
না, ভিডিওটি দশ বছর পরেও অক্ষত থাকা কোনো লাশের নয়
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ৪ বছর আগে দাফনের পূর্বে ধারণ করা ইন্দোনেশিয়ার এক ব্যক্তির মৃতদেহের ভিডিও এটি।

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ১০ বছর পরেও হাফেজের লাশ অক্ষত অবস্থার দৃশ্য এটি। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২৩ এপ্রিল 'Spondito Adnan' নামের ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়, "আল্লাহু আকবার একজন হাফেজে কুরআনের লাশ দশ বছর পরেও অক্ষত অবস্থায় আছে "। স্ক্রিনশট দেখুন--
পোস্টটি দেখুন এখানে
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ক্যাপশনে করা দাবিটি ভিত্তিহীন। ৪ বছর আগে দাফনের পূর্বে ধারণ করা ইন্দোনেশিয়ার এক ব্যক্তির মৃতদেহের ভিডিওকে বিভ্রান্তিকর দাবিতে শেয়ার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে।
ভাইরাল ভিডিও থেকে কি-ফ্রেম কেটে সার্চ করার পর, ইন্দোনেশিয়ান ফ্যাক্ট চেকিং সাইট 'kompas.com'-এ ভিডিওটি সম্পর্কে ২০১৮ সালে প্রকাশিত একটি ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তৎকালে ভিডিওটি ইন্দোনেশিয়ার সামজিক মাধ্যমে 'ইমাম সমুদ্র' নামে এক ব্যক্তির অক্ষত লাশ দাবি করা হয়েছিল। যার প্রেক্ষিতে তথ্য যাচাইকারী সংস্থাটি জানায়, ভিডিওটি ইমাম সমুদ্রের নয় বরং ইয়াসের বিন তামরিন নামে এক ব্যক্তির। সার্চ করা পর জানা যায়, ইমাম সমুদ্র নামে ঐ ব্যক্তি ২০০২ সালের অক্টোবর মাসে ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের পর্যটন এলাকায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার অভিযুক্ত হয়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন। স্ক্রিনশট দেখুন--
প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে
একই ভিডিও নিয়ে এএফপি ফ্যাক্ট চেকের একটি প্রতিবেদনও খুঁজে পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে ইন্দোনেশিয়ান পুলিশ মুখপাত্র মোহাম্মাদ ইকবালের বরাতে জানানো হয়, ভাইরাল ভিডিওতে দৃশ্যমান ব্যক্তিটি নাম ইয়াসের বিন তামরিন। ২০১৭ সালে দুই পুলিশ অফিসারকে গুলি করার অভিযোগে গ্রেফতার হন। ২০১৮ সালের ১৭ জুলাইয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় আঞ্চলিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে মৃত্যুবরণ করে ইয়াসির। পরে দাফনের আগে তার ভিডিও ধারণ করা হয়। মূলত এই ভিডিওটিকেই ইমাম সমুদ্র নামে অন্য এক ব্যক্তির অক্ষত লাশের ভিডিও দাবি করে প্রচার করা হচ্ছিল বলে জানান পুলিশের ঐ কর্মকতা। স্ক্রিনশট দেখুন--
প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে
পরে পুলিশের ভেরিফাইড ফেসবুক একাউন্ট থেকেই ঘটনাটির তথ্য যাচাই করে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়।
অর্থাৎ ভিডিওটি ১০ বছর পরেও অক্ষত কোনো লাশের নয়, বরং চার বছর আগে ইন্দোনেশিয়ান এক মৃত ব্যক্তির দাফনের আগে তোলা।
সুতরাং ইন্দোনেশিয়ান এক ব্যক্তির ভিডিওকে ১০ বছর পরেও অক্ষত কুরআনের হাফেজের লাশ দাবি করা প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।
Claim : আল্লাহু আকবার একজন হাফেজে কুরআনের লাশ দশ বছর পরেও অক্ষত অবস্থায় আছে
Claimed By : Facebook Post
Fact Check : False
Next Story