তরুণীকে পুলিশ কর্তৃক নির্যাতনের ভিডিওটি হাসিনার আমলের
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, তরুণীকে পুলিশি নির্যাতনের ভিডিওটি ইউনূস সরকারের আমলের নয় বরং এটি ২০১৮ সালে হাসিনার আমলের।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে পুলিশ কর্তৃক এক তরুণীকে নির্যাতনের একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, সম্প্রতি অল্পবয়সী এক অসহায় মেয়েকে পুলিশের দুই সদস্য রাস্তায় প্রকাশ্য মারধর করছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৯ আগস্ট ‘বিষাক্ত মায়া’ নামক একটি পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, “অল্পবয়সী এক অসহায় মেয়েকে পুলিশের দু-সদস্য রাস্তায় প্রকাশ্য মারধর। এক পথচারী ছবি তুলতে গেলে তার সাথেও খারাপ আচরণ করে পুলিশ। বতর্মান পুলিশ অপরাধীদের ছেড়ে দিয়ে, অসহায় মানুষের উপর নির্যাতন করতেছে...।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ পোস্টের লেখা ও হ্যাশট্যাগ থেকে স্পষ্ট যে দাবি করা হচ্ছে ভিডিওটি বর্তমান ইউনূস সরকারের আমলে পুলিশ এই তরুণীকে নির্যাতন করছে।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে এক অসহায় তরুণীকে পুলিশের দুইজন সদস্য রাস্তায় প্রকাশ্য নির্যাতন করার ভিডিওটি সাম্প্রতিক বা বর্তমান ইউনূস সরকারের আমলের নয় বরং এটি ২০১৮ সালে হাসিনার সরকারের আমলের একটি ঘটনার ভিডিও।
আলোচ্য ভিডিওটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে “Police brutality on woman in front of Bangabhaban” শিরোনামে ইংরেজি ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘ঢাকা ট্রিবিউন’ এর ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। যেই ভিডিওটি ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়। যেই ভিডিওর সঙ্গে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওর মিল পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, বঙ্গভবনের সামনে পুলিশ এক মহিলার প্রতি নির্মম আচরণ করে। ভিডিওটি দেখুন--
পাশাপাশি, কি ওয়ার্ড সার্চ করে “'ভারসাম্যহীন' তরুণীকে পুলিশের মারধরের ভিডিও ভাইরাল” শিরোনামে ‘দৈনিক সমকাল’ পত্রিকার অনলাইনে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওর দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, রাজধানীর গুলিস্তানের অলিম্পিক ভবনের সামনের রাস্তায় মানসিক ভারসাম্যহীন এক তরুণীকে মারধর করছে দুই পুলিশ সদস্য। পরে ওই তরুণীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ পুলিশ কর্তৃক মানসিক ভারসাম্যহীন এক তরুণীকে নির্যাতনের ভাইরাল ভিডিওটি সাম্প্রতিক বা বর্তমান ইউনূস সরকারের আমলের নয় বরং এটি ২০১৮ সালের হাসিনা সরকারের আমলের একটি ঘটনার পুরোনো ভিডিও।
সুতরাং, ২০১৮ সালের পুরোনো ভিডিও দিয়ে তরুণীকে পুলিশের সাম্প্রতিক নির্যাতন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।