মসজিদ নয় এটি রুয়ান্ডার একটি প্রাসাদ
বুম বাংলাদেশ দেখছে, এটি রুয়ান্ডার নায়াঞ্জা জেলার একটি পুরোনো রাজপ্রাসাদ, যা বর্তমানে জাদুঘর হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে একটি ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, খড় দিয়ে তৈরি মসজিদের ছবি এটি। এমন কিছু পোস্টের লিংক দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২৬ জুলাই 'Md Amir' নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ছবিটি পোস্ট করে করা হয় যাতে লেখা, "খড় দিয়ে তৈরি মসজিদ মাশাআল্লাহ"। পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ক্যাপশনে করা দাবিটি সঠিক নয়। ছবিটি কোনো মসজিদের নয় বরং আফ্রিকান দেশ রুয়ান্ডার একটি পুরোনো প্রাসাদের।
রিভার্স ইমেজ সার্চ করে, ভাইরাল পোস্টে দেখতে পাওয়া ছবির অনুরূপ অবকাঠামোর একাধিক চিত্র খুঁজে পাওয়া যায়, যা বিশেষত আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডায় অবস্থিত। তন্মধ্যে, আফ্রিকান আধুনিক শিল্প বিষয়ক ওয়েবসাইট momaa.org-এ "King's Palace Museum Nyanza" শিরোনামে ভাইরাল পোস্টে দেখতে পাওয়া স্থাপনার অনুরূপ স্থাপনার ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--
একই স্থাপনার ছবি খুঁজে পাওয়া গেছে, স্টক ফটোর ওয়েবসাইট alamy-তেও। উভয় স্থানেই স্থাপনাটির পরিচয় হিসেবে বিবরণে লেখা হয়েছে, রুয়ান্ডার দক্ষিণ প্রদেশের নায়াঞ্জা জেলায় অবস্থিত একটি রাজপ্রাসাদের ছবি এটি। ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এই প্রসাদের প্রবেশমুখের ছবির সাথে ভাইরাল পোস্টে দেখতে পাওয়া ছবির সাদৃশ্য রয়েছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
গুগল ম্যাপে প্রাসাদটির ছবি দেখুন--
সার্চ করার পর, দ্য নিউ টাইমস নামের রুয়ান্ডার স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমেও "Travel: The King's Royal Palace in Nyanza" প্রাসাদটিকে নিয়ে একটি ফিচার প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, প্রাচীন রুয়ান্ডা রাজ্যের রাজধানী ছিল নায়াঞ্জা। কুড়েঘরের আকৃতির এই রাজপ্রাসাদটি রুয়ান্ডার শেষ রাজাদের বাড়ি হিসেবে পরিচিত। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ ভাইরাল ফেসবুক পোস্টে দেখতে পাওয়া ছবিটি কোনো মসজিদের নয় বরং কুঁড়েঘর সদৃশ আফ্রিকান একটি প্রাসাদ। ছবিটির ব্যাপারে মন্তব্য জানতে রুয়ান্ডা সরকারের নায়াঞ্জা জেলার সরকারি টুইটার হ্যান্ডেলে যোগাযোগ করা হলেও এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। উল্লেখযোগ্য সংযুক্তি পেলে প্রতিবেদনটি আপডেট করা হবে।
প্রসঙ্গত বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে রুয়ান্ডার সর্বশেষ রাজা কিগেলি পঞ্চম ২০১৬ সালে নির্বাসনে থাকা অবস্থায় মারা যান। যিনি ১৯৫৯ সালে সিংহাসনে আরোহন করে মাত্র দুই বছর অর্থাৎ ১৯৬১ সাল পর্যন্ত শাসন ক্ষমতায় ছিলেন।
সুতরাং আফ্রিকান একটি পুরোনো রাজপ্রাসাদকে মসজিদ দাবি করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।