প্রধানমন্ত্রীর ছবি যুক্ত ৫০ টাকার নোটটি স্মারক নোট, বিনিময়যোগ্য নয়

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক গ্রুপ, আইডি ও পেজ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি যুক্ত ৫০ টাকা মূল্যমানের একটি নোটের উভয় পাশের ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, এটি বাংলাদেশের ৫০ টাকার নতুন নোট। অর্থাৎ ৫০ টাকার এই নোটটি লেনদেনে ব্যবহৃত হচ্ছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।

১২ মার্চ 'বিজ্ঞান ও বিস্ময়' নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে 'জাগ্রত রাকিব' নামের একটি আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করে লেখা হয়, "৫০ টাকার নতুন নোট। 🙃😊।" নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--

ফ্যাক্ট চেক:

বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। ৫০ টাকার নোটটি প্রচলিত কোন মুদ্রা নয় বরং এটি ঢাকায় মেট্রোরেল উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক মুদ্রিত একটি স্মারক নোট, যা বিনিময়যোগ্য নয়।

আলোচ্য ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, নোটটির উভয় পাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মেট্রোরেলের ছবি যুক্ত করা হয়েছে। যেখানে লেখা আছে, "স্মারক নোট বিনিময়যোগ্য নয়"। দেখুন--

ভাইরাল নোটটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে "Inauguration of Bangladesh’s First Metro Rail (50 Taka Commemorative Note)" শিরোনামে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ব্যাংকনোটস অ্যান্ড কয়েনস বিভাগে আলোচ্য ছবির অনুরূপ নোটের ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। শিরোনামেই বন্ধনীর মধ্যে নোটটিকে স্মারক নোট হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া, নোটটির বর্ণনায় বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক আনুষ্ঠানিকভাবে অবমুক্ত করেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ওই স্মারক নোটটি মুদ্রণ করে। স্ক্রিনশট দেখুন--

এদিকে, কি-ওয়ার্ড সার্চ করে "মেট্রোরেল চালু উপলক্ষে আসছে ৫০ টাকার স্মারক নোট" শিরোনামে প্রথম আালোর ওয়েবসাইটে ২২ ডিসেম্বর ২০২২ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এতে বলা হয়, "বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক নোট মুদ্রণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাল বুধবার বেলা ১১টায় মেট্রোরেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্মারক নোটটি আনুষ্ঠানিকভাবে অবমুক্ত করবেন। এর পরদিন থেকে স্মারক নোটটি বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস ও পরবর্তী সময়ে অন্যান্য শাখা অফিসে পাওয়া যাবে।" স্ক্রিনশট দেখুন--

অর্থাৎ আলোচ্য নোটটি বাণিজ্যিক, প্রচলিত বা বিনিময়যোগ্য নয় বরং এটি একটি স্মারক নোট।

প্রসঙ্গত, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি প্রাপ্ত কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, স্থান ও ঘটনাসমূহকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য কোন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ ধরনের প্রতীকী মুদ্রা বা নোট ছাপা হয়, যা 'স্মারক মুদ্রা' নামে পরিচিত। এই নোট দিয়ে কোনো বাণিজ্যিক লেনদেন করা যায় না।

সুতরাং ঢাকায় মেট্রোরেল উদ্বোধন উপলক্ষে মুদ্রিত ৫০ টাকার স্মারক নোটকে প্রচলিত নোট দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।