রুমিন ফারহানার বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, "আওয়ামীলীগের সমাবেশে গেলে বিরিয়ানি পাওয়া যায়" রুমিনের এমন মন্তব্যকে এডিট করে ভিন্নভাবে প্রচার করা হচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে একটি ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, বিএনপির সমাবেশে গেলেই বিরিয়ানি পাওয়া যায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা। ভিডিওটিতে বিএনপি দলীয় হুইপ ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাকে নিজ দলের সমালোচনা করে বক্তব্য দিতে শোনা যায়। এমন কিছু পোস্টের লিংক দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২১ নভেম্বর 'রাজনীতি" নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিও ফুটেজটি শেয়ার করে লেখা হয়, "বিএনপির সমাবেশে গেলে বিরিয়ানি পাওয়া যায়। এভাবে সত্যি বলায় রুমিন ম্যাডামকে ধন্যবাদ।" স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, বিএনপি দলীয় হুইপ ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার নিজ ফেসবুক একাউন্টে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেয়া বক্তব্যকে বিকৃত করে খণ্ডিতভাবে প্রচার করা হচ্ছে।
ভিডিওটি থেকে কী ফ্রেম কেটে রিভার্স সার্চ করার পর, বিএনপি দলীয় হুইপ ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার অফিশিয়াল ভেরিফাইড ফেসবুক একাউন্টে গত ১৬ নভেম্বর '১০ ডিসেম্বর কি পতন হতে যাচ্ছে সরকারের [...]" ক্যাপশন সহ পোস্ট করা একটি ভিডিওতে বক্তব্যের বিভিন্ন অংশ খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি দেখুন--
একই ভিডিও 'Rumeen's Voice' নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলেও ১৬ নভেম্বর পোস্ট করা করা হয়েছে।
ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে বুম বাংলাদেশ নিশ্চিত হয়েছে রুমিন ফারহানার বক্তব্যকে বিকৃত করে খণ্ডিতভাবে প্রচার করা হচ্ছে আলোচ্য ফেসবুক পোস্টগুলোতে। ভিডিওটিতে রুমিন ফারহানা নিজ দলের কর্মীরা কি ধরনের ঝুঁকি নিয়ে বিএনপির সমাবেশে যোগ দেন সে সম্পর্কে আলোচনা করেন। এ সময় বেশ কয়েকবার "বিএনপির সমাবেশে গেলে" বাক্যটি বলেন। এরপর সাত মিনিট তিন সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের ভিডিওর ৩ মিনিট ২২ সেকেন্ডে থেকে রুমিনকে বলতে শোনা যায়, "বিএনপির জনসমাবেশে যখন আপনি যুক্ত হন তখন আপনি সবচেয়ে কম ঝুঁকিটা আপনি নেন সেটা হচ্ছে আপনি একটা মামলার আসামি হবেন। আর সবচেয়ে বড় যে ঝুঁকিটা আপনি নেন তা হচ্ছে আপনার প্রাণ চলে যেতে পারে। পুলিশের গুলিতে যেতে পারে। আওয়ামীলীগের ক্যাডার বাহিনীর হাতে যেতে পারে। আপনার প্রাণ চলে যেতে পারে। এতবড় ঝুঁকি...আপনার প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে আপনি বিএনপির সমাবেশে যুক্ত হন। আর আওয়ামী-লীগের সমাবেশে যাওয়া মানে কিছু লাভ হওয়া, কোনো লাভ যদি না হয়, তবুও এক প্যাকেট বিরিয়ানি পাওয়া যায়। একটা বসার চেয়ার পাওয়া যায়। পুলিশ প্রটেকশন পাওয়া যায়, নিরাপদে ঘরে ফেরা যায়। আর সেই ছবি ব্যবহার করে নানান জায়গায় ধান্দা করা যায়, ধান্দাবাজি করা যায়। আওয়ামী-লীগের সমাবেশে গেলে এই লাভটা হয়।"
মূলত এই ভিডিওতে দেয়া রুমিন ফারহানার বক্তব্যের বিভিন্ন অংশ কাটছাঁট করে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে আলোচ্য ফেসবুক পোস্টগুলোতে। সেখানে তিনি বিএনপি নয় বরং প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগকে উদ্দেশ্য করে কথাগুলো বলেছিলেন।
সুতরাং বিএনপি নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার বক্তব্যের বিভিন্ন অংশ কেটে সম্পাদিত করে যুক্ত করে বিকৃতভাবে প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।