সেলুন ভাঙচুরের এই ঘটনা-ফুটেজটি সাম্প্রতিক নয়
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ২০২৪ সালের আগস্টে সেলুন ভাঙচুরের এই ঘটনার ভিডিওকে সাম্প্রতিক বলে প্রচার করা হচ্ছে।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কয়েকটি গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজ সহ বিভিন্ন সাধারণ পেজে একটি সেলুন ভাঙচুরের ভিডিও পোস্ট করা হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে ভিডিওর ঘটনাটিকে সাম্প্রতিক ঘটনা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৮ এপ্রিল মাছরাঙা টেলিভিশনের সংবাদ বিষয়ক পেজ ‘Maasranga News’ পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, “মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিনামূল্যে চুল কাটার সেলুন ভা'ঙ'চু'র”। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
মাছরাঙা টেলিভিশনের পাশাপাশি 'Centrist Nation TV' এর ফেসবুক পেজে ভিডিওটি প্রথমে সাম্প্রতিক ঘটনা হিসেবে প্রচার করা হলে পরে ভিডিওর ক্যাপশন পরিবর্তন করে ফেলা হয়। যদিও ভিডিওর মধ্যে ঘটনার তারিখ হিসেবে এখনও ২৯ এপ্রিল ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে। দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য ঘটনাটি সাম্প্রতিক নয়। রাজধানীর পশ্চিম আগারগাঁওয়ের এই সেলুন ভাঙচুরের এই ঘটনাটি ঘটে ২০২৪ সালের আগস্টে হাসিনা সরকারের পতনের পর।
'Centrist Nation TV' এর ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ভিডিওটির পোস্টে একটি মন্তব্য পাওয়া যায়। মন্তব্যে উল্লেখ করা হয় ভিডিওটি ২০২৪ সালের আগস্টের ঘটনার। এমনকি মন্তব্যের সাথে একটি ভিডিওর লিংকও যুক্ত করে দেওয়া হয়।
লিংকে ক্লিক করে দেখা যায় যে 'Rana Nath' নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ০৬ আগস্ট প্রকাশিত হুবহু একই ভিডিওটি পাওয়া যায়। ভিডিওর ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয়, "গোপাল চন্দ্র শীল এর সেলুন দোকানটা রক্ষা পেলনা ভেঙ্গে দিলো কারণ সে হিন্দু আর মুক্তিযুদ্ধাদের ফ্রী তে চুল কাটে তাই।" পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
সার্চ করে ২০২৪ সালের আগস্টে বিভিন্ন ফেসবুক ব্যবহারকারীকে ভিডিওটি পোস্ট করতে দেখা যায়। আগস্টে প্রকাশিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
অর্থাৎ সেলুন ভাঙচুরের এই ভিডিও-ঘটনাটি ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের।
উল্লেখ্য দৈনিক প্রথম আলো'র অনলাইন সংস্করণে ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর "মুক্তিযোদ্ধাদের চুল-দাড়ি বিনা মূল্যে কাটেন গোপাল চন্দ্র" শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। এতে উল্লেখ করা হয়, পশ্চিম আগারগাঁওয়ে মোমতাজ মসজিদের পাশে সেলুন গোপালের। গোপালের দোকানে মুক্তিযোদ্ধাদের চুল বিনা মূল্যে কাটানো হয়। বিষয়টি অত্র এলাকায় বেশ আলোচিত।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে ২০২৪ সালের আগস্টের একটি ঘটনার ভিডিও সাম্প্রতিক ঘটনা বলে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।