ঢাবি শিক্ষক মোনামী'র এই ছবিগুলো এআই দ্বারা তৈরি
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ছবিগুলো বাস্তবে ধারণ করা নয় বরং এআই প্রযুক্তিতে ছবিগুলো তৈরি করা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে খোলামেলা পোশাকে একজন নারীর কয়েকটি ছবি একত্রে পোস্ট করা হয়েছে। পোস্টে দাবি করা হয়েছে ছবিগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শেহরীন আমিন ভূঁইয়া (মোনামী) -এর ছবি। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
আজ ০৩ নভেম্বর ‘Sidratul Montaha’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ছবিগুলো পোস্ট করা হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, “জামাত শিবিরের আদর্শের মোনামী ম্যাডাম !” পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ছবিগুলো বাস্তব নয়। সামাজিক মাধ্যমে ঢাবি শিক্ষিকা মোনামী'র বলে প্রচারিত ছবিগুলো বাস্তবে ধারণ করা কোনো ছবি নয় বরং এআই প্রযুক্তির সহায়তায় আলোচ্য ছবিগুলো তৈরি করা হয়েছে।
রিভার্স সার্চ সহ সাধারণ সার্চ করে আলোচ্য ছবিটির বিষয়ে গ্রহণযোগ্য কোনো মাধ্যমে ছবিটির বিষয়ে কোনো উল্লেখযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে পর্যবেক্ষণ করে ছবিরে ডান দিকের নিচে 'জেমিনি'র লোগো দেখতে পাওয়া যায়। দেখুন --
সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক মাধ্যমে গুগলের জেনারেটিভ টুল জেমিনি দিয়ে ছবি তৈরি করে প্রচারের প্রবণতা অনেক বেড়েছে। জেমিনির ২.৫ ফ্ল্যাশ (ছবির ক্ষেত্রে ন্যানো ব্যানানা বলা হয়) মডেল আগের চেয়েও বেশি বাস্তবের ন্যায় যে কোনো ধরণের ছবি তৈরি করতে সক্ষম। Nano Banana হলো গুগল-এর Gemini 2.5 Flash Image মডেলটির কোডনেম (আভ্যন্তরীণ ডাকনাম)। এই মডেলটি মূলত একটি উন্নত এআই ইমেজ এডিটিং মডেল যা টেক্সট কমান্ড বা বর্ণনা ব্যবহার করে ছবি তৈরি এবং সম্পাদনা করতে পারে।
জেমিনি টুল দিয়ে তৈরি কিনা নিশ্চিত হতে গুগলেরই SynthID নামক ডিটেকশন টুলে ছবিটিকে যাচাই করা হয়েছে। কেননা গুগলের জেনারেটিভ টুলগুলো তাদের ইমেজ কন্টেন্টে সাধারণ ওয়াটারমার্কিংয়ের পাশাপাশি 'SynthID' নামক এক ধরণের ওয়াটারমার্কিং ব্যবহার করে যা খালি চোখে শনাক্ত করা যায়না। তবে গুগলের SynthID ডিটেকশন টুল সেটি শনাক্ত করতে পারে।
এই শণাক্তকরণ টুলের মাধ্যমে ফেসবুকে প্রচারিত ছবিগুলোর প্রথম ছবিটি যাচাই করলে ছবিটি 'গুগলের এআই ইমেজ জেনারেটিভ মডেল ব্যবহার করে তৈরি' বলে ফলাফল দিয়েছে এবং ছবিতে SynthID শনাক্ত করেছে। দেখুন--
দ্বিতীয় ছবিটি যাচাই করলে ছবিটি 'গুগলের এআই ইমেজ জেনারেটিভ মডেল ব্যবহার করে তৈরি' বলে ফলাফল দিয়েছে এবং ছবিতে SynthID শনাক্ত করেছে। দেখুন--
তৃতীয় ছবিটি যাচাই করলে ছবিটি 'গুগলের এআই ইমেজ জেনারেটিভ মডেল ব্যবহার করে তৈরি' বলে ফলাফল দিয়েছে এবং ছবিতে SynthID শনাক্ত করেছে। দেখুন--
চতুর্থ ছবিটি যাচাই করলে ছবিটি 'গুগলের এআই ইমেজ জেনারেটিভ মডেল ব্যবহার করে তৈরি' বলে ফলাফল দিয়েছে এবং ছবিতে SynthID শনাক্ত করেছে। দেখুন--
এছড়াও কিছু পোস্টে আরো একটি চবি যুক্ত করতে দেখা গেছে। সেই ছবিটিও 'গুগলের এআই ইমেজ জেনারেটিভ মডেল ব্যবহার করে তৈরি' বলে ফলাফল দিয়েছে এবং ছবিতে SynthID শনাক্ত করেছে। দেখুন--
অর্থাৎ ছবিগুলো গুগলের এআই মডেল ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ছবিকে বাস্তবে ধারণ করা ছবি হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।




