সুমুদ ফ্লোটিলার জাহাজের বলে প্রচারিত এই ছবিটি এআই দ্বারা তৈরি
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, আলোচ্য সুমুদ ফ্লোটিলার জাহাজের ছবিটি বাস্তবে ধারণ করা নয় বরং এআই প্রযুক্তিতে এটি তৈরি করা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি গণমাধ্যমের পেজে একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে। ছবিতে দেখা গেছে, সমুদ্রে সারিবদ্ধভাবে অসংখ্য ছোট জাহাজ একসঙ্গে চলছে। প্রতিটির উপরে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়ছে। সামনের দিকের একটি বড় জাহাজে লেখা রয়েছে “FLOTILLA GLOBAL SUMUD”। পোস্টটি দেখুন এখানে।
গত ০২ অক্টোবর বেসরকারি সম্প্রচার মাধ্যম ‘এখন টেলিভিশন’-এর ফেসবুক পেজে একটি সংবাদের ফটোকার্ডে আলোচ্য ছবিটি পোস্ট করা হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, "এখনও ত্রাণ নিয়ে গাজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সুমুদ ফ্লোটিলার ৩০ টি জাহাজ ... তীর থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরে নৌযানগুলো”। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ছবিটি বাস্তব নয়। ত্রাণ নিয়ে গাজার দিকে যাওয়া অবস্থায় সুমুদ ফ্লোটিলার জাহাজের ছবি বলে প্রচারিত এই ছবিটি বাস্তবে ধারণ করা কোনো দৃশ্যের নয়। এআই প্রযুক্তির সহায়তায় ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।
খালি চোখে ছবিটিতে উল্লেখিত '৩০ টি জাহাজের' চেয়ে বেশি জাহাজ দেখা গেছে। এছাড়াও ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে অস্পষ্টতা, পানির দৃশ্যের অস্বাভাবিকতা সহ এআই ছবির বেশকিছু বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।
সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক মাধ্যমে গুগলের জেনারেটিভ টুল জেমিনি দিয়ে ছবি তৈরি করে প্রচারের প্রবণতা অনেক বেড়েছে। জেমিনির ২.৫ ফ্ল্যাশ (ছবির ক্ষেত্রে ন্যানো ব্যানানা বলা হয়) মডেল আগের চেয়েও বেশি বাস্তবের ন্যায় ছবি তৈরি করতে সক্ষম। Nano Banana হলো গুগল-এর Gemini 2.5 Flash Image মডেলটির কোডনেম (আভ্যন্তরীণ ডাকনাম)। এই মডেলটি মূলত একটি উন্নত এআই ইমেজ এডিটিং মডেল যা টেক্সট কমান্ড বা বর্ণনা ব্যবহার করে ছবি তৈরি এবং সম্পাদনা করতে পারে।
জেমিনি দিয়ে তৈরি কিনা নিশ্চিত হতে গুগলেরই SynthID নামক ডিটেকশন টুলে ছবিটিকে যাচাই করা হয়েছে। কেননা গুগলের জেনারেটিভ টুলগুলো তাদের ইমেজ কন্টেন্টে সাধারণ ওয়াটারমার্কিংয়ের পাশাপাশি 'SynthID' নামক এক ধরণের ওয়াটারমার্কিং ব্যবহার করে যা খালি চোখে শনাক্ত করা যায়না। তবে গুগলের SynthID ডিটেকশন টুল সেটি শনাক্ত করতে পারে।
এই প্রক্রিয়ায় যাচাই করলেও টুলটি আলোচ্য ছবিটি 'গুগলের এআই ইমেজ জেনারেটিভ মডেল ব্যবহার করে তৈরি' বলে ফলাফল দিয়েছে এবং ছবিতে SynthID শনাক্ত করেছে। দেখুন--
অর্থাৎ ছবিটি এআই প্রযুক্তিতে তৈরি।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ছবিকে বাস্তবে ধারণ করা ছবি হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।