রিকার অনলাইনে আরো একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। একই সময় গত ২৭ অক্টোবর প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রকাশিত মরদেহের ব্লার করা ছবির সঙ্গে ফেসবুকে প্রচারিত ছবির মিল পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, কাঁথির জুনপুট সমুদ্র সৈকতের গোপালপুর এলাকায় ঝাউবনের ভিতর থেকে উদ্ধার হল ১৫ বছরের এক কিশোরীর হাত-পা বাঁধা দেহ। তার বাড়ি কাঁথি-২ দেশপ্রাণ ব্লকের সরদা গ্রাম পঞ্চায়েতের দূরমুঠ গ্রামে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার বিকেল নাগাদ ওই কিশোরী বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। তার পর থেকে তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। এই ঘটনার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই এক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জুনপুট থানা সূত্রে জানা গিয়েছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ ফেসবুকে প্রচারিত আলোচ্য ছবিটি বাংলাদেশে ধর্ষণের পর মরদেহ উদ্ধারের কোনো ঘটনার নয়। বরং এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জুনপুট এলাকার ঘটনা।
সুতরাং ভারতে এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের ছবি দিয়ে বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।




