একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশোধ শীর্ষক ভিডিওটি এআই জেনারেটেড
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ভিডিওটি বাস্তব কোনো রাজনৈতিক নেতার ভাষণের ঘটনার নয় বরং ভিডিওটি এআই প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, একজন রাজনৈতিক নেতা গণমাধ্যমের সামনে তার ভাষণে বলেছেন, "আমরা শুধু একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলাম। এখন সামলাতে পারছিনা তাই আমরা প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের পরামর্শ চাই।" এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত মে ‘শেখ হাসিনার সৈনিক’ নামক একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয় "'আমরা শুধু একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলাম... এখন সামলাতে পারছিনা.. এখন আমরা ইউনূসের আরো পরামর্শ চাই। জামায়াত শিবির এনসিপি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশোধ নিতে চাচ্ছে। ওরা এখনো বাংলাদেশকে মেনে নিতে পারেনি। সত্য কখনো গোপন থাকে না কথা ক্লিয়ার"। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন —
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওটি বাস্তব ঘটনার নয় বরং এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ভিডিওকে বাস্তব ঘটনার বলে প্রচার করা হয়েছে।
আলোচ্য ভিডিও থেকে কি-ফ্রেম নিয়ে ছবি রিভার্স ইমেজ সার্চ সহ সংশ্লিষ্ট কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করে গণমাধ্যম কিংবা গ্রহণযোগ্য কোনো মাধ্যমে আলোচ্য ভিডিওর বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে পর্যবেক্ষণ করে ভিডিওতে অস্তিত্বহীন গণমাধ্যমের মাইক ও বাংলা সাবটাইটেলে অসামঞ্জ্যতা পাওয়া যায়। সাধারণত এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ভিডিওতে এরকম অসঙ্গতি দেখা যায়। এছাড়াও, ভিডিওর নিচের দিকে ডান কোণে 'Veo' সাইন দেখতে পাওয়া যায়। দেখুন --
গুগল 'Veo' হলো গুগলের একটি প্রায় বাস্তবসম্মত ভিডিও জেনারেশন টুল যা গুগল ডিপমাইন্ড দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। এটি টেক্সট-টু-ভিডিও জেনারেশন, ইমেজ-টু-ভিডিও জেনারেশন এবং সর্বশেষ সংস্করণ, ভিও-৩ ভিডিওর পাশাপাশি নেটিভ অডিও তৈরি করতে পারে।
পাশাপাশি গুগলের জেনারেটিভ টুল তাদের কন্টেন্টে 'SynthID' নামক এক ধরণের ওয়াটারমার্কিং ব্যবহার করে যা খালি চোখে দেখা না গেলেও গুগলের SynthID ডিটেকশন টুল তা শনাক্ত করতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় যাচাই করলেও টুলটি ভিডিওটিকে 'গুগলের এআই টুল দিয়ে তৈরি' বলে ফলাফল দিয়েছে। দেখুন--
অর্থাৎ ভিডিওটি এআই প্রযুক্তিতে তৈরি।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ভিডিওকে বাস্তব ঘটনার বলে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।