বোরকা পরা নারীদের এই ছবিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ধারণকৃত নয়
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, সৌদি আররের আল বাহা অঞ্চলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের অংশগ্রহণে সম্মেলন চলাকালে ছবিটি ধারণ করা হয়।

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে বোরকা ও হিজাব পরা নারীদের একটি ছবি শেয়ার করে বলা হচ্ছে, ছবিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধারণ করা হয়েছে। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৭ আগস্ট 'Sheikh Farid' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে ছবিটি পোস্ট করে বলা হয়, "ঢাবি কওমি মাদরাসা! 🤣 "মুসলমানদের স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে মানায়,না,মাদরাসাতেই মানায়!""। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। আলোচ্য ছবিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে নয় বরং সৌদি আরবের আল বাহা নামে একটি অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হওয়া স্কুল শিক্ষকদের একটি সম্মেলনস্থল থেকে ধারণ করা হয়েছে।
ছবিটির ব্যাপারে জানতে ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে সৌদি আরব থেকে প্রচারিত গণমাধ্যম আন নাহার নিউজের ওয়েবসাইটে গত ১৪ আগস্ট "Al Baha Education organizes the first forum for school principals for the new academic year." শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচ্য ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “সাধারণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মহামান্য আন্ডারসেক্রেটারি ডঃ হাসান খারমির ভার্চুয়াল অংশগ্রহণ এবং আল বাহা শিক্ষার মহাপরিচালক ডঃ আব্দুল খালিক বিন হানাশ আল জাহরানির উপস্থিতিতে, আল বাহা অঞ্চলের সাধারণ শিক্ষা প্রশাসন এই বছর স্কুল অধ্যক্ষদের জন্য প্রথম ফোরামের আয়োজন করে, যা প্রিন্স ফয়সাল বিন মোহাম্মদ এডুকেশনাল হলে অনুষ্ঠিত হয়। (গুগলের সহায়তায় অনূদিত)”। স্ক্রিনশট দেখুন--
আরো সার্চ করে 'محمد هضبان' নামে পরিচালিত সৌদি আরবের আল-বাহা অঞ্চলের শিক্ষা প্রশাসনের অফিসিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার) একাউন্ট থেকে গত ১৩ আগস্ট পোস্ট করা কয়েকটি ছবির মধ্যে আলোচ্য ছবিটির মত ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ওই পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়, "ফোরামে অনেক প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল (শিক্ষাগত শৃঙ্খলা: ভূমিকা ও দায়িত্ব) যা #আলবাহা শিক্ষার সহকারী শিক্ষা বিষয়ক, মিসেস নাওয়াল বিনতে আলী আল-দুরমাহি উপস্থাপন করেন এবং আরেকটি উপস্থাপন করেন সহকারী পরিষেবা মহাপরিচালক, জনাব নাসের বিন সাঈদ আল-জাহরানি, (সম্পদ তালিকা) বিষয়ে এবং তৃতীয়টি উপস্থাপন করেন ছাত্র নির্দেশিকা বিভাগের প্রধান, জনাব সালেহ আল-কানানি, (আচরণ ও উপস্থিতির নিয়ম, এবং তাকাফুল প্রোগ্রাম) বিষয়ে, এরপর একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন (পুরুষ ও মহিলা শিক্ষকদের রিটার্নে বিনিয়োগের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা) যা আল-লুগামিস স্কুলের পরিচালক, জনাব সালেহ আব্দুল মাজিদ দ্বারা প্রস্তুত করা হয়েছিল, যেখানে স্কুল এক্সিলেন্স ইউনিটের প্রধান, মিসেস আশওয়াক ধিয়াব উপস্থাপন করেন (শিক্ষণ কার্যক্রম উন্নত করার একটি সারসংক্ষেপ), এবং কার্যপত্রগুলি (ইউনিফাইড সাপোর্ট) পরিষেবা সম্পর্কে মিসেস হাসিনা আল-জাহরানির উপস্থাপনার মাধ্যমে শেষ হয়।(অনূদিত)"। এক্স পোস্টটি দেখুন--
এছাড়াও, আরো রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘هياء الشعيل’ নামক এক্স একাউন্টে গত ১৬ আগস্ট করা আরেকটি পোস্টে আলোচ্য ছবিটির মত ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ওই পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়, "মাশা'আল্লাহ... 💫 যারা জ্ঞান ও কর্ম, বিনয় ও সততা এবং ধর্ম ও দেশের সেবাকে একত্রিত করে। আল-বাহা অঞ্চলের মহিলা স্কুল অধ্যক্ষরা প্রিন্স ফয়সাল বিন মোহাম্মদ এডুকেশনাল হলে প্রথম স্কুল অধ্যক্ষদের ফোরামে যোগ দিয়েছিলেন। তারা সাধারণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মহামান্য আন্ডারসেক্রেটারি ডঃ হাসান খারমির ভার্চুয়ালি দেওয়া একটি বক্তৃতা শুনেছিলেন, যিনি গত এক বছরে কর্মক্ষমতা এবং লক্ষ্য অর্জনে তাদের প্রচেষ্টা এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেছিলেন। (গুগলের সাহায্যে অনূদিত)"। এক্স পোস্টটি দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়।
আলোচ্য পোস্টে যুক্ত ছবিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে ধারণ করা নয়। সৌদি আরবের আল বাহা নামে একটি অঞ্চলে স্কুল শিক্ষকদের একটি সম্মেলন চলাকালে আলোচ্য ছবিটি ধারণ করা হয়েছে।
সুতরাং সৌদি আরবের সম্মেলন স্থল থেকে ধারণ করা বোরকা ও হিজাব পরা নারীদের ছবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ধারণকৃত ছবি বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।